• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নির্বাচনী মাঠ আওয়ামী লীগের


বিশেষ প্রতিনিধি অক্টোবর ২, ২০১৮, ০৫:৪৮ পিএম
নির্বাচনী মাঠ আওয়ামী লীগের

ঢাকা : এগিয়ে আসছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আর নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এককভাবে। দলটির সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় ব্যানার-ফেস্টুন লাগিয়ে দোয়া কামনা করছেন।

কিন্তু অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী মাঠে উপস্থিতি তেমন লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। এমনকি আ.লীগের প্রধান প্রতিদ্ব›দ্বী বিএনপিও নির্বাচনী মাঠে নেই। ফলে নির্বাচনী মাঠে আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কোনো দলের কার্যক্রম চোখে পড়ছে না।


বিএনপি রোববার (৩০ সেপ্টেম্বর) সমাবেশে আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করলেও নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা বা নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেনি। যে কারণে বিএনপির নেতাকর্মী বা তাদের শরিকরা নির্বাচনী মাঠে নেই বললেই চলে।

বিএনপি নির্বাচনের বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত না দেয়ায় বিএনপি অথবা বিএনপির জোটের শরিকরা এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। ফলে তারা মাঠেও যেতে পারছে না। জনগণকে তারা ভোটের ব্যাপারে কিছু বলতেও পারছে না। বিএনপির নেতাকর্মীরা অনেকেই বলছেন, নির্বাচনের সিদ্ধান্ত না নেয়ায় প্রচার-প্রচারণায় পিছিয়ে যাচ্ছে বিএনপি। অপরদিকে আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা ভোটকে কেন্দ্র করে সারাদেশেই কোনো না কোনো কর্মসূচি পালন করছে।

নির্বাচনের বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী লেফটেনেন্ট কর্নেল (অব.) মুহম্মদ ফারুক খান বলেন, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমরা সারাদেশেই আমাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করছি। লক্ষ্য একটাই, সেটা হলো নির্বাচন এবং আওয়ামী লীগের জয়। দলের প্রতিটি সংসদীয় আসনে দলের নেতারা যাচ্ছেন, বিভিন্ন সভা, সমাবেশ ও সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন। স্থানীয় নেতাদের বলছেন, গত নয় বছরে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরতে। সাধারণ জনগণ যেন আবারও নৌকায় ভোট দেন সে আহ্বান জানানো হচ্ছে।’

গতকাল সোমবার থেকে আওয়ামী লীগ ঢাকায় সপ্তাহব্যাপী গণসংযোগ কর্মসুচি শুরু করেছে। গণসংযোগের অংশ হিসেবে এদিন গুলশান থেকে কর্মসূচি শুরু করে তারা। দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে দুপুর ১২টায় এ গণসংযোগ হয়।

জানা যায়, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকদের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় নেতারা প্রতিদিন চারটি ভাগে ভাগ হয়ে রাজধানীর তিনটি করে মোট ১২টি ওয়ার্ডে এ কর্মসূচি পালন করবেন।

মূলত : চলতি বছরের জানুয়ারি থেকেই আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রচারণায় নেমেছে আওয়ামী লীগ। দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিলেটের তিন আউলিয়ার মাজার জিয়ারত করে নামেন ভোটের মাঠে। ৩০ জানুয়ারি সিলেট আলিয়া মাদরাসা মাঠের জনসভায় শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা পূণ্যভূমি সিলেট থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করলাম।’

এসময় তিনি উপস্থিত জনতাকে নৌকায় ভোট দেয়ার জন্য শপথ করান। এরপর থেকে তিনি দেশের বিভিন্ন বিভাগ ও জেলায় সফর করে ভোট চান। শোকের মাসসহ নানা কারণে নির্বাচনী সফর আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে বন্ধ থাকলেও অক্টোবর থেকে আবার সফর শুরু করবেন শেখ হাসিনা। ১১ অক্টোবর ময়মনসিংহে জনসভায় অংশ নেবেন তিনি।

এদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে বিমান, ট্রেন ও বাসে একাধারে সিলেট, উত্তরবঙ্গ ও চট্টগ্রামে সফর করছে দলটির নেতারা। বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় নির্বাচনী পথসভা করেছেন তারা। এরপর বরিশাল অঞ্চলে নৌপথেও সফর করবে আওয়ামী লীগ।

আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ নির্বাচনী প্রচারণায় আগে থেকেই এগিয়ে আছে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিক দলের নেতারাও সংশ্লিষ্ট এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছে।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানান, উত্তরবঙ্গ এবং কক্সবাজার সফর করে এসে আত্মবিশ্বাস অনেকটা বেড়ে গেছে। তিনি বলেন, আমরা দেশের উত্তরবঙ্গে রেলযাত্রা ও চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে সাংগঠনিক সফর করেছি। ট্রেনযাত্রা ও সাংগঠনিক সফরের সময় পথসভাগুলো বিশাল সমাবেশের রূপ নিয়েছে। এত বড় বড় সমাবেশ হওয়ার পরও কোনো মারামারির ঘটনা ঘটেনি।

কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের ওই দুটি কর্মসূচি পালনের সময় দিনাজপুরের বিরামপুরে ও কক্সবাজারের চকরিয়ার সমাবেশে যে জনসমাগম হয়েছে বিএনপির সোহরাওয়াদী উদ্যানের কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতেও তা হয়নি। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির সমাবেশে জনগণের উপস্থিতি দেখে মনে হয়েছে জনগণ তাদের সঙ্গে নেই। দলটি ক্রমেই সংকুচিত হচ্ছে। নেতিবাচক রাজনীতির জন্য বিএনপির তার জনসমর্থন হারিয়ে ফেলেছে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান বলেন, আগামী নির্বাচনে দলের জয় নিশ্চিত করা এখন আমাদের প্রধান কর্তব্য। তাই সারাদেশে যে সাংগঠনিক সফর শুরু হয়েছে তা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত চলবে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!