• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচন সামনে রেখে কমছে ঋণপ্রবৃদ্ধি


অর্থনৈতিক প্রতিবেদক অক্টোবর ৯, ২০১৮, ০৫:৪০ পিএম
নির্বাচন সামনে রেখে কমছে ঋণপ্রবৃদ্ধি

ঢাকা : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নানা কারণে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবৃদ্ধি কমেছে। প্রবৃদ্ধির এই ঋণাত্মক ধারাকে উদ্বেগজনক বলছেন অর্থনীতি বিশ্লেষকরা।

সংবিধান অনুযায়ী আগামী ডিসেম্বরের শেষে কিংবা জানুয়ারির শুরুতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাবনা রয়েছে। এই সময়ে ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করবেন বলে জানা গেছে বিভিন্ন সূত্রে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রের তথ্য অনুসারে, গত কয়েক মাসের ধারাবাহিকতায় প্রবৃদ্ধি কমে আগস্টের শেষে বার্ষিক ঋণপ্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ৯৫ শতাংশ। আগের মাস জুলাই শেষে যা ছিল ১৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ।

সাম্প্রতিক সময়ে বেসরকারি খাতে সবচেয়ে বেশি ঋণপ্রবৃদ্ধি হয় গত বছরের নভেম্বরে। ওই মাসে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ১৯ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ।

ঋণপ্রবাহের প্রবৃদ্ধির ঋণাত্মক ধারাকে উদ্বেগজনক মনে করার কারণ হিসেবে অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ঋণপ্রবাহ কমে যাওয়ার অর্থ হলো বিনিয়োগ কমে যাওয়া। ফলে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির হারও কমে যাবে। জিডিপিতেও তা নেতিবাচ প্রভাব ফেলতে পারে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুসারে, চলতি বছর বেসরকারি ঋণপ্রবাহে সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ফেব্রুয়ারি মাসে। ওই মাসে ঋণ বিতরণের পরিমাণ আগের মাসের চেয়ে ১৮ দশমিক ৪৯ শতাংশ বেড়েছিল। তারপর থেকেই প্রবৃদ্ধির হার ক্রমাগত কমছে।

চলতি বছরের মার্চ মাসে ঋণ বিতরণে প্রবৃদ্ধি হয় ১৭ দশমিক ৯৮ শতাংশ। পরের মাসে তা কমে ১৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ হয়। মে মাসে ঋণপ্রবৃদ্ধির হার আরও কমে ১৭ দশমিক ৬০ শতাংশে নামে। জুন মাসে তা কমে দাঁড়ায় ১৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ। জুলাই মাসে ঋণপ্রবৃদ্ধি ১৫ দশমিক ৮৭ শতাংশে নেমে আসে। আগস্ট মাসে তা ১৫ শতাংশের নিচে নেমে যায়। প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়ায় ১৪ দশমিক ৯৫ শতাংশ।

জুলাই ও আগস্ট মাসের ঋণপ্রবৃদ্ধি চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধ্বের জন্য ঘোষিত মুদ্রানীতির লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম। জুলাই-ডিসেম্বর সময়ের জন্য ঘোষিত মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১৬ দশমিক ৮০ শতাংশ।

কী কারণে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবৃদ্ধি ধারাবাহিকভাবে কমছে জানতে চাইলে বিশেষজ্ঞরা জানান, মূলত তিনটি কারণে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধিতে ঋণাত্মক ধারা চলছে। প্রথমত নির্বাচনের বছরে ব্যাংকগুলোর ঋণে লাগাম টানতে গত জানুয়ারিতে ঋণ আমানত অনুপাত (এডিআর) কমানো হয়। ওই সময়ে ২৭টি ব্যাংকের বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ সীমার বাইরে চলে যায়। ফলে এ ব্যাংকগুলোর ঋণ সমন্বয় করতে হচ্ছে। এদের পক্ষে নতুন ঋণ দেওয়া বেশ কঠিন।

অন্যদিকে সীমার নিচে থাকা ব্যাংকগুলোও সতর্কতার সঙ্গে ঋণ বিতরণ করছে, যাতে তারা সীমার বাইরে চলে না যায়।

দ্বিতীয়ত, ব্যাংকে আমানতের সুদের হার কমানোয় আমানতে প্রবৃদ্ধি হচ্ছে না। বরং কোনো কোনো ব্যাংকে আমানতের পরিমাণ কমে গেছে। এতে ব্যাংকগুলোতে তারল্য সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে তারা সেভাবে ঋণ বিতরণ করতে পারছে না।

তৃতীয়ত, সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে অনেক উদ্যোক্তা ধীরে চলো নীতি গ্রহণ করেছেন। তারা নির্বাচন-পরবর্তী পরিস্থিতি পর্যালোচনা সাপেক্ষে নতুন বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিতে চান।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!