• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

প্রধান শিক্ষক যখন যৌন নিপীড়ক!


মেহেরপুর প্রতিনিধি মার্চ ২১, ২০১৮, ০৫:২৫ পিএম
প্রধান শিক্ষক যখন যৌন নিপীড়ক!

প্রতীকী ছবি

মেহেরপুর: সম্প্রতি সারাদেশে শিক্ষক কর্তৃক ছাত্রীদের যৌন নিপীড়নের হার বেড়েই চলেছে! সেটা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে প্রাথমিক পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। এ ধরণের ঘটনায় আতঙ্ক তৈরি হয়েছে নিপীড়নের শিকার ছাত্রীসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য ছাত্রীদের মধ্যেও। এমনকি এ ধরণের ঘটনায় অভিভাকরাও চিন্তিত! তেমনই একটি ঘটনা ঘটেছে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার নওপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।

ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক হাফিজুর রহমান বকুলের বিরুদ্ধে ছাত্রী যৌন নিপিড়নের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সম্প্রতি চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির কয়েকজন ছাত্রী বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করে দিলে বিষয়টি শিক্ষক ও স্থানীয়দের নজরে আসে। বিষয়টি প্রকাশ হওয়্র পর গ্রামজুড়ে চলছে ক্ষোভ।

পরে ওই ঘটনায় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের সমন্বয়ে গঠিত তদন্ত টিম ঘটনার সত্যতা পেলেও প্রধান শিক্ষক বলেছেন তার বিরুদ্ধে এটি ষড়যন্ত্র মাত্র!

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ক্লাসের পরেই বিদ্যালয়ে বিশেষ কোচিং করান প্রধান শিক্ষক হাফিজুর রহমান বকুল। কিন্তু চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীদের মধ্যে কয়েকজন তার লালসার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়। কোচিং শেষের দিকে নির্দিষ্ট একেকদিন একেক ছাত্রিকে বিদ্যালয়ের কম্পিউটর কক্ষে (নির্জন কক্ষে) নিয়ে বিভিন্ন প্রলোভনে যৌন নিপিড়ন চালান। লজ্জ্বা ও ভয়ে কয়েকজন ছাত্রি বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করে দেয়। এক পর্যায়ে যৌন নিপিড়নের বিষয়টি সকলের সামনে উঠে আসে। জানাজানি হলে গ্রামজুড়ে শুরু হয় প্রতিবাদের ঝড়। বিষয়টি আঁচ করতে পেরে কৌশলে তিন দিনের ছুটি নিয়েছে প্রধান শিক্ষক।

স্থানীয় ও ভুক্তভোগিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবহিত করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (২০ মার্চ) সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা ফয়সাল বিন হাসান ও তাজমিরা খাতুন এবং কাথুলী ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান রানার সমন্বয়ে গঠিত টিম সরজমিনে ওই বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন। অভিযোগের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ভুক্তভোগী ছাত্রীদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন তারা।

এ বিষয়ে গাংনী উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা ফয়সাল বিন হাসান বলেন, একজন ছাত্রীর মা ও বাবার সঙ্গে কথা হয়েছে। কয়েকজন ছাত্রীর সঙ্গেও কথা হয়েছে। ছাত্রীদের চরম আপত্তির পরেও তিনি তাদের শরীরের স্পর্শকতার স্থানে হাত দিতেন বলে তারা আমাদের জানিয়েছে।

কাথুলী ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান রানা বলেন, বেশ কয়েক বছর ধরেই শিক্ষকের বিকৃত যৌন লালসার শিকার ছাত্রীরা নিরবে সহ্য করে অন্যত্র চলে গেছে। পিতৃতুল্য শিক্ষকের কাছ থেকে এমন আচরণের বিষয়ে লজ্জায় তারা মুখ খুলতে পারেনি। বিষয়টি নিয়ে আমরাও খুব বিব্রত।

নওপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা পর্যদ সভাপতি আব্দুস সাত্তার বলেন, এখন অনেকেই অভিযোগ দিচ্ছে। এর আগে কেউ এমন অভিযোগ করেনি। এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জরুরি বৈঠক ডেকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। প্রধান শিক্ষকের ছুটির বিষয়ে তিনি বলেন, ভারতীয় ভিসা করার কথা বলে প্রধান শিক্ষক হাফিজুর রহমান বকুল তিন দিনের ছুটি নিয়েছেন। যৌন নির্যাতনের ঘটনায় গা ঢাকা দিতে ছুটি নিয়েছেন কিনা তা আমার কাছে পরিস্কার নয়।

গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিষ্ণুপদ পাল বলেন, শিক্ষা কর্মকর্তা ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের সমন্বয়ে গঠিত টিম তদন্ত করে প্রতিবেদন দিলেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সোনালীনিউজ/এমএইচএম

Wordbridge School
Link copied!