• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
গাজীপুরে আজ রাতে শেষ হচ্ছে প্রচারণা

প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে আ.লীগ বিএনপি ব্যস্ত নালিশে


গাজীপুর প্রতিনিধি জুন ২৪, ২০১৮, ১২:০৪ এএম
প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে আ.লীগ বিএনপি ব্যস্ত নালিশে

গাজীপুর : গাজীপুর সিটি করপোরেশন (জিসিসি) নির্বাচন ঘিরে শেষ মুহূর্তের প্রচারণা চালাচ্ছেন প্রার্থীরা। রোববার (২৪ জুন) রাত ১২টায় শেষ হচ্ছে নির্বাচনী প্রচারণা। ভোটারদের আকৃষ্ট করতে নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী। চলছে দলীয় নেতাকর্মীদের বৈঠক।

অপরদিকে সিটির প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রচারণা চালাচ্ছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা। পাশাপাশি আওয়ামী প্রার্থীর বিরুদ্ধ আচরণ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ‘পক্ষপাতিত্বে’র অভিযোগ তুলেছে দলটি।

শনিবার (২৩ জুন) সকালে নগরীর টঙ্গীর খৈরতুল এলাকার এক পথসভায় নানা প্রতিশ্রুতি দেন জিসিসি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী মো. জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, ‘গাজীপুরে টঙ্গী-চান্দনা চৌরাস্তা হাইওয়েতে মানুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে বসে থাকেন। আমি নির্বাচিত হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে ওই পথের ৫০ পারসেন্ট যানজট মুক্ত করে দেব।’ তিনি আরো বলেন, ‘গাজীপুর সিটিতে আগে যিনি মেয়র ছিলেন তাকে এবার বিএনপি মনোনয়ন দেয়নি। যাকে মনোনয়ন দিয়েছে সেই হাসান উদ্দিন সরকার টঙ্গী পৌরসভার দুইবার চেয়ারম্যান ছিলেন, গাজীপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ছিলেন, দুইবার পার্লামেন্ট মেম্বার ছিলেন। কিন্তু আমাদের এই এলাকার মানুষের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি। যার বয়স আজ ৭৪ বছর হয়ে গেছে, যিনি চলি­শ বছরে কিছু করেননি, তিনি দুই এক বছরে কিছু করবেন না।’

এদিন দুপুরে গাজীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য জাহিদ আহসান রাসেলের টঙ্গীর বাসভবনে গাজীপুর জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাদের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকটি দুপুর ১২টার দিকে শুরু হয়ে বিকাল ৩টা পর্যন্ত চলে। সিটি নির্বাচনের দুই দিন আগে স্থানীয় সংসদ সদস্যের বাসভবনে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে ভোট নিয়ে দিক-নির্দেশনামূলক আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে।

সংসদ সদস্য জাহিদ আহসান বলেন, ‘মূলত ঈদ পুনর্মিলনী হিসেবে স্থানীয় জেলা ও মহানগর নেতাদের ‘গেট-টুগেদার’ বৈঠক হয়েছে। তবে দুদিন পর গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন হওয়ায় এ নিয়েও উপস্থিত নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করা হয়েছে।’

তিনি জানান, বৈঠকে নৌকা প্রতীকের বিজয়কে সুনিশ্চিত করতে সব ধরনের দলীয় বিরোধ মিটিয়ে একযোগে কাজ করার দিক-নির্দেশনা দেওয়া হয়। বৈঠকে গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি, জেলা সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন সবুজ, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমতউল্ল­া খান, গাজীপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সাবেক এমপি কাজী মোজাম্মেল হকসহ জেলা ও মহানগরের অন্য নেতারা অংশ নিয়েছেন।

এ ছাড়া আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট রিয়াজুল কাউসার, বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি ও ঢাকা উত্তরের প্রস্তাবিত মেয়র প্রার্থী আতিকুর রহমান আতিক উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী মো. হাসান উদ্দিন সরকার শনিবার পূবাইলের হায়দরাবাদ থেকে প্রচারণা শুরু করেন। পরে তিনি মাজুখান বাজার, নন্দীবাড়ি, বিন্দান, ভাদুন, ইছালী ও কলের বাজার এলাকায় প্রচারণা চালান। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায় একেএম ফজলুল হক মিলন, সদস্য সচিব কেন্দ্রীয় নেতা কাজী ছাইয়েদুল আলম বাবুল প্রমুখ।

নগরীর ৯ নম্বর ওয়ার্ডে প্রচারণা চালান বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ। ৪০ ও ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও পেশাজীবী নেতা ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন। ৫ নম্বর ওয়ার্ডে প্রচারণা চালান বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা প্রফেসর ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার। ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে ছিলেন বিএনপির গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া। ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডে দলটির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য বিষয়ক সহসম্পাদক প্রফেসর ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল­াহ আমান, ২৮ ওয়ার্ডে বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ ও অন্যরা প্রচারণা চালান। ৬ নম্বর ওয়ার্ডে প্রচার কাজ করেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও কণ্ঠশিল্পী বেবী নাজনিন। ৫২ ও ৫৩ নম্বর ওয়ার্ডে প্রচারণায় ছিলেন মহিলা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আফরোজা আব্বাস।

১৮ নম্বর ওয়ার্ডে গণসংযোগ করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশীদসহ অন্যরা। ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা রফিক শিকদার, ২ নম্বর ওয়ার্ডে সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদ, ১১ নম্বর ওয়ার্ডে কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল আউয়াল খান এবং ১, ১৭, ৩২ নম্বর ওয়ার্ডে অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতারা প্রচারণা চালান। ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে প্রচারকাজ করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নাল আবেদীন ফারুক, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ। ৩৭ ও ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডে অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতারা শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় ব্যস্ত ছিলেন।

এ দিন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ও সমর্থকদের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হাসান। শনিবার রিটার্নিং অফিসার বরাবর এক লিখিত অভিযোগ করেন তিনি।

হাসান সরকার বলেন, ‘আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী ও তার নেতাকর্মীরা গাজীপুর সিটি নির্বাচনী প্রক্রিয়ার শুরু থেকেই একের পর এক আচরণবিধি লঙ্ঘন করে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ বানচাল করছেন। একই সঙ্গে আমার সমর্থকদের ভোট অনুষ্ঠান থেকে দূরে রাখতে পুলিশ দিয়ে গ্রেফতার, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও মিথ্যা মামলা দায়েরসহ বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হচ্ছে।’

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!