• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে এগিয়ে চলছে তুকাজ্জেবান


রাজশাহী প্রতিনিধি ফেব্রুয়ারি ৬, ২০১৭, ০১:৫৪ পিএম
প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে এগিয়ে চলছে তুকাজ্জেবান

রাজশাহী: শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে এগিয়ে চলছে তুকাজ্জেবান খাতুন। তার দুই হাত স্বাভাবিক মানুষের মতো নয়। পায়ের অবস্থাও তাই। উচ্চতা মাত্র তিন ফিট ৫ ইঞ্চি। স্বাভাবিকভাবে চলাফেরাও করতে পারে না সে। অনেক কষ্টে চলাফেরা। এ প্রতিবন্ধকতা বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি তুকাজ্জেবানের জীবনে। অনেক কষ্টে লেখাপড়া করে সে এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে।

তুকাজ্জেবান চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সদর উপজেলার আমনুরা ধিনগর গ্রামের সালাম উদ্দিনের মেয়ে। আমনুরা আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে অদম্য ইচ্ছা শক্তির কারণে প্রতিবন্ধী তুকাজ্জেবান এবারের মানবিক বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। নির্দিষ্ট কোনো স্বপ্ন না থাকলেও ভালো কিছুর বাসনায় পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছে সে। তানোর উপজেলার মুন্ডুমালা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ১৩ নম্বর কক্ষে পরীক্ষা দিচ্ছে তুকাজ্জেবান।

রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) বাংলা দ্বিতীয় পত্রে অন্য পরীক্ষার্থীদের মতোই স্বাভাবিকভাবে মনোযোগ সহকারে পরীক্ষা দিচ্ছে তুকাজ্জেবেন। জন্ম থেকেই দুই হাত ও পায়ে আঙুল নেই বললেই চলে। নিজ ইচ্ছাশক্তিতে সহপাঠীদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে চলছে সে। পরীক্ষার হলে তুকাজ্জেবেন খাতুন জানায়, কষ্ট লাগছে তবুও আনন্দের সঙ্গে পরীক্ষা দিচ্ছি। প্রস্তুতি মোটামুটি ভালো।

তুকাজ্জেবেনের বাবা আব্দুস সালাম জানান, পাঁচ মেয়ে সন্তানের মধ্যে তুকাজ্জেবেন খাতুন বড়। তার ছোট মেয়েটাও একই প্রতিবন্ধী। সেও ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ছে। তারা জন্ম থেকে প্রতিবন্ধী। ছোট বেলা থেকে তার লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ দেখে বাড়ির সবাই বেশ অবাক। অভাবের সংসারে তুকাজ্জেবেনসহ দুই মেয়েকে খুব কষ্ট করে লেখাপড়া করাচ্ছি। বসত ভিটা ৫ শতক জমি ছাড়া আমার আর কিছুই নেই। কোনো রকমে সংসার চলে।

তুকাজ্জেবেনের মা আমেনা বেগম বলেন, তুকাজ্জেবেনকে প্রতিবন্ধী বলতে খুব কষ্ট হয়। মেয়ের লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ দেখে তখনই সিদ্ধান্ত নেই, যতই কষ্টই হোক মেয়েকে লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষের মত মানুষ করবো।

আমনুরা আদর্শ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কুদরত-ই-খুদা বলেন, তুকাজ্জেবেন স্কুলের মধ্যে একমাত্র প্রতিবন্ধী ছাত্রী এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। তার ছোট বোন তার মতই প্রতিবন্ধী এবার ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছে। তুকাজ্জেবেন খাতুন এর আগে জিএসসি পরীক্ষা দিয়ে সাড়ে তিন পয়েন্ট পেয়েছে। তার লেখাপড়া করার বেশ আগ্রহ রয়েছে। মেধায় ভাল হলেও শুধু শারীরিক প্রতিবন্ধীতার জর‌্য লিখে এগোতে পারে না।

মুন্ডুমালা উচ্চবিদ্যালয়ের কেন্দ্র সচিব মি. কামেল মার্ডী বলেন, প্রতিবন্ধী হিসেবে বোর্ডের নীতিমালা অনুযায়ী তাকে সব সুযোগ-সুবিধা দেয়ার কথা বলেছিলাম। পরীক্ষার আগে তার সাথে কথা বলেছি। কিন্ত সে নিজে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতই পরীক্ষা দিবে বলে জানায়। তার যথেষ্ট আগ্রহ ও আত্মবিশ্বাস রয়েছে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!