• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

পর্যটন বিকাশে বাজেটে প্রণোদনা চাইলেন সবাই


নিজস্ব প্রতিবেদক মে ৩, ২০১৭, ০৮:১৫ পিএম
পর্যটন বিকাশে বাজেটে প্রণোদনা চাইলেন সবাই

প্রধান অতিথির বক্তব্যে দেন বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন

ঢাকা: দেশে পযর্টনের মাধ্যমে বছরে প্রচুর পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব। আমাদের এ শিল্প এখনো সেই মানে যায়নি। এজন্য করনেটে গাড়ি সুবিধা, ট্যাক্স ফ্রি ট্রানজিট, জ্বালানি তেলের দাম কমানো, পর্যটন এলাকার নিরাপত্তা বাড়ানো, হোটলে সুবিধা বৃদ্ধি, পেশাদারিত্ব তৈরি ও ট্যুর অপারেটরদের বিশেষ ছাড়সহ আগামী বাজেটে একগুচ্ছ প্রণোদনা দেয়ার দাবি করেছেন এ খাত সংশ্লিষ্টরা।

বুধবার (৩ মে) বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন খাত নিয়ে এক প্রাক-বাজেট আলোচনায় এ দাবি করেছেন বক্তারা। পর্যটন ও বিমান পরিবহনের সংবাদ সংগ্রহকারী সাংবাদিকদের সংগঠন ‘এভিয়েশন অ্যান্ড ট্যুরিজম জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ’ আলোচনা সভাটির আয়োজন করে।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, আমরা এমন কিছু করতে পারিনি যে, সরকার পর্যটন খাতকে বেশি গুরুত্ব দেবে। তবে গত কয়েক বছরে এ খাত অনেক দূর এগিয়ে গেছে। পর্যটন খাতে প্রণোদনা প্রয়োজন। এজন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করবো। এভিয়েশন খাতে জ্বালানি তেলের মূল্য নিয়ে আমরা অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছিলাম। জ্বালানি তেলের মূল্যের সমন্বয় করা প্রয়োজন। সারচার্জ ও ল্যান্ডিং চার্জ নিয়েও কাজ চলেছে। পর্যটন শিল্পকে এগিয়ে নিতে আরো বেশি সচেতনতা বাড়াতে হবে বলে তিন মন্তব্য করেন।

এসময় আসন্ন বাজেটে এভিয়েশন ও পর্যটন খাতে বরাদ্দ বাড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন পর্যটন মন্ত্রী।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, অর্থ-মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ নিয়ে অনেকের ভুল ধারণা রয়েছে। আমরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে বরাদ্দ ঠিক করি। আমাদেরও সীমাবদ্ধতা রয়েছে। বরাদ্দকৃত অর্থ ছাড়ের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে ফাইল আটকে থাকে এমন ধারণাও ভুল। পর্যটন খাতে শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানির বিষয়টিও আমরা বিবেচনা করবো। এভিয়েশন খাতে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ফারুক খান বলেন, ট্যাক্সের ক্ষেত্রে সমন্বয়ের প্রয়োজন রয়েছে। আমাদের পর্যটন খাতকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। পর্যটন খাতে ইনসেনটিভ দেয়ার জন্য উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। পর্যটন খাতে শুল্কমুক্ত গাড়ির সুবিধা দেয়া উচিত। পর্যটন খাতের ব্যবসায়ীদের পুরস্কৃত করাসহ সিআইপি ঘোষণার উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে। এর মাধ্যমে ব্যবসায়িরা উৎসাহী হবেন। 

আলোচনায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দিন বলেন, আমরা এখনো পর্যটন ও এভিয়েশন ক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে যেতে পারিনি। তবে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগের মাধ্যমেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। এ খাতে ট্যাক্স হলিডেসহ আর্থিক প্রণোদনা দেয়া প্রয়োজন। বিশেষ করে যারা বিদেশি পর্যটক নিয়ে আসেন তাদের জন্য বিশেষ ট্যাক্স ছাড়ের উদ্যোগ নেয়ার প্রয়োজন রয়েছে। তাহলে এ খাতের সংশ্লিষ্টরা উৎসাহ পাবেন।

আলোচনায় পর্যটন খাতের বরাদ্দকৃত অর্থ সময়মতো ছাড় দেয়ার জন্য অনুরোধ জানান বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান ড. অপরূপ চৌধুরী।

আলোচনায় অংশ নিয়ে নভোএয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মফিজুর রহমান বলেন, পাশের দেশের চেয়ে আমাদের দেশে উড়োজাহাজের জ্বালানির মূল্য অত্যন্ত বেশি। এই অতিরিক্ত দামের জন্য বিদেশি এয়ারলাইন্সের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে। দেশিয় কোম্পানির জন্য সরকারের আরো বেশি সহায়তা প্রয়োজন। 

আলোচনা সভায় আসন্ন বাজেট উপলক্ষে টোয়াবের দেয়া প্রস্তাবনা তুলে ধরেন টোয়াবের পরিচালক ও প্যাসিফিক এশিয়া ট্রাভেল লিমিটেড (পিএটিএ) বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের মহাসচিব তৌফিক রহমান। তাদের দাবিগুলো হচ্ছে, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকরী পর্যটন সংস্থাগুলোর জন্য করমুক্ত যানবাহন আমদানির অনুমোদন, টোয়াবের সদস্যদের বিশেষ বিবেচনায় ব্যাংকের মাধ্যমে অর্থ পাঠানোর নিশ্চয়তা, ট্যুর অপারেটরদের সম্মানজনক হারে প্রণোদনা দেয়া এবং কারনেট’র মাধ্যমে ক্রস বর্ডার ট্যুরিজম সেবা দেয়া।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) শাকিল মেরাজ বলেন, বাংলাদেশকে এভিয়েশন হাব হিসেব করা সম্ভব । কিন্তু বাংলাদেশে ট্রানজিট যাত্রীদের ২১ ডলার ট্রানজিট ফি দিতে হয়। অথচ বিশ্বের অনেক দেশে ট্রানজিট ফি দিতে হয় না। বাংলাদেশকে হাব করতে হলে এ বিষয়টিও বিবেচনা করা জরুরি।

রজধানীর মহাখালীর একটি হোটেলে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনটির সভাপতি নাদিরা কিরণের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় আরো বক্তব্য দেন অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্ট অব বাংলাদেশ (আটাব) সভাপতি এসএন মঞ্জুর মোর্শেদ, মহাসচিব আব্দুস সালাম, মনিটর সম্পাদক ওয়াহিদুল আলম ও এটিজেএফবি’র সাধারণ সম্পাদক তানজিম আনোয়ার, পর্যটন বিচিত্রার সম্পাদক মহিউদ্দিন হেলাল প্রমুখ।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/তালেব

Wordbridge School
Link copied!