• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচনকালীন সঙ্কট নিরসন সরকারকেই করতে হবে


নিজস্ব প্রতিবেদক জুলাই ৭, ২০১৭, ০৫:০২ পিএম
নির্বাচনকালীন সঙ্কট নিরসন সরকারকেই করতে হবে

ঢাকা : নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে চলমান সংকট নিরসনে সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে। একইসঙ্গে সবদলের অংশগ্রহনে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করা সরকারেরই দায়িত্ব। নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে সমঝোতা না হলে জনগণই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপির একাধিক জেষ্ঠ্য নেতার সঙ্গে কথা বলে এসব কথা জানা গেছে।  

দলের নেতারা বলছেন, এরইমধ্যে বিষয়টি দলের মহাসচিব পরিস্কার করে দিয়েছেন। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন, নির্বাচন নিয়ে সঙ্কট নিরসনে সরকারকেই আলোচনার উদ্যোগ নিতে হবে।

দেশ ও দশের মঙ্গলে শেষ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ সমঝোতার জন্য অপেক্ষা করবে বিএনপি। তবে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মত নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি ঘটলে জনগণকে সঙ্গে তা প্রতিহত করার কথাও নেতৃবৃন্দ বলেন।

প্রসঙ্গত, সব কিছু ঠিক থাকলে আর দেড় বছর পরই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে সমঝোতার প্রশ্নে এবারো পুরোনো পথে হাঁটছে দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল। এর আগে বিগত নির্বাচনের সময় নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জনের পাশাপাশি প্রতিহত করার ঘোষণার মধ্য দিয়েই আন্দোলনে নামে বিএনপি। যেটি শেষ পর্যন্ত রুপ নেয় সহিংসতায়।

রাজনৈতিক মাঠে ছড়িয়ে পড়া সহিংসতার সেই জমাট বারুদের সম্ভাব্য ভয়াবহতা নিয়ে এবারো শঙ্কিত বিএনপি। তাই আগামী নির্বাচন নিয়ে সমঝোতায় না এলে জনগণ ক্ষমাতাসীন আওয়ামী লীগকে কখনোই ক্ষমা করবে না বলেও মন্তব্য করছেন দলটির নেতারা।

এ প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন বলেন, সরকারের দায়িত্ব হলো জনগণের মতামতকে প্রাধান্য দিয়ে একটি সমঝোতা মূলক ব্যবস্থা করে সকল দলের অংশগ্রহণে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করা । তিনি আরো বলেন, আমাদের শেষ চেষ্টা থাকবে যে কোনো একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান। একই প্রসঙ্গে দলটির স্থানী কমিটির আরেক সিনিয়র সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, যদি সমঝোতা না হয় তবে সবচেয়ে বেশি মূল্য দিতে হবে এদেশের মানুষকে বিশেষ করে দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির অপর সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আজকের বাংলাদেশের জনগণ তাদের ভোটাধিকারের ক্ষমতা প্রয়োগ করতে চায়। কিন্তু সে অধিকার না দিয়ে যদি তাদের পথরুদ্ধ করে। তবে সেই দায়িত্ব জনগণই নিবেন, তখন আরো মূল্য দিতে হতে পারে এবারো। আর চলমান রাজনৈতিক সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানে সবসময় প্রস্তুত বিএনপি। এ জন্য উদ্যোগী হতে ক্ষমতাসীনদের আহ্বান জানান আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

এছাড়া একই প্রসঙ্গে বিএনপির অন্যতম ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশে বর্তমানে নির্বাচনী হাওয়া বইছে, যার শুরুটা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। সারাদেশে ঘুরে ঘুরে নৌকায় ভোট চাচ্ছেন। আগামী জাতীয় নির্বাচনে কারচুপি হলে দেশে আন্দোলন শুরু হবে। সে আন্দোলনে শেখ হাসিনা পরাজিত হবেন।

এদিকে, নির্বাচন নিয়ে সঙ্কট নিরসনে সরকারকে আলোচনার উদ্যোগ নেয়ার আহবান জানিয়েছে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, সরকার মুখে নির্বাচনের ধোঁয়া সৃষ্টি করলেও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করার কোন লক্ষণ নেই। উপরন্তু ভিন্ন মত পোষণ করলেই বাধা দেয়া হচ্ছে। গত বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।

বিএনপি মহাসচিব আরো বলেন, শিগগিরই নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের রূপরেখা নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া জনগণের সামনে আসবেন। আসা করছি সরকারের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে। তারা এটিকে মেনে নিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন দেবেন।

প্রসঙ্গত, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করে দলের ভেতর এবং বাইরে থেকে নানামুখী চাপ আছে বিএনপি। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে নিবন্ধনের বিষয়টি। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ আইনের (আরপিও) ৯০ (এইচ) (১) অনুসারে পরপর দু’বার নির্বাচনে অংশ না নিলে দল হিসেবে বিএনপির নিবন্ধন বাতিল হয়ে যাবে। ফলে নির্বাচনে যাওয়া ছাড়া বিকল্প পথ খোলা নেই দলটির।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!