• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
সিঙ্গাপুরে দুই দেশের শীর্ষ নেতার প্রথম বৈঠক

পরমাণু অস্ত্র ত্যাগে রাজি কিম


আন্তর্জাতিক ডেস্ক জুন ১৩, ২০১৮, ১২:১৯ এএম
পরমাণু অস্ত্র ত্যাগে রাজি কিম

ঢাকা : অবশেষে নতুন যুগের সূচনা ঘটিয়ে বৈঠক করলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন। মঙ্গলবার (১৩ জুন) একান্ত ওই বৈঠক শেষে এক যৌথ ঘোষণাপত্রে সই করেছেন দুই নেতা।

এরপর সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প জানান, উত্তর কোরিয়ার নিরাপত্তা নিশ্চয়তার বিনিময়ে পরমাণু অস্ত্র ত্যাগের অঙ্গীকার করেছেন কিম। আর কোরীয় উপদ্বীপে সামরিক মহড়া বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প। সিঙ্গাপুরের সেন্তোসা দ্বীপের ক্যাপেলা হোটেলে পাঁচ ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠক  অনুষ্ঠিত হয়। প্রথমবারের মতো উত্তর কোরিয়ার কোনো শীর্ষ নেতার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের বৈঠকের মূল বিষয় ছিল- ‘পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ ও উত্তেজনা হ্রাস’। সই হওয়া ঘোষণায় বলা হয়, দুই দেশ নতুন সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য সহযোগিতা করবে এবং যুক্তরাষ্ট্র উত্তর কোরিয়াকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেবে। বহু প্রত্যাশিত এই শীর্ষ বৈঠক ও ঘোষণাপত্র সইয়ের পর ট্রাম্প বলেছেন, তাদের মধ্যে ‘দারুণ’ আলোচনা হয়েছে।

ঘোষণাপত্রে কিম কোরীয় উপদ্বীপকে পরমাণু অস্ত্রমুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এরপরই নজিরবিহীন ওই সংবাদ সম্মেলনে কাগজপত্রে উলে­খ নেই এমন কিছু বিষয় উল্লেখ করেন ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘উত্তর কোরিয়ার নেতা একটি বড় ক্ষেপণাস্ত্র ইঞ্জিন পরীক্ষাক্ষেত্র ধ্বংস করতে রাজি হয়েছেন। এর বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র উত্তর কোরিয়াকে লক্ষ্য করে সামরিক মহড়া চালানো বন্ধ করবে।’

তিনি এসব মহড়াকে ‘ব্যয়বহুল ও উসকানিমূলক’ বলেও বর্ণনা করেন। তবে শর্ত অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র এখনই সেনাবাহিনী সরিয়ে নেবে না। উত্তর কোরিয়ায় যুদ্ধবন্দি মার্কিন সেনা সদস্যদের দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প।  

বৈঠকে কিম কোরীয় উপদ্বীপকে সম্পূর্ণরূপে পরমাণু অস্ত্র মুক্ত করার জন্য তার অবিচল ও দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। কিন্তু কীভাবে তা করা হবে, এটি স্পষ্ট নয়। কিম বলেন, এক ঐতিহাসিক বৈঠক হয়েছে। অতীতকে পেছনে ফেলে আমরা গুরুত্বপূর্ণ এক নথিতে স্বাক্ষর করতে যাচ্ছি। বিশ্ব ব্যাপক একটি পরিবর্তন দেখবে।

ট্রাম্প বলেন, পরমাণু অস্ত্র ত্যাগের ব্যাপারটি যাচাই করে দেখার ব্যাপারে রাজি হয়েছেন কিম। মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরো জানান, উত্তর কোরিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আপাতত বজায় থাকবে। পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের বিষয়ে সম্পূর্ণ নিশ্চিত হওয়ার পরই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে।

সংবাদ সম্মেলনে কিমের ভূয়সী প্রশংসা করেন ট্রাম্প। তাকে নিয়ে নতুন যুগের সূচনার ঘোষণাও দেন তিনি। ট্রাম্প বলেন, ‘আজকের ঘটনার জন্য আমরা দুজনই গর্বিত। আমরা দুজনই কিছু একটা করতে চাই। পরিবর্তন আসলেই সম্ভব। কিমের সঙ্গে আমার বৈঠক আন্তরিক, গঠনমূলক আর খোলামেলা ছিল।’

কিমকে প্রতিভাবান উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, তিনি খুব কম বয়সে একটি দেশের ক্ষমতা নেন ও কঠোরভাবে দেশটি পরিচালনা করেন। আমি তাকে বিশ্বাস করি।’

বিশ্বব্যাপী প্রতিক্রিয়া : বৈঠকের পর দক্ষিণ কোরিয়া বলেছে, এর মধ্য দিয়ে শীতল যুদ্ধের যুগের শেষ সংঘাতের অবসান হলো। একে স্বাগত জানিয়েছেন চীন ও রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীরাও।

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেছেন, এখন উত্তর কোরিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞাগুলো শিথিল করা যেতে পারে। তবে বৈঠকের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে ইরান। তাদের ভাষ্য, এমনও হতে পারে ট্রাম্প দেশে ফেরার আগেই এ চুক্তি বাতিল করে দিতে পারেন।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!