• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

নূর হোসেনের সেই ‘বিতর্কিত’ ফোনালাপ...


নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি জানুয়ারি ১৬, ২০১৭, ০৬:৪৯ পিএম
নূর হোসেনের সেই ‘বিতর্কিত’ ফোনালাপ...

নারায়ণগঞ্জ: ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড থেকে অপহৃত হন নারায়ণগঞ্জের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী চন্দন সরকার, সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ সাতজন। এর পর ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদীতে ছয়জন ও পরের দিন আরো একজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

সাতজনকে হত্যার ঘটনায় অভিযোগ ওঠে নূর হোসেনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার পর ৪ মে নজরুলের শ্বশুর অভিযোগ করেন, র্যাবকে টাকা দিয়ে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছেন শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠ নূর হোসেন।

নারায়ণগঞ্জে অপহৃত সাতজনের লাশ উদ্ধারের আগের দিন ২৯ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টার দিকে এয়ারটেল নম্বর থেকে শামীম ওসমানের গ্রামীণফোনের নম্বরে ফোন করেন নূর হোসেন।

২০১৪ সালের ২৩ মে প্রকাশিত সেই মোবাইল ফোনের কথোপকথন থেকে ধারণা করা হয়, নূর হোসেনকে ভারতে যাওয়ার ব্যাপারে সাহায্য করেছেন নারায়ণগঞ্জের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান।

ফোন রেকর্ড থেকে জানা যায়, ফোনে আলাপের সময় নূর হোসেনের অবস্থান ছিল ধানমণ্ডির ৪ নম্বর সড়কের আশপাশে। নূর হোসেনের সঙ্গে ফোনালাপের বিষয়টি স্বীকার করেন শামীম ওসমান নিজেই। তবে তিনি দাবি করেন, নূর হোসেনকে পালিয়ে যেতে নয়, বরং আত্মসমর্পণের পরামর্শ দিয়েছিলেন।

অডিওটি প্রকাশের পরই সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে শামীম ওসমান দাবি করেন, টেলিফোনের আংশিক কথোপকথন প্রকাশ করে প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করার চেষ্টা করা হয়েছে।

সোনালীনিউজের পাঠকদের জন্য ১০৩ সেকেন্ডের কথোপকথন হুবহু তুলে ধরা হলো-

শামীম ওসমান বলেন, ‘হ্যালো’

নূর হোসেন বলেন, ‘ভাই স্লামালাইকুম ভাই’

শামীম: ‘কে?’

নূর হোসেন: ‘ভাই ভাই ভাই আমার বহুত প্রবলেম ভাই। ভাই আমি লেখাপড়া করি নাই, আমার অনেক ভুল আছে ভাই। ভাই আমি লেখাপড়া করি নাই, আমার অনেক ভুল আছে ভাই। আপনে আমার বাপ লাগেন ভাই। আপনেরে আমি অনেক ভালোবাসি ভাই।’

শামীম: ‘খবরটা পৌঁছে দিলাম না, পাইছিলা?’

নূর হোসেন: ‘হ, আপনেরে আমি অনেক ভালোবাসি ভাই, আমার পোলাডা ছোট মইরা যাইবো ভাই। আমার কান্দে বন্দুক ভাই।’

শামীম: ‘সময় দাও একটু।’

নূর হোসেন: ‘ভাই আপনি আমার বাপ লাগেন ভাই। ভাই জীবনটা আপনেরে আমি দিয়া দিমু ভাই। আপনারে আমি অনেক ভালোবাসি ভাই।’

শামীম: ‘আরে তুমি এতো চিন্তা করো না, সময় দাও।’

নূর হোসেন: ‘ভাই আমি লেহাপড়া করি নাই, আমার অনেক ভুল আছে ভাই। আমারে মাফ করেন ভাই।’

শামীম: ‘তুমি এতো চিন্তা করো না, সময় দাও। আর তুমি একটু গোরদার লগে দেখা করে আসো না’

নূর হোসেন: ‘ভাই আমারে দিল্লি যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেবেন।’

শামীম: ‘এখনো কোনো সমস্যা হবে না। কোনো জায়গার ইয়া নাই? সিল নাই?’

নূর হোসেন: ‘না না, আছে আছে ই আছে। সিল আছে কিন্তু যামু ক্যামনে সব জায়গায় নাকি এলার্ট?’

‘না কিচ্ছু নেই। হ্যা?’

শামীম: ‘মনে হয় না।’

নূর হোসেন: ‘ভাই তাইলে একটু খবর নেন না, আমি কালকে ফোন দেই।’

শামীম: ‘আগাইতে থাক।’

নূর হোসেন: ‘ভাই আমি লেখাপড়া করি নাই। ভাই আমার অনেক ভুল আছে।’

শামীম: ‘তুমি যদি ওই জায়গাটাতে যাও।’

নূর হোসেন: ‘ভাই আমি বাসে...মাইক্রোবাসে উঠব।’

শামীম: ‘কিন্তু হবে না, চিন্তা করো না-তুমি অপরাধ করো নাই।’

নূর হোসেন: ‘ভাই..’

শামীম: ‘তুমি চিন্তা করো না।’

নূর হোসেন: ‘আমার জীবনের কোনো গতি হইবো না ভাই? আমার মনে অনেক জোর ভাই।’

শামীম: ‘আমি জানি আমি জানি। ঘটনাটা অন্য ঘটাইয়া এক ঢিলে দুই পাখি মারছে।’

নূর হোসেন: ‘ভাই আমার অনেক ভুল আছে-আপনে আমারে মাফ করেন ভাই।’

শামীম: ‘ঠিক আছে তুমি ইয়ে করো। ও ও ও...আমার একটা ফোন নম্বর দিমু যোগাযোগ করুম। এই নম্বরটা নতুন?

নূর হোসেন: ‘হ ভাই।’

শামীম: ‘আচ্ছা। রাখলাম।’

নূর হোসেন: ‘জি ভাই, স্লামাইকুম’


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!