• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পুলিশের আন্তরিকায় স্বর্ণ ও পাসপোর্ট ফিরে পেলেন এই নারী


ফরহাদ খান, নড়াইল অক্টোবর ২৩, ২০১৮, ০৪:৩২ পিএম
পুলিশের আন্তরিকায় স্বর্ণ ও পাসপোর্ট ফিরে পেলেন এই নারী

ছবি: সোনালীনিউজ

নড়াইল : এক পুলিশ কর্মকর্তার আন্তরিকতায় স্বর্ণালংকার, পাসপোর্ট ও ল্যাপটপ ফিরে পেলেন এক নারী। ওই পুলিশ কর্মকর্তার নাম-মেহেদী হাসান। তিনি নড়াইলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত আছেন। দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নড়াইল সদরের দলজিতপুর গ্রামের সায়েরা বেগমের (৪৪) হাতে ছয় ভরি স্বর্ণালংকার, একটি ল্যাপটপ ও দু’টি পাসপোর্ট তুলে দেন তিনি (মেহেদী হাসান)। এসব মালামাল পেয়ে ভীষণ খুশি সায়েরা বেগম।

তিনি বলেন, মেহেদী স্যারের মহানুবতায় বিদেশ থেকে আনা স্বামীর স্মৃতিধন্য গহনাগুলো, পাসপোর্ট ও ল্যাপটপ ফিরে পেয়েছি। এতে পুলিশ বিভাগের সুনাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এ জন্য স্যারকে (মেহেদী) দোয়া করি ও ধন্যবাদ জানাই। সবার মাঝেই যেন এমন মানসিকতা থাকে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু বিভাগের চিকিৎসক শাহিন আকতার, শাহাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মোল্যা, ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক কৃঞ্চ বিশ্বাস, কবি আবু বক্কার মোল্যা প্রমুখ।

সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মেহেদী হাসান বলেন, গত ১৭ অক্টোবর বিকেলে নড়াইল সদরের দলজিতপুর গ্রামে একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে বিভিন্ন মামলার কয়েকজন আসামি অবস্থান করছেন; এমন সংবাদ পেয়ে সেখানে যাই। এক পর্যায়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করলেও আরো কয়েকজন পালিয়ে যায়। এ সময় ঘরের মধ্যে তল্লাশিকালে স্টিলের বাক্সের ভেতরে রাখা কম্বল ও কাঁথার ভাজের মধ্য থেকে প্রায় ছয় ভরি স্বর্ণালংকার, একটি ল্যাপটপ ও দু’টি পাসপোর্ট উদ্ধার করি। জনশূন্য ঘরে এসব মূল্যবান মালামাল দেখে অবাক হয়ে বাড়ির মালিককে খোঁজার চেষ্টা করি। পরবর্তীতে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের সূত্র ধরে বাড়ির মালিক সায়েরা বেগমের সন্ধান পেয়েছি। বাড়ির মালিক সায়েরা প্রায় আড়াই বছর ধরে খুলনায় ভাড়া বাসায় থাকেন। তার স্বামী হাফেজ মিজানুর রহমান আইয়ূব দুবাইতে কর্মরত অবস্থায় ২০১৩ সালের ১৫ এপ্রিল হঠাৎ করেই মৃত্যুবরণ করেন এবং গ্রামের বাড়িতেই তার লাশ দাফন করা হয়।

পরবর্তীতে ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার সুবিধার্থে খুলনায় বসবাস করছেন সায়েরা। তার (সায়েরা) দুই সন্তানের মধ্যে মেয়ে এম এ ক্লাসে এবং ছেলে এ বছর উচ্চ মাধ্য্যমিক পাস করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির চেষ্টায় আছেন। সায়েরা জানান, তিনি খুলনায় চলে যাওয়ার সময় তাদের দালান ঘরটি তালাবদ্ধ করে যান। ভাড়া বাসায় এসব মালামাল নেয়া ঝামেলা এবং ঝুঁকিপূর্ণ ভেবে ঘরের ভেতরে স্টিলের বাক্সে তালাবদ্ধ করে রাখেন। কিন্তু, তারা বাড়িতে না থাকায় বিভিন্ন ধরণের লোকজন আড্ডা দিয়ে এখানকার পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা করেছে। স্বর্ণাংলকারসহ এসব মূল্যবান মালামাল এভাবে বাড়িতে রাখা ঠিক হয়নি বলে মন্তব্য করেন তিনি। এদিকে খুলনায় চলে যাওয়ার পর গত আড়াই বছরের মধ্যে বাড়িতে কয়েকবার আসলেও রাত্রিযাপন করেন সায়েরা বেগমসহ তার সন্তানেরা। তাই বাড়িটি অবহেলিত অবস্থায় ছিল।

এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন পিপিএম বলেন, আমরা নড়াইলে শান্তি-শৃঙ্খলা ও সম্প্রীতি বজায় রাখার পাশাপাশি মানবিক কাজ করে যাচ্ছি। এরই ধারাবাহিকতায় লোহাগড়া উপজেলার পারমল্লিকপুর গ্রামে দুই পক্ষের দ্বন্দ্ব-সংঘাতে গ্রাম ছাড়া শতাধিক পরিবারকে বাড়িঘরে তুলে দিয়েছি। এ ছাড়া সরুশুনা, আমাদা, বয়রা, সদরের চৌগাছা, কালিয়ার যাদবপুর ও রঘুনাথপুরসহ বিভিন্ন গ্রামে দ্বন্দ্ব-সংঘাত ও হানাহানি নিরসন করা হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে চুরি, ডাকাতি ও লুট হওয়া স্বর্ণালংকার, টাকাসহ অন্যান্য মালামাল উদ্ধার করে নিজ মালিককে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে সায়েরা বেগমের উদ্ধারকৃত স্বর্ণালংকারসহ অন্যান্য মালামাল তার কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!