• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
তৃতীয় দফায় বেইজিং সফরে কিম

পূর্ব এশিয়ার কূটনীতির কেন্দ্রীয় চরিত্র চীন


আন্তর্জাতিক ডেস্ক জুন ২০, ২০১৮, ০২:২৬ পিএম
পূর্ব এশিয়ার কূটনীতির কেন্দ্রীয় চরিত্র চীন

ঢাকা : উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা ও ক্ষমতাসীন ওয়ার্কার্স পার্টি প্রধান কিম জং উন মঙ্গলবার (১৯ জুন) তৃতীয় দফায় বেইজিং সফরে গেছেন। সিঙ্গাপুরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের এক সপ্তাহ পর এই সফরে গেলেন কিম। বৈঠকের পর ওয়াশিংটন গত সোমবার দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে আগামী আগস্টে নির্ধারিত বার্ষিক সামরিক মহড়া বন্ধের ঘোষণা দেয়।

উল্লেখ্য, মহড়া বন্ধ সিদ্ধান্তের কয়েক ঘণ্টা পরেই ওয়াশিংটন চীনা পণ্যের ওপর আরো ২০০ বিলিয়ন ডলার শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে।

তৃতীয়বারের মতো কিমের এই আকস্মিক সফর নিয়ে কোনো পক্ষই এখনো মুখ খোলেনি। কিন্তু চীনে কিমের সফরের সময়সূচি বলে দেয় পিয়ংইয়ং এবং পূর্ব এশিয়ার কূটনীতিতে বেইজিং কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করছে। চীনের নীতি নির্ধারণ সংক্রান্ত গবেষক ইয়ানমেই শি’র মতে, কিম জং উন এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে খুব ভালো বৈঠক হলেও কিম ভালো করেই মূল চরিত্র চেনেন। তিনি জানেন শি জিনপিং এশিয়ার গডফাদার। তার বাস্তবিক হিসাব অনুসারে চীন উত্তর-পূর্ব এশিয়ায় উত্তর কোরিয়াকে অর্থনৈতিক ও কূটনীতিকভাবে সহায়তা করতে পারে।

সিঙ্গাপুরের বৈঠক ট্রাম্পের দিক থেকে সফল বলা যাবে না। উত্তর কোরিয়া পর্যবেক্ষকদের মতে, ওই বৈঠকের পর যুক্তরাষ্ট্র, উত্তর কোরিয়া এবং চীন নতুন করে কূটনৈতিক দ্বিধাবিভক্তির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সামনের পদক্ষেপ কী হতে পারে তা নিয়ে ভাবতে হচ্ছে তাদের। গত সপ্তাহে কিম এবং ট্রাম্প যে ঘোষণা দিয়েছেন তা মূলত চীনের ‘নিশ্চলতার বিপরীতে নিশ্চলতা’ তত্ত্বের বাস্তবায়ন বলা যায়। এই সিদ্ধান্তের ফলে উত্তর কোরিয়া পরমাণু বোমা পরীক্ষা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে এবং বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে সামরিক মহড়া বাতিল করেছে। আগস্টের সমস্যা মিটলেও এখন দেখার বিষয় আগামী পদক্ষেপ কী হতে যাচ্ছে।

বৈঠকে ‘কোরীয় উপদ্বীপে সম্পূর্ণ পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের’ কথা বলা হয়েছে। কিন্তু সম্পূর্ণ পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ বলতে কী বোঝানো হচ্ছে তা পরিষ্কার করে কোনো পক্ষই জানায়নি। যুক্তরাষ্ট্র চায় উত্তর কোরিয়া তার সকল পরমাণু কার্যক্রম বন্ধ করুক যা তৈরি করতে পিয়ংইয়ংকে অনেক বছর ব্যয় করতে হয়েছে। এখন চীন এবং এশিয়ার অন্যান্য দেশও এই পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের পক্ষে দাঁড়িয়ে আলোচনাকে সঠিক দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পক্ষে।

কিন্তু গবেষক শি’র মতে, ‘উত্তর-পূর্ব এশিয়ার জোটকে বিশ্বাস করানোর জন্য এটা একটা আঞ্চলিক প্রচেষ্টা। যুক্তরাষ্ট্র যতদিন তাদের কথা রাখবে ততদিন উত্তর কোরিয়াও পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের পক্ষে থাকবে।’ এর মধ্যে চীন উত্তর কোরিয়ার অর্থনৈতিক এবং কূটনীতিক সমৃদ্ধি বাড়ানোর জন্য ব্যাপক কাজ করবে।

কার্নেগ সিনঘুয়া সেন্টার ফর গ্লোবাল পলিসির গবেষক ঝাও তংয়ের মতে, উত্তর কোরিয়া এখনো জাতিসংঘের অবরোধের মধ্যে আছে। এমন অবস্থায় রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক সহায়তার জন্য চীন উত্তর কোরিয়ার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখন প্রশ্ন হলো, চীন কীভাবে উত্তর কোরিয়াকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা করবে।

গত মার্চে চীনে প্রথমবারের মতো গোপনে সফর করেন কিম। তখন কিমের সফরের তথ্য গোপন রাখে বেইজিং প্রশাসন। এরপর গত মে মাসে চীনের বন্দরনগরী দালিয়ানে সফর করেন কিম। তখনো কিম নিজের দেশে না ফেরা পর্যন্ত সফরের কথা প্রকাশ করেনি চীন। কিন্তু গতকাল মঙ্গলবার চীনের মিডিয়া কিমের তৃতীয় সফরের কথা স্বীকার করে। মজার বিষয় এই তিনবারের সফরে শি-কিমের মধ্যে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে তা কোনো দেশের প্রশাসনই প্রকাশ করেনি।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!