• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচনের একমাস আগে সেনা মোতায়েনের দাবি বি. চৌধুরীর


নিজস্ব প্রতিবেদক সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৮, ০৭:৫১ পিএম
নির্বাচনের একমাস আগে সেনা মোতায়েনের দাবি বি. চৌধুরীর

ঢাকা : সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন আয়োজন করতে একমাস আগে থেকেই সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি জানিয়েছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিকল্পধারার সভাপতি অধ্যাপক ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী।

তিনি বলেন, সেনাবাহিনী শান্তি মিশনে বিভিন্ন দেশে কাজ করছে। দেশের শান্তির জন্য কেন তারা কাজ করবে না? সেনাবাহিনীকে নির্বাচনের একমাস আগেই নামাতে হবে।

শনিবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া আয়োজিত নাগরিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ডা. বি. চৌধুরী বলেন, ‘সরকারের কাছে প্রশ্ন, কেন স্বাধীন দেশে দিনে-রাতে মা-বাবারা ঘুমাতে পারে না? মা-বাবারা কেন ভাবেন, আমার ছেলে-মেয়েটি স্কুল-কলেজ থেকে নিরাপদে ঘরে ফিরতে পারবে কি পারবে না? পুলিশ-র‌্যাবের নির্যাতন কেন? তারা তো আমাদের সন্তান। এসবের জবাব দিতে হবে।’

তিনি বলেন, মেধাবী ছাত্ররা তাদের দাবি জানাতে রাস্তায় নেমেছে। কেন তাদের হাতুড়ি দিয়ে পেটালেন? চাপাতি দিয়ে কোপালেন? এসব প্রশ্নের জবাব দিতে হবে। সরকারের একটা মন্ত্রণালয় দেখান, যে মন্ত্রণালয়টি ঘুষ ছাড়া চলে। প্রধানমন্ত্রী, আপনাকে কোটি টাকা চুরি-লুটপাটের জবাব দিতে হবে।

সাবেক রাষ্ট্রপতি বলেন, কেন স্বাধীন দেশে সমাবেশে পুলিশের অনুমতি নিতে হবে? কেন পুলিশ-র‌্যাবকে কলঙ্কিত করেছেন। আর আপনাদের তোয়াক্কা করব না। স্বৈরাচার এরশাদ, ইয়াহিয়াকেও তোয়াক্কা করিনি।

ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কেনার প্রকল্প অনুমোদন দেওয়ার সমালোচনা করে বি চৌধুরী বলেন, সূক্ষ্ণ কারচুপির জন্য নির্বাচনের আগে এজেন্টদের গ্রেফতার করেছেন। কিন্তু আমরা স্বাধীনভাবে বাঁচতে চাই, ভোট দিতে চাই। জনগণের টাকা চুরি করেছেন। এখন আবার সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা দিয়ে ইভিএম কিনছেন। দেশের মানুষ এসব মানবে না।

নির্বাচন আয়োজনে শর্ত দিয়ে প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ বলেন, জাতিসংঘ থেকে পরিদর্শক আনতে হবে। তারা নির্বাচন দেখবে। নির্বাচন শেষে তারা একমাস এ দেশে থাকবে। কিন্তু আমরা জানি, তাদের আনতে পারবেন না। সে সাহস আপনাদের নেই। আপনি শান্তি-সুখের বাংলাদেশ গড়তে পারেননি।

তিনি আরও বলেন, টানা ১০ বছর দেশ শাসন করছেন। এই ১০ বছরে গঙ্গা-তিস্তা থেকে একফোটা পানিও পাইনি। আপনারা বলেন, ভারত আমাদের বন্ধুরাষ্ট্র। ভারত যখন আমার বন্ধুরাষ্ট্র, তখন আমার নদীতে পানি নেই কেন? বন্ধুরাষ্ট্র থেকে পানি আনতে না পারলে দেশ চালাবেন কিভাবে?

আদালতের রায়ে কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় সরকারের পদক্ষেপের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আমি যাকে মনোনীত করিনি, সে আমার চিকিৎসা করতে পারে না। খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষা হলো। সেই রিপোর্ট কেন তার মনোনীত ডাক্তার দেখল না?

সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, আমাদের রুখে দাঁড়াবার সময় এখনই। প্রতিরোধের সময়, দাবি আদায়ের সময় এটাই। আমরা সব রাজবন্দির মুক্তি চাই, এই সরকারের পতন চাই। ভবিষ্যতে এই ধরনের সরকার যেন না আসে, সে জন্য আমাদের রক্ষাকবচ তৈরি করতে হবে। আমরা গণতান্ত্রিক সরকার চাই। শান্তি-সুখের বাংলাদেশ গড়তে চাই। এ জন্য জাতীয় ঐক্য অপরিহার্য।

এর আগে, গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে মহানগর নাট্যমঞ্চে দুপুর ৩টার দিকে শুরু হয় নাগরিক সমাবেশ। এরই মধ্যে এ সমাবেশে যোগ দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ শীর্ষ চার নেতা। পরে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে উপস্থিত হন সমাবেশের প্রধান অতিথি বিকল্পধারা বাংলাদেশের সভাপতি ও যুক্তফ্রন্টের প্রধান ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী।

সমাবেশে আরও উপস্থিত রয়েছেন লেবার পার্টির সভাপতি ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) নেতা মোস্তফা জামাল হায়দার, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর আহমেদ, নাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) সভাপতি মোস্তফা জামান, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক হারুন চৌধুরী, সোনার বাংলা পার্টির আবদুর নূর, গণদল সভাপতি গোলাম মাওলা চৌধুরীসহ অন্যরা।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!