• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নৌকায় ভোট চাইলেন শেখ হাসিনা


নিজস্ব প্রতিবেদক ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৮, ০২:২৩ পিএম
নৌকায় ভোট চাইলেন শেখ হাসিনা

ঢাকা : উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে উত্তরবঙ্গের প্রাণকেন্দ্র রাজশাহীর বাসিন্দাদের কাছে নৌকা মার্কায় ভোট চাইলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকালে রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদরাসা মাঠে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় সবাইকে নৌকায় ভোট দেওয়ার জন্য হাত তুলে ওয়াদাও করান তিনি। এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজার প্রতিবাদে দলটির আন্দোলনের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ প্রধান বলেন, তাদের আন্দোলন ‘চোরের জন্য।’

প্রধানমন্ত্রী জনসভা স্থলে পৌঁছে প্রথমে রাজশাহীর ৩৪টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এর আগে সকালে নাটোরের কাদিরাবাদ সেনানিবাসে ইঞ্জিনিয়ার্স সেন্টার অ্যান্ড স্কুল অব মিলিটারি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের (ইসিএসএমই) বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের ষষ্ঠ কোর পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে প্রধান অতিথির ভাষণে দেশের গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক ধারা সমুন্নত রাখার পাশাপাশি সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলায় অবদান রাখতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

রাজশাহীর জনসভায় উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে এবং মানুষ যেন খেয়েপরে সুখে-শান্তিতে থাকে, সে জন্য নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে সেবা করার সুযোগ চান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘সেই নূহ নবীর আমল থেকে বিপদে রক্ষা করেছে নৌকা। আর এই নৌকা স্বাধীনতা এনে দিয়েছে, উন্নয়ন দিয়েছে। কাজেই আপনাদের কাছে আমি আবেদন জানাই, আগামীতে নির্বাচন- সিটি করপোরেশন নির্বাচন হবে, ডিসেম্বরে জাতীয় সরকার নির্বাচন হবে। প্রত্যেকটা নির্বাচনে মার্কা দিয়ে নির্বাচন হবে। মার্কাটা কী- সেই নৌকা মার্কায় আমি আপনাদের কাছে ভোট চাই।’

রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের সভাপতিত্বে জনসভা পরিচালনা করেন মহানগরের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ। জনসভায় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মো. আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সাইদুর রহমান খান ও ড. আবদুল খালেক, রাজশাহী সদর আসনের এমপি ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা, শাহরিয়ার আলম এমপি প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রায়ের প্রসঙ্গ তুলে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে বিএনপি নেতারা আন্দোলন করছে। কিসের আন্দোলন! টাকা চুরি করে তাদের নেত্রী জেলে গেছে। সেই জন্য, চোরের জন্য হচ্ছে।’ কোরআন শরিফে বলা আছে এতিমের টাকা চুরি করো না, এতিমকে দাও- এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২৭ বছরে এতিমের ভাগ এতিমকে দিতে পারে নাই। সেই টাকা তার নিজের কাছে রেখে দিয়েছে।

আর তারই শাস্তি আজকে সে ভোগ করছে। কাজেই আমার এখানে প্রশ্ন- এতিমখানার ঠিকানাটা কোথায়? সেই ঠিকানাটা দিতে পারে নাই। সেখানে কয়জন এতিম আছে, তার কোনো সংখ্যা নাই। আর এতিমরা কি একটা টাকাও পেয়েছে এ পর্যন্ত। পায় নাই। তারা বলে এতিমের টাকা আছে, সুদে আসলে বেড়েছে। সুদ বাড়লে, সুদের টাকা খেয়েছে কে? এতিমের টাকা সুদাসলে খেয়েছে, ভোগ করেছে খালেদা জিয়া আর তার পরিবার, আর তাদের দলের লোকজন।

বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের প্রসঙ্গ তুলে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমাদের ট্রাস্ট ফান্ড তন্ন তন্ন করে খুঁজেছে। কোনো অনিয়ম পায়নি। প্রতিবছর প্রায় ১৭০০ শিক্ষার্থীকে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্ট থেকে বৃত্তি দিয়ে থাকি। তিনি বলেন, আমরা তো এতিমের টাকা মেরে খাইনি, বরং আমরা মানুষকে দিয়েছি। কাজেই আমরা দেশের জনগণকে দিতে আসি। মানুষের জন্য কাজ করি। আমরা উন্নয়ন করি, তারা ধ্বংস করে।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী রাজশাহী অঞ্চলে বিএনপি-জামায়াতের অত্যাচার-নির্যাতনের প্রসঙ্গ তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত আমলে এ এলাকা ছিল সন্ত্রাসী জঙ্গি বাংলা ভাইদের অভয়ারণ্য। এখানে মানুষ শান্তিতে ঘুমাতে পারত না। নিরাপদে চলতে পারত না। বিধবা ভাতাসহ বিভিন্ন ভাতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা যেখানে জনগণের কল্যাণে কাজ করি সেখানে তারা মানুষের সম্পদ লুটে খায়। রাজশাহীর উন্নয়নে গৃহীত বিভিন্ন প্রকল্পের কথা উল্লেখ করে নৌকায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। আমরা এখানে দিতে এসেছি। জনগণের কল্যাণে কাজ করতে এসেছি।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!