• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০
নির্বাচন করবেন ৫০ নেতা

নৌকায় চড়তে চায় হেফাজতও!


সোনালী বিশেষ আগস্ট ৬, ২০১৭, ০২:০০ পিএম
নৌকায় চড়তে চায় হেফাজতও!

ঢাকা : সমর্থন জানাতে ক্ষমতাসীনদের পাশে থাকতে চায় ছোট ছোট কয়েকটি ইসলামি দল। দৃশ্যত নিজেদের মধ্যে ঐক্য গড়ে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভোটব্যাংক বাড়ানোর চিন্তা থাকলেও কার্যত যেকোনও উপায়ে নৌকা মার্কার ফল ভোগ করতে চায় এই দলগুলো।

এদের মধ্যে একাধিক দলের নিবন্ধন না থাকায় নিবন্ধন করা, নির্বাচনের প্রার্থিতা নিশ্চিত করা, সরকারি ধর্মীয় কোনও প্রতিষ্ঠানে কাজ নেয়া এবং রাজনৈতিকভাবে আলোচনায় থাকতে নৌকার পক্ষে থাকার কৌশল নিচ্ছে ধর্মভিত্তিক অন্তত ছয় থেকে আটটি দল।

এদিকে, আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়ার পরিকল্পনা করছেন হেফাজতে ইসলামের অন্তত ৫০ জন কেন্দ্রীয় নেতা। নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ইসলামিপন্থী দলের অধীনে তারা বিভিন্ন আসন থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন।

জানা গেছে, গত এক বছরের বেশি সময় ধরেই কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক দলগুলোকে নিয়ে একটি জোট করার চেষ্টা করছেন ১৪ দলীয় জোটের শরিক তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিব এম এ আউয়াল।

এম এ আউয়ালের প্রচেষ্টা কিছুটা ঢিমেতালে হওয়ায় গত ছয় মাসে আওয়ামী লীগের কাছে বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মিসবাহুর রহমান চৌধুরী ও গণতান্ত্রিক ইসলামী মুভমেন্টের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম খান একটি উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তাদের উদ্যোগে সাড়া দেয় কয়েকটি সংগঠন। এর মধ্যে কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক খেলাফত আন্দোলনের আমির মাওলানা জাফরুল্লাহ খানও ছিলেন বলে প্রচার হয়।

যদিও জাফরুল্লাহ খান দাবি করেন, মিসবাউর রহমান ও নুরুল ইসলামের সঙ্গে তার বৈঠক হলেও কোনও জোট হচ্ছে না। তিনি বলেন, জোট হলে বৃহত্তর স্বার্থে জোট হবে, সেই জোটে আমরা যাব। জানা গেছে, এম এ আউয়ালের উদ্যোগে মাওলানা জাফরুল্লাহ খান, সাবেক ছাত্র মজলিস সভাপতি মাওলানা রুহুল আমিন সাদী, কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড বেফাকের সাবেক কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফাও আছেন।

তরিকতের মহাসচিব তার উদ্যোগকে সফল করতে এরই মধ্যে মিসবাহুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। চলতি বছরের শুরুতে এই জোট হওয়ার কথা থাকলেও ক্ষমতাসীন দলের সরাসরি সাড়া না পাওয়ায় এখনও জোটের প্রক্রিয়া চলছে।

সূত্র জানায়, সম্প্রতি মিসবাহুর রহমানের সঙ্গে আটটি দলের বৈঠক হলেও আদতে তরিকত, খেলাফত আন্দোলন, ইমাম-ওলামা পরিষদসহ একটি বড় জোট করতে চান এম আউয়াল এমপি। এরই মধ্যে তারা কয়েকটি সিদ্ধান্তে একমত হয়েছেন বলেও সরকারের একটি গোয়েন্দা সূত্র জানায়।

জোট প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত একাধিক নেতা জানান, আওয়ামী লীগ ইসলামি ভাবধারার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ প্রচলিত থাকলেও এই দলগুলো আগামী নির্বাচনে এর বিপরীত চিত্র দেখাতে চায়। ইসলামি দলগুলোও আওয়ামী লীগের পক্ষে সাধারণ মানুষের মধ্যে এমন বার্তা পৌঁছে দিতে চান এসব দলের নেতারা।

উদ্যোগের সঙ্গে সম্পৃক্ত ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মিসবাহুর রহমান চৌধুরী বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই আওয়ামী লীগকে নিয়ে একটি ভুল ধারণা ছিল। কিন্তু বাস্তবে আমরা দেখেছি ও অনুভব করেছি, ইসলামের জন্য ও আলেম ওলামাদের কর্মসংস্থানের আওয়ামী লীগ যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, গত ৫০ বছরে এমন পদক্ষেপ কেউ নেয়নি। পুরো প্রক্রিয়াটি নিয়ে এম এ আউয়াল ও মিসবাহুর রহমান সরকারের উচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন।

নির্বাচনে অংশ নেবেন হেফাজতের ৫০ নেতা:  সূত্র জানিয়েছে, হেফাজত ইসলাম এখন ৫০টি আসনে তাদের প্রার্থী দেয়ার পরিকল্পনা করছে। ইতোমধ্যে কয়েকজনের নাম বিবেচনাধীন আছে। তবে তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধ এবং মামলার অভিযোগ খতিয়ে দেখছে সংগঠনটি।

সংগঠনটির একটি সূত্র জানিয়েছে, সংগঠনটির ১৩ দফা দাবি বাস্তবায়নে নির্বাচনে অংশগ্রহণকে একটি সুযোগ হিসেবে দেখছেন নেতারা। ২০১০ সালে বাংলাদেশ হেফাজতে ইসলাম গঠন করা হয়। চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসাকে সংগঠনটির হেডকোয়ার্টার হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

এরপর ২০১৩ সালে শাহবাগ আন্দোলনের বিরোধীতা করে হেফাজতে ইসলাম পরিচিতি পায়। এরপর থেকে নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা নিষিদ্ধ করা ও নাস্তিকদের  মৃত্যুদণ্ডের দাবিসহ ১৩ দফা দাবি জানিয়ে আসছে তারা। হেফাজত ইসলামের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নির্বাচনে অংশ নেয়ার মাধ্যমে সংগঠনটি দেখাতে চায়, তারা সাধারণ মানুষের মধ্যে কত জনপ্রিয়।

যেসব ইসলামি দল থেকে হেফাজত নেতারা প্রার্থী হতে চান, সেগুলো হলো- নিজাম-ই-ইসলামী পার্টি, জমিয়াত উলেমা-ই-ইসলাম, খেলাফত আন্দোলন, খেলাফত মজলিশ (ইসহাক), খেলাফত মজলিশ (হাবিবুর রহমান), খেলাফত ইসলামী এবং ইসলামী ঐক্যজোটের দুটি অংশ।

 সোনালীনিউজ/জেডআরসি/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!