• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

প্রধানমন্ত্রীকে শিশু অহনের আবেগঘন চিঠি


ফেসবুক থেকে ডেস্ক এপ্রিল ২৮, ২০১৭, ১০:৪৮ পিএম
প্রধানমন্ত্রীকে শিশু অহনের আবেগঘন চিঠি

ঢাকা: নাম ফারহান কাইফ অহন। বয়স মাত্র নয় বছর। বাড়ি খুলনায়। মরণব্যাধী থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত শিশুটি। চিকিৎসকরা সময় বেঁধে দিয়েছেন বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্টের জন্য। প্রয়োজন ৩৫ লাখ টাকা। নিজের চিকিৎসা খরচ যোগাতে ফেসবুকে ইভেন্ট খুলেছে সে। এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে লিখেছে আবেগঘন একটা চিঠি- সেটি হুবহু তুলে দেয়া হলো-

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সালাম নিবেন। ভালবাসা
রইল।
আপনি কেমন আছেন? আমি জানি আপনি ব্যস্ত,
তাই সংক্ষেপে আপনাকে আমার কথাটা বলে ফেলি।
আমাদের স্যাটেলাইট, সাবমেরিন,পারমানবিক
কেন্দ্র, পদ্মা সেতুর মত হাজার কোটি,
শত কোটি টাকার প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হতে
দেখে, আমার সাহস করে আপনাকে বলতে ইচ্ছে হয়।
প্রধানমন্ত্রী একটা ভাল মানের বোনম্যারো
ট্রান্সপ্ল্যান্ট সেন্টার বাংলাদেশে বানিয়ে ফেলুন
না।
আপনি হয়ত জানেন না, আমার বেঁচে থাকার জন্য
বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট এর বিকল্প নেই।
প্রতিবছর আমার মত দেশের কত শত মানুষের
বোনম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্টের প্রয়োজন হয়।
কিন্তু আমাদের দেশে ভাল মানের বোনম্যারো
ট্রান্সপ্ল্যান্টের সুবিধা নেই।
যাদের সুযোগ হয়, আর্থিক অবস্থা ভাল তারা
ভারতে যায়।
আমার অবশ্য ভাগ্য ভাল।
আমি ভাগ্যবান সারাদেশ থেকে একদল মানুষ আমায়
ভালবেসে আমার চিকিৎসার জন্য টাকা সংগ্রহ
করছে। হয়ত আগামী কয়েক মাসের মধ্যে আমার
টাকা সংগ্রহ হয়ে যাবে। আমি চিকিৎসা করতে ভারত
যাবো।
কিন্তু যারা আমার মত ভাগ্যবান নয়, তাদের মৃত্যুর
বিকল্প নেই। হয়ত আপনার কলমের এক খোঁচাতে
হয়ে যাবে একটা ভাল মানের বোনম্যারো
ট্রান্সপ্ল্যান্ট সেন্টার।
বেঁচে যাবে আমার মত হাজার হাজার অহন।
আপনাকে বলতে ভুলে গেছি আমার এক চিঠির
প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী খুলনায় রক্তের
রেডসেল আলাদা করার নষ্ট মেশিনটি ঠিক করে
দিয়েছেন।
এখন আমার মত শিশুদের আর কষ্ট করতে হয় না।
আগে কত যে কষ্ট হত আমার আর আমার মায়ের।
প্রতি মাসে যশোর কিংবা ঢাকায় যেতে হত। এরপর
আমার সাহস আরো বেড়ে গেছে।
মায়ের সাথে কথা বলে, সাহস করে আপনাকে চিঠিটা
লিখে ফেললাম।
আমি অহন বাঁচতে চাই, ডাক্তার যতই ভয় দেখাক।
আমার নাকি মাস কয়েক সময় আছে,
বড়জোর এ বছর। কিন্ত আমি স্বপ্ন দেখি,
স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধনের সময় আমি
আপনার সাথে থাকব। খুলনা থেকে তখন আর
সারারাত জেগে ঢাকায় আসতে হবে না ডাক্তার
দেখাতে।
প্রধানমন্ত্রী বোনম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট সেন্টারটা
খুলে ফেলেন না। প্লিজ। আপনি তো চাইলেই পারেন।
বাবা বলেছিল, সবাই নাকি ভেবেছিল পদ্মাসেতু হবে
না। অসম্ভব, বিদেশী সাহায্য এত বড় সেতু হবেই না।
আমি বাবাকে বলি, বাবা তোমাকে আমি পদ্মা সেতু
দিয়ে ঢাকায় নিয়ে যাব।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কত টাকা দরকার একটা
বোনম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্টের সেন্টার বানাতে?
আমার চিকিৎসার পর যত টাকা থাকবে আমি তা
দিয়ে দিব। আমিও দেশবাসী থেকে টাকা সংগ্রহ করে
দিব। হাজার হাজার ভাইয়া-আপুরা আমার সাথে
আছে, প্লিজ প্রধানমন্ত্রী একটা উদ্যোগ নিন না।
আমাদের তো কোন বিকল্প নেই বেঁচে থাকার
বোনম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট ছাড়া।
বলতে ভুলে গেছি আমার নাম অহন। থাকি খুলনায়।
ক্লাস ফোরে পড়ি। আপনি ভাল থাকুন।
সুস্থ থাকুন। ভালবাসা রইল আপনার প্রতি।
ইতি-
অহন, খুলনা।

সোনালীনিউজ/এন

Wordbridge School
Link copied!