• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
মিয়ানমারের মন্ত্রীর ‘বাঙালি’ উচ্চারণে ক্ষোভ

প্রত্যাবাসনে এনভিসি লাগবে রোহিঙ্গাদের


কক্সবাজার প্রতিনিধি এপ্রিল ১২, ২০১৮, ০৩:৪৫ পিএম
প্রত্যাবাসনে এনভিসি লাগবে রোহিঙ্গাদের

ঢাকা : বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের রাখাইনে স্থায়ীভাবে ফিরতে হলে নতুন করে এনভিসি (ন্যাশনাল ভেরিফিকেশন কার্ড) নিতে হবে বলে জানিয়েছেন সফররত মিয়ানমারের সমাজকল্যাণ, ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রী উইন মিয়াত আয়ে।

বুধবার (১১ এপ্রিল) কক্সবাজারের উখিয়া কুতুপালং শিবির পরিদর্শনকালে তিনি এ কথা জানান। এ সময় মন্ত্রী রোহিঙ্গাদের ‘বাঙালি’ উচ্চারণ করায় ক্ষুব্ধ হন তারা।

দ্রুত রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার কথা উল্লেল করে মিয়াত আয়ে বলেন, ‘রাখাইনে আগের পরিবেশ নেই। সেখানে ৩০টি শিবির নির্মাণ করা হয়েছে। প্রত্যাবাসিতদের (রোহিঙ্গা) কিছুদিন শিবিরে রাখার পর নিজ বাড়িতে ফেরার ব্যবস্থা করা হবে। তাদের চলাচল, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং সন্তানদের পড়ালেখার জন্য স্কুল, মাদরাসা, কলেজ নির্মাণ করা হবে। এজন্য প্রথমে রাখাইনে বসবাসে ইচ্ছুকদের এনভিসি সংগ্রহ করতে হবে। পরে তাদের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হবে।’

এর আগে মিয়াত আয়ে শিবিরে যাওয়ার সময় রোহিঙ্গারা বিভিন্ন মোড়ে বিক্ষোভের চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এ সময় রোহিঙ্গারা বলতে থাকেন, ‘আমাদের নির্যাতন, হত্যা, ধর্ষণ করে পাঠিয়ে দিয়েছে।’ শিবিরে আশ্রিতদের সঙ্গে কথা বলার সময় রোহিঙ্গাদের ‘বাঙালি’ হিসেবে ফিরিয়ে নেওয়ার কথা বলেন মিয়ানমারের মন্ত্রী। তাৎক্ষণিক মন্ত্রীর এই বক্তব্যের বিরোধিতা করেন রোহিঙ্গারা। বিক্ষুব্ধরা বলেন, তারা রোহিঙ্গা পরিচয়ে মিয়ানমারে ফিরতে চান।

মিয়াত আয়ের সঙ্গে কথা বলেন রোহিঙ্গা নেতা মহিব উল্লাহ, ছৈয়দ উল্লাহ, জাহেদা বেগম ও জামালিদা বেগম। তারা মন্ত্রীকে বলেন, রোহিঙ্গারা যুগ যুগ ধরে মিয়ানমারে বসবাস করছে। তাদের বাবা-মা বা দাদা-নানার এনভিসি রয়েছে। তারা নতুন করে ওই কার্ড নেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন। একই সঙ্গে তারা জানান, মিয়ানমারের নাগরিকত্ব দেওয়া হলে সেখানে ফিরে যাবেন। এ সময় মিয়ানমারের মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সরকার আশ্রিতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা পাঠালে তা যাচাই-বাছাই করে যথাযথ মর্যাদায় তাদের ফিরিয়ে নেওয়া হবে।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনা ও আশ্রয়শিবির পরিদর্শনে বুধবার ভোরে ঢাকা পৌঁছান মিয়াত আয়ে। সেখান থেকে বিমানে চড়ে কক্সবাজার পৌঁছে বেলা ১১টার দিকে উখিয়ার শিবিরে যান তিনি। ১২ সদস্যের মিয়ানমারের প্রতিনিধিদল কুতুপালং শিবিরে পৌঁছালে তাদের স্বাগত জানান শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. আবুল কালাম। ক্যাম্প ইনচার্জের সম্মেলনকক্ষে উভয়পক্ষের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরে দ্রুত প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরুর আহ্বান জানান তিনি। পরে ডি-৫ ব্লকের জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) কার্যালয়ে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেন মন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীরা। সফরকালে সীমান্তের শূন্যরেখায় যাওয়ার কথা থাকলেও সেখানে যাননি মিয়াত আয়ে।

বুধবার কক্সবাজারে রাতযাপনের পর বৃহস্পতিবার (১২ এপ্রিল) সকাল ১০টায় ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে মিয়াত আয়ের। এদিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে আলাদা দুটি বৈঠকের কথা রয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১টার দিকে মিয়ানমারের উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা রয়েছে তার।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!