• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পেটের দায়ে ডিম্বাণু বিক্রি করছে কলেজছাত্রীরা!


আন্তর্জাতিক ডেস্ক এপ্রিল ১০, ২০১৭, ০১:৫৮ পিএম
পেটের দায়ে ডিম্বাণু বিক্রি করছে কলেজছাত্রীরা!

ঢাকা : আয়ুষ্মান খুরানার ভিকি ডোনার ছবিটি দেখেছেন বহু মানুষই। যেখানে শুক্রাণু বিক্রি করাই ছিল নায়কের পেশা। সে তো রিল লাইফের কথা। বাস্তবেও যে তেমন কেউ নয় এরকম নয়। তবে যা নেই সিনেমায়, তাই-ই আছে বাস্তবে। আরা তারা হল নিকি ডোনার। ডিম্বাণু বিক্রি করেই উপার্জন করেন এই মহিলারা। সিনেমার দৌলতে অনেকেই জানেন, শুক্রাণু বিক্রি করা এমন কঠিন কাজ কিছু নয়। শারীরিক ধকল তাতে অনেকটাই লঘু। কিন্তু ডিম্বাণু বিক্রি করা মোটেও সহজসাধ্য বিষয় নয়। তা যেমন সময়স্বাপেক্ষ, তেমনই সম্ভাবনা আছে মারাত্মক অসুস্থতার। এমনকী মৃত্যু হওয়ায় অসম্ভব নয়। তাও ঝুঁকি নিয়েই এ কাজ করছেন মহিলারা। যাঁদের নাম দেওয়া হয়েছে নিকি ডোনার।

কিন্তু কেন এই ঝুঁকিবহুল কাজ? উত্তর একটাই, দারিদ্র। স্বামী সামান্য শ্রমিকের কাজ করে, বাড়ির অর্থাভাব মেটাতেই এই পথ নিতে বাধ্য হচ্ছেন কেউ। কেউবা আবার মেয়ের চিকিৎসার টাকা জোগাতই ধরছেন এই পথ। কেননা মোটে তিন-চার সপ্তাহের ভিতরেই হাতে আসে মোটা টাকা। আইভিএফ বা গর্ভ ভাড়া দেওয়ার মতোও কাজ নয় এটি। অনেকটাই ঝামেলাহীন, আর তাই গোপনে এই উপার্জনের পথ ধরতে দ্বিধা করছেন না মহিলারা।

কীভাবে সংগৃহীত হয় ডিম্বাণু? প্রথমে সপ্তাহ তিনেক বিশেষ ওষুধ দেওয়া হয় মহিলাদের। তাতে বন্ধ হয়ে যায় তাঁদের ঋতুচক্র। এরপর দেওয়া হয় হরমোন ইঞ্জেকশন। এতে স্ফীত হয় ডিম্বাশয়। আল্ট্রাসোনোগ্রাফি করে দেখে নেওয়া হয় ডিম্বাণু জন্ম নিয়েছে কিনা। এরপর ফের দেওয়া হয় হরমোন ইঞ্জেকশন। তারপর ছোট্ট সার্জারি করে বের করে নেওয়া ডিম্বাণু। বিনিময়ে ২৫-৩৫ হাজার টাকা পান ‘নিকি ডোনার’রা। অবশ্য এই দামে ডিম্বাণু পান না গ্রহীতারা। কেননা মাঝে আছে দালাল চক্র। অন্যান্য দেশে যেরকম অনুমতি নিয়ে চুক্তি স্বাক্ষর করে ডিম্বাণু নেওয়া হয়, এখানে সেরকম হয় না। এই মহিলাদের জোগাড় করেন দালালরা। তাঁরা এর জন্য নেন ৫০-৬০ হাজার টাকা। ডোনাররা যে যতটা দরদাম করতে পারেন, ততটাই প্রাপ্তি হয় তাঁদের।

পেটের দায়ে ডিম্বাণু বিক্রি করছে কলেজছাত্রীরাপেটের দায়ে দুবেলা দুমুঠো খাবার জোগাড় করার তাগিদে ফার্টিলিটি ক্লিনিকগুলোতে নিজেদের ডিম্বাণু বিক্রি করছে কলেজছাত্রীরা। তাও আবার কোনো রকম স্বাস্থ্য সচেতনতা ছাড়াই।  ভারতের তেলেঙ্গানা রাজ্যের এই খবরটি আনন্দবাজার পত্রিকার।

 খবরে বলা হয়, দালালদের খপ্পরে পড়ে কলেজছাত্রীরা এই সব ক্লিনিকে আসছে। এরা জানতেও পারছে না দিনের পর দিন কোনো রকম যথাযথ পদ্ধতি এবং প্রোটেকশন ছাড়াই এভাবে ডিম্বাণু বিক্রির ফলে কতটা মারাত্মক ক্ষতি ঘটিয়ে ফেলছে তাদের স্বাস্থ্যে!

দেখা যায়, এই ছাত্রীরা মূলত তেলেঙ্গানার নালগোন্ডা জেলার দেবরকোন্ডা, আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চল মেহবুবনগর, ওয়ারানঙ্গান ও করিমনগরের বাসিন্দা। দারিদ্র্য এই অঞ্চলের মানুষগুলোর নিত্যদিনের সঙ্গী। তার ওপর টানা খরায় আরো বেড়েছে দুর্দশা। ফলে সেখানকার অল্পবয়সি মেয়েদের সহজেই লোভ দেখিয়ে সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে এই পেশায় নিয়ে আসছে বিভিন্ন ফার্টিলিটি ক্লিনিকের দালালরা।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School

আন্তর্জাতিক বিভাগের আরো খবর

Link copied!