• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
রহস্যের নতুন মোড়

প্রত্যুষাকে যৌনব্যবসায় বাধ্য করেছিলেন রাহুল!


নিজস্ব প্রতিবেদক নভেম্বর ৪, ২০১৬, ০৬:১১ পিএম
প্রত্যুষাকে যৌনব্যবসায় বাধ্য করেছিলেন রাহুল!

ঢাকা: নতুন মোড় নিয়েছে প্রত্যুষা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃত্যু রহস্য। আত্মহত্যার ঠিক আগে প্রত্যুষার সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছিল তার বয়ফ্রেন্ড রাহুল রাজ সিংহের। এ সংক্রান্ত একটি অডিও রেকর্ড হাতে এসেছে আইনজীবী নীরজ গুপ্তার।

অডিওতে প্রমাণ মিলেছে, প্রত্যুষার আত্মহত্যার পেছনে রাহুলের প্ররোচনা ছিল। টিভি সিরিয়ালের সেই জনপ্রিয় মুখ ‘বালিকা বধূ’কে বাস্তবে জোর করে যৌন ব্যবসায় নামতে বাধ্য করেছিলেন তার বয়ফ্রেন্ড। চাঞ্চল্যকর এই দাবি করেছেন ওই আইনজীবী ও প্রত্যুষার মা সোমা বন্দোপাধ্যায় ও বাবা শেখর।

আইনজীবী জানান, তিন মিনিটের ওই ফোন কল রেকর্ডে প্রত্যুষা বলেছিলেন, ‘আমি এখানে এসেছিলাম অভিনয় করতে। নিজেকে বেচতে তো আসিনি। রাহুল তুমি আমাকে কোথায় এনে ফেলেছ! তোমার কোনো ধারণা নেই, আমার কতটা খারাপ লাগছে।’ আইনজীবী নীরজ জোর দাবি করছেন, ফোনকলের ওই রেকর্ড থেকেই পরিষ্কার রাহুল জোর করে প্রত্যুষাকে যৌনব্যবসায় নামতে বাধ্য করেছিলেন। পরে ফোনে ‘প্রস্টিটিউশন’ শব্দটাও ব্যবহার করেছিলেন তরুণী নায়িকা।

এসব কথা শোনার পরেই রাহুল ফোন কেটে দিয়েছিলেন। কিন্তু প্রত্যুষা আবারো ফোন দেন। বলেন, ‘তুমি হিংসুটে। তুমি আমার বদনাম করছ। লোকে আমাকে নিয়ে খারাপ কথা বলছে। আমার বাবা-মাকেও হুমকি দিচ্ছে। সবকিছু শেষ হয়ে গেল রাহুল। আমি মরে গিয়েছি (মর গ্যায়ি ম্যায়)।’ একথা বলার পর রাহুল খানিকটা উদ্বিগ্ন হয়েছিলেন। তিনি প্রত্যুষার ফ্ল্যাটেও আসতে চেয়েছিলেন। কিন্তু প্রত্যুষার শেষ কথা ছিল, ‘তুমি এসে কী করবে? আর আধ ঘণ্টার মধ্যে সব কিছু শেষ হয়ে যাবে।’

আইনজীবী নীরজের প্রশ্ন, ‘কে বা কারা প্রত্যুষার বাবা-মাকে হুমকি দিচ্ছিলেন তা পুলিশের তদন্ত করে বের করা উচিত ছিল। কিন্তু পুলিশ তা করেনি। প্রত্যুষার হাতে যে কোনো কাজ ছিল না আমি জানতাম। আমি ওকে সাপোর্টও করতাম। আর এই ফোন কল হাতে আসার পর বোঝাই যাচ্ছে রাহুল জোর করে ওকে যৌনব্যবসায় নামতে বাধ্য করেছিলেন।’ 

কেই এই প্রত্যুষা: ভারতীয় বিনোদন জগতের সম্ভাবনাময় একটি মুখ ছিল প্রত্যুষা বন্দোপাধ্যায়। জামশেদপুরে জন্ম নেয়া এ তরুণী অভিনেত্রী মাত্র ১৮ বছর বয়সেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আসেন কালার্স টিভির 'বালিকা বধূ' সিরিয়ালে অভিনয় করে। মাত্র ছয় বছরের ক্যারিয়ারে পৌঁছে গিয়েছিলেন খ্যাতির চূড়ায়। তার মতো এতো কম সময়ে এতটা জনপ্রিয়তা বোধ হয় ছোট পর্দার খুব কম তারকাই পেয়েছেন। দর্শকদের কাছে নিজের নাম প্রত্যুষার চেয়ে নিজের অভিনীত চরিত্র আনন্দীর নামেই বেশি পরিচিত হয়ে ওঠেছিলেন।

বালিকাবধূ রূপী প্রত্যুষাতিন বছর টানা সিরিয়ালে অভিনয়ের পর মাঝে অংশ নিয়েছিলেন রিয়ালিটি টিভি শো ‘ঝালাক দিখলা যা’র পঞ্চম সিজনে। ‘বিগ বস’-এর সপ্তম সিজনে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিজয়ের মুকুট ছিনিয়ে না আনতে পারলেও টিকে ছিলেন ৬৩ দিন। বাস্তব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অপরাধ বিষয়ক রিয়ালিটি শো ‘সাবধান ইন্ডিয়া’র একজন সঞ্চালকের ভূমিকাতেও দেখা গিয়েছিল তাকে। সবশেষ তিনি কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন ‘হাম হ্যায় না’ টিভি সিরিজটিতে। সেই সঙ্গে সনি এন্টারটেইনমেন্টের রিয়েলিটি শো ‘পাওয়ার কাপল’-এ  রিয়ালিটি শোতে অংশ নিয়েছিলেন তার সাবেক প্রেমিক রাহুলের সঙ্গে।

সূচনাটা অসাধারণ হলেও সম্প্রতি নিজের অভিনয়জীবন নিয়ে পরিতৃপ্ত ছিলেন না প্রত্যুষা। আত্মহত্যার কয়েকদিন আগে টিভি ইন্ডাস্ট্রির এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুকে ফোন করে নিজের বিষণ্ণতার কথা জানিয়েছিলেন। কথিত আছে তিনি মদ্যপানে আসক্ত হয়ে পড়েছিলেন। এর মধ্যেই চলতি বছরের ১ এপ্রিল মুম্বাইয়ে নিজ বাড়িতে আত্মহত্যা করেন এই জনপ্রিয় অভিনেত্রী। এ ঘটনায় মূল অভিযোগের আঙুল ওঠে প্রত্যুষার বয়ফ্রেন্ড রাহুল রাজ সিংহের দিকে। প্রাথমিক তথ্য হাতে আসার পর পুলিশ রাহুলকে গ্রেপ্তার করে। পরে জামিনে ছাড়া পান।   

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর/এমএন

Wordbridge School
Link copied!