• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পিলখানা হত্যা মামলার রায় যেকোনো দিন


আদালত প্রতিবেদক এপ্রিল ১৩, ২০১৭, ০২:২৫ পিএম
পিলখানা হত্যা মামলার রায় যেকোনো দিন

ঢাকা : বহুল আলোচিত পিলখানায় বিডিআর (বর্তমান বিজিবি) হত্যা মামলায় নিম্ন আদালতের দেয়া রায়ের ডেথ রেফারেন্স ও ফৌজদারি আপিলের শুনানি শেষ হয়েছে। মামলাটি রায়ের জন্য যেকোনো দিন রায় ঘোষণা করা হবে মর্মে সিএভি রেখেছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) বিচারপতি মো. শওকত হোসেন, বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বৃহত্তম বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে আসামিদের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট এম আমিনুল ইসলাম।

পরে আইনজীবী মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ২০১৫ সালে এ মামলার আপিল শুনানি শুরু হয়ে আজ পর্যন্ত ৩৭০ কার্য দিবস শুনানি শেষ হয়েছে। শুনানি শেষে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমান রেখে দিয়েছেন।

এ মামলায় যাদের যাবজ্জীবন সাজা হয়েছে তাদের সাজা বৃদ্ধিসহ রাষ্ট্রপক্ষ তিনটি আবেদন করেছিল। আদালত ওই আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন। রাষ্ট্রপক্ষের ওই আবেদন বিলম্বে করা হয়েছে উল্লেখ করে আদালত ওই আবেদন নাকচ করে দেন। দেরিতে আবেদন করার যে যুক্তি তারা দেখিয়েছেন তা গ্রহণযোগ্য নয় বলেও আদালত বলেছেন।

তিনি বলেন, এ মামলায় দীর্ঘ শুনানিতে আমাদের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেছি। আমার বিশ্বাস আমরা ন্যায় বিচার পাবো। এ মামলায় তিনি অধিকাংশ আসামির পক্ষে ‍শুনানি করেছেন বলেও জানান।

অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, পিলখানা যে বিডিআর হত্যাকাণ্ড হয়েছিল। সেই মামলার শুনানি আজ শেষ হয়েছে। কিছু আসামি আছে যাদের মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত ছিল কিন্তু হয়নি। কিছু আসামি আছে যারা খালাস পেয়েছেন তাদের সাজাবৃদ্ধি চেয়ে আমরা তিনটি দরখাস্ত করেছিলাম। কিন্তু আদালত দেরিতে দেয়া হয়েছে বলে সেগুলো নাকচ করে দিয়েছেন।

এ মামলায় এত সংখ্যক লোককে ফাঁসি দেয়া হয়েছে, আবার যাদের সাজা হয়েছে তাদের সবাই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আছে কিনা সেটি আদালত বিবেচনায় নেবেন। এ মামলায় কতজনের ফাঁসি বহাল থাকবে সেটি বলা যাচ্ছে না। তবে পিলখানার ঘটনাকে নৃশংস, খুবই দুঃখজনক উল্লেখ করে এ রাষ্ট্রের এই আইন কর্মকর্তা বলেন, পিলখানার ঘটনায় যে ৫৭ জন উচ্চ মানের সেনা কর্মকর্তা নিহত হয়েছে। তাদের যেভাবে হত্যা করা হয়েছে। তাদের সিপাহীরা যেভাবে তাদের অফিসারদেরকে হত্যা করেছে তা পৃথিবীর কোথাও আছে বলে আমার জানা নেই।  যে সমস্ত অফিসারদের মারা হয়েছে তাদের প্রত্যেকে ছিল সজ্জন ব্যক্তি এবং নিরপরাধ।

এই বিডিআর সৈন্যদের আক্রশের শিকার যেসব সেনা সদস্য তাদের জীবন দান করলো তাদের জন্য আমি ব্যক্তিগতভাবে দুঃখ অনুভব করি। এটা হওয়া কোনভাবেই উচিত ছিল না।’

আদালতে কি বলেছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘যারা ঘটনায় জড়িত তারা যেন খালাস না পায়, শাস্তি যেন কম না হয়। এবং এ ঘটনায় যাদের জড়িত থাকার সন্দেহের অবকাশ থাকে তারা যেন দণ্ডের শিকার না হন। এমন আবেদন করেছি।

পিলখানার ঘটনায় আসামিদের আপিল শুনানি ও ডেথ রেফারেন্স শুনানির জন্য ২০১৫ সালে বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করে দেন প্রধান বিচারপতি।  

২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন বিডিআরের সদর দফতরে পিলখানা ট্র্যাজেডিতে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন প্রাণ হারান। ওই বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি লালবাগ থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। পরে মামলা দুটি নিউমার্কেট থানায় স্থানান্তরিত হয়। বিচার হয় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার সংলগ্ন আলীয়া মাদ্রাসা মাঠসংলগ্ন অস্থায়ী এজলাসে। বিচার শেষে ঢাকা মহানগর তৃতীয় বিশেষ আদালতের বিচারক মো. আখতারুজ্জামান ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে বিডিআরের প্রাক্তন ডিএডি তৌহিদসহ ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। এছাড়া বিএনপি দলীয় প্রাক্তন সংসদ সদস্য নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টু (প্রয়াত) ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা তোরাব আলীসহ ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ২৭৭ জনকে খালাস দেয়া হয়।

রায়ের পর ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। রায়ের পর বিভিন্ন সময়ে আসামিরা দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপিল ও জেল আপিল করেন। এর মধ্যে ৬৯ জনকে খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করেন।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!