• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
১৪ জুন বিশ্ব রক্তদাতা দিবস

পর্যাপ্ত রক্ত নিশ্চিতের চ্যালেঞ্জে সরকার


বিশেষ প্রতিনিধি জুন ১৪, ২০১৮, ০১:৪৮ পিএম
পর্যাপ্ত রক্ত নিশ্চিতের চ্যালেঞ্জে সরকার

ঢাকা : বছরে সরকারি ও বেসরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রয়োজন প্রায় ৯ লাখ ব্যাগ রক্ত। বিভিন্ন মাধ্যমে রক্ত সংগ্রহ প্রায় সাত লাখ ব্যাগ। দুই লাখ ব্যাগ রক্তের সঙ্কট থাকে হাসপাতাল-ক্লিনিকে। রক্তের এ চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। প্রয়োজনীয় রক্তের অভাবে বাঁচানো যাচ্ছে না অনেক রোগী। এক হিসাবে রক্তের অভাবে বছরে মারা যায় ৫৫ হাজার রোগী। চাহিদা পূরণে নানা উদ্যোগেও সন্তোষজনক মাত্রায় মিলছে না রক্ত। আগামী ২০২০ সালের মধ্যে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি শতভাগ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে চায় সরকার।

এ লক্ষ্যে এ কর্মসূচি উৎসাহিত করার কার্যক্রমও পরিচালনা করে আসছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। স্বেচ্ছায় রক্তদাতার সংখ্যা শতভাগ উন্নীত করতে মন্ত্রণালয়ের লক্ষ্য থাকলেও কাক্সিক্ষত মাত্রায় বাড়ছে না সংখ্যা। গত কয়েক বছরে এ সংখ্যাটি অপরিবর্তিত থাকছে। ফলে স্বেচ্ছায় রক্তদাতার সংখ্যা বাড়ানো ও হাসপাতালে চাহিদামতো সরবরাহ নিশ্চিত করা সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অভিমত স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের।

এ পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার (১৪ জুন) উদযাপন হবে বিশ্ব রক্তদাতা দিবস। রক্তদানে উৎসাহ দিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ দিনকে উদযাপন করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সদস্য দেশে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে দিনটি উদযাপন করা হয়। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও নানা আয়োজনে দিবসটি উদযাপন হচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক হিসাবে দেশে স্বেচ্ছায় রক্তদাতার সংখ্যা ৩০ লাখ। গত সাত বছরে সংখ্যা অপরিবর্তিত থাকছে। প্রচার ও সচেতনতার অভাবে স্বেচ্ছায় রক্তদাতার সংখ্যা কাক্সিক্ষত হারে বাড়ছে না বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। বছরের চাহিদার প্রায় ৭০ শতাংশ রক্ত আত্মীয়স্বজন থেকে আর ৩০ শতাংশ স্বেচ্ছায় রক্তদাতার কাছ থেকে সংগ্রহ হচ্ছে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক জরিপ অনুযায়ী, গত কয়েক বছরে দেশে আত্মীয় রক্তদাতার সংখ্যায় সবচেয়ে বেশি অগ্রগতি হয়েছে। ১০ বছরে এ সংখ্যা ২০ থেকে প্রায় ৭০ শতাংশ বেড়েছে।

অন্যদিকে গত ১০ বছরে পেশাদার রক্তদাতার সংখ্যা শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে। পেশাদার রক্ত বিক্রেতাদের দূষিত রক্তের ওপর নির্ভরতা ১০ বছর আগেও ছিল ৭০ শতাংশের মতো। সচেতনতা বাড়ায় ও সরকারি নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন কর্মসূচির নানা আয়োজন ও উদ্যোগের ফলে পেশাদার রক্তদাতার সংখ্যা শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে। অবশ্য স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রকাশিত ‘স্বাস্থ্য বুলেটিনে’ বলা হয়, দেশে বছরে আট লাখ ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন হয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক প্রতিবেদন মতে, স্বেচ্ছায় রক্তদানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান বেশ পেছনে। একই অবস্থা বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি দেশের। স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে বিশ্বে প্রতিবছর ১০ কোটি ৮০ লাখ ব্যাগ রক্ত সংগৃহীত হয়। এর ৫০ শতাংশ রক্ত আসে উচ্চ আয়ের দেশগুলো থেকে। অনুন্নত দেশগুলোর তুলনায় উন্নত দেশে স্বেচ্ছায় রক্তদাতার সংখ্যা ৯ গুণেরও বেশি। ৬২ দেশে স্বেচ্ছায় রক্তদাতার সংখ্যা শতভাগ। উন্নত বিশ্বে প্রতি হাজারে স্বেচ্ছায় রক্ত দেয় ৪৫০ ব্যক্তি আর উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এ সংখ্যা মাত্র তিন।

অন্যদিকে নিরাপদ রক্ত সঞ্চালনের উপকরণ সরবরাহ এক বছরের বেশি সময় ধরে বন্ধ। সরকারি হাসপাতাল ও ব্লাড ব্যাংকগুলোয় উপকরণ না থাকায় রোগীরা বাধ্য হয়ে বাজার থেকে অনিরাপদ রক্ত কিনছেন। এতে গরিব রোগীরা আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি প্রাণঘাতী রোগের ঝুঁকিতেও পড়ছেন। লাল রক্তকে ঘিরে চলছে কালো বাণিজ্য। এক শ্রেণির ব্যবসায়ী হাতিয়ে নিচ্ছে রোগীদের টাকা।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!