• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০
যেকোনো সময় ডাক

প্রধানমন্ত্রীর নজরদারিতে শামীম-আইভী


নিজস্ব ও জেলা প্রতিনিধি ডিসেম্বর ৩, ২০১৬, ০৯:৫০ পিএম
প্রধানমন্ত্রীর নজরদারিতে শামীম-আইভী

ঢাকা: নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে প্রধান দুই প্রতিপক্ষ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সেলিনা হায়াৎ আইভী ও নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য এবং দলীয় সংসদ সদস্য শামীম ওসমান। দুজনই প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার কড়া নজরদারিতে রয়েছেন।

গত ২২ নভেম্বর রাতে গণভবনে ডাক পড়ে দুই নেতার। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে এক সঙ্গে কাজ করতে দুজনকে মিলিয়ে দেন দলীয় প্রধান। পরে উভয়ের মধ্যে থাকা মতবিরোধ ভুলে যেতে বলেন। তবে তাদের বিরোধ কতখানি নিষ্পত্তি হয়েছে তা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সূত্রমতে, নারায়ণগঞ্জে দলের অভ্যন্তরীণ টালমাটাল অবস্থা এখনো বিরাজমান থাকায় নির্বাচন সমন্বয়ের দায়িত্বে থাকা এক কেন্দ্রীয় নেতার কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শেখ হাসিনা। 

আওয়ামী লীগের কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা ও নাসিক নির্বাচনে সমন্বয়ের দায়িত্বে থাকা কয়েকজন নেতা এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেছেন, নাসিক নির্বাচনকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেশ গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছেন। ফলে তার দেয়া নির্দেশ কে কতখানি মানছেন, আর মানছেন না তার ওপর বিশেষ নজর রাখছেন তিনি নিজেই। 

নীতি-নির্ধারণী সূত্রমতে, দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা সিটি নির্বাচনে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে আইভী-শামীম দুজনকেই বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর দেয়া নির্দেশনার ব্যত্যয় ঘটলে খুব শিগগিরই গণভবনে আবারও আসতে হবে তাদের। তখন প্রধানমন্ত্রীর কড়া কথাও শুনতে হতে পারে।  

সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জ নির্বাচন নিয়ে যথেষ্ট ‘ফিলিংস’ রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার’। তিনি বলেন, ‘এটা নৌকা প্রতীকের নির্বাচন। এটা কোনো তামাশা নয়। তাই দলের সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনার যা করা দরকার সবই করছেন’। কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘এই নির্বাচনকে কেউ তামাশা হিসেবে নিলে পরিণতিও তাকে ভোগ করতে হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রতিদিনই খবর নিচ্ছেন নির্বাচন পরিস্থিতির’। তিনি বলেন, ‘আমার ব্যক্তিগত অনুভূতি আইভী জনপ্রিয়, আশা করি সে-ই জিতবে, মেয়র হবে।’     

নাসিক নির্বাচন দেখভালের দায়িত্বে থাকা কয়েকজন নেতা জানান, নাসিক নির্বাচন নিয়ে আইভী-শামীমসহ স্থানীয় নেতাদের তৎপরতার খোঁজ-খবর বিভিন্ন সংস্থা ও দলের সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে প্রায় প্রতিদিনই অবহিত হচ্ছেন শেখ হাসিনা। নারায়ণগঞ্জ নির্বাচন নিয়ে দলের অভ্যন্তরের বিরোধ শেষ পর্যন্ত যে জিইয়ে রাখবে তারই পরিণতি ভয়াবহ হবে। শেখ হাসিনার এই কঠোর বার্তা ও অবস্থান সংশ্লিষ্টদের জানিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী চান দ্রুত বিরোধ নিষ্পত্তি করে সবাই যাতে নির্বাচনী কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ে।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা জানান, নারায়ণগঞ্জ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলেও সব কিছু ছাপিয়ে আলোচনায় এখনো আইভী-শামীমই রয়েছেন। ভোটের মাঠের অবস্থা আইভীর অনুকূলে থাকলেও দলের অভ্যন্তরে পরস্পরের বিরোধিতা শেষ পর্যন্ত কোন দিকে মোড় নেয় সেই দুশ্চিন্তা ভর করে আছে দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে। ক্ষমতাসীন দলের বেশ কয়েকজন নেতা বলেন, নারায়ণগঞ্জে নৌকাকে বিজয়ী করতে আওয়ামী লীগ কর্মীরা আসলে কী কাজ করছেন শেখ হাসিনা তা পর্যবেক্ষণ করছেন। 

সূত্র জানায়, নারায়ণগঞ্জের মেয়র পদপ্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগ আইভীকে মনোনয়ন দেয়। কিন্তু শামীম ওসমান আইভীকে মনোনয়ন না দেয়ার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালান। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এই দুজনকে গণভবনে ডেকে তাদের বিরোধ মীমাংসা করে দেন এবং আইভীর পক্ষেই শামীম ওসমানকে কাজ করার নির্দেশ দেন। একসঙ্গে কাজ করে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে যাতে নৌকার প্রার্থী বিজয়ী হন তা নিশ্চিত করতে আইভী-শামীম দুজনকেই নির্দেশ দেন তিনি। তারপরেও দুইজনের একে অপরের বিরুদ্ধে কাদা ছোড়াছুড়ির ঘটনা ও অভিযোগ-পাল্টাঅভিযোগের কথা শুনে ভীষণ বিরক্ত হয়েছেন শেখ হাসিনা।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে ভীষণ গুরুত্বসহকারে নিয়েছেন’। তিনি বলেন, ‘সব সময়ই প্রধানমন্ত্রী খোঁজ-খবর রাখছেন এ নির্বাচন নিয়ে’। হানিফ বলেন, ‘নেত্রী চান এই নির্বাচনে বিরোধ-বিভেদ ভুলে সবাই যেন ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে এবং নৌকার প্রার্থী বিজয়ী হয়। তাই স্থানীয় নেতাকর্মীদের ঐক্য এই মুহূর্তে অত্যন্ত জরুরি।’

সোনালীনিউজ/এমএন

Wordbridge School
Link copied!