• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য সংবিধান পরিপন্থী : দুদু


নিজস্ব প্রতিবেদক এপ্রিল ১২, ২০১৮, ০৩:৪৮ পিএম
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য সংবিধান পরিপন্থী : দুদু

ফাইল ছবি

ঢাকা: কোটা সংস্কার নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য সংবিধানের পরিপন্থী এবং তিনি সংবিধানকে লঙ্ঘন করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান ও কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান দুদু।

বৃহস্পতিবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনী মিলনায়তনে নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরাম আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

আলোচনা বিএনপির এই ভাইস-চেয়ারম্যান বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী এমন একটা অবস্থানে তিনি শুদ্ধ প্রধানমন্ত্রী নন অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রীর অবস্থানে তিনি এই ক্ষমতাকে অপব্যবহার করছেন। কোটা সংস্কার নিয়ে বুধবার জাতীয় সংসদে তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন তা সংবিধানের পরিপন্থী। তিনি সংবিধানকে লংঘন করেছেন।

তিনি আরো বলেন, রাগের বশবর্তী হয়ে প্রধানমন্ত্রী কোন কথা বলতে পারেন না। কিন্তু তিনি রাগ-অনুরাগের বশবর্তী হয়ে এক ধরনের ধমক দিয়েছেন। আমি সাবেক ছাত্রনেতা হিসেবে এটার তীব্র প্রতিবাদ জানাই।

বিএনপির এই নেতা বলেন, আন্দোলনকারীদেরন কেউ চায়নি কোটা প্রথা বাতিল করা হোক। কিন্তু তারপরও তিনি শেখ হাসিনা আমাদের ছাত্র ভাইদেরকে ধমক দিয়েছেন, তিনি ছাত্রদেরকে ছোট করেছেন।

শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, কোটা সংস্কারের জন্য আন্দোলনের নামে যে ঘটনা আপনি (প্রধানমন্ত্রী) টের পেয়েছেন তার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাই। এখন আপনার উচিৎ হচ্ছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য নির্দলীয় সরকারের দাবি মেনে নেয়া।

এ সময় তিনি প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে আরও বলেন, মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার জন্য একটি উদ্যোগ নিন। এই বক্তব্যটা দিন জাতীয় সংসদে যদি বলেন, তাহলে জনগণ জাতি আপনাকে ধন্যবাদ জানাবে এবং ছাত্রদের ওপরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশের পক্ষ থেকে যে মামলা করা হয়েছে আমি তার প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।

কৃষকদলের এই সাধারণ সম্পাদক অভিযোগ করে বলেন, আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ৭৫ বছর বয়সে কষ্ট দেয়ার জন্যই নির্জন কারাগারে রেখেছে এই অবৈধ সরকার। এমনকি তিনি কারো সাথে কথা বলতে পারেন না, মেডিকেল বোর্ড পর্যন্ত বলেছে তিনি অসুস্থ।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, নেত্রীর মুক্তি এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে আমাদের সবাইকে ছড়িয়ে পড়তে হবে। কারণ দেশের জনগণ আমাদের সাথে আছে।

উল্লেখ্য, গত কয়েকদিন ধরে সরকারি চাকরিতে বিদ্যামান কোটা পদ্ধতি সংস্কার নিয়ে সারা দেশে বিরাট আন্দোলন করছিল চাকরি প্রার্থীরা, তার সঙ্গে বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যোগ দেয়। তাদের বিষয়টি নিয়ে বুধবার (১১ এপ্রিল) বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে কোটা বাতিলের ঘোষণা দেন। এ সময় তাকে কিছুটা উত্তেজিতভাবেই কথা বলতে দেখা গেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে ইউনিভার্সিটিগুলোতে ক্লাস বন্ধ। পড়াশোনা বন্ধ। এরপর আবার ভিসির বাড়ি আক্রমণ। রাস্তাঘাটে যানজট। মানুষের কষ্ট। সাধারণ মানুষের কষ্ট। সাধারণ মানুষ বারবার কষ্ট পাবে কেন? এই বারবার কষ্ট বন্ধ করার জন্য, আর বারবার এই আন্দোলনের ঝামেলা মেটাবার জন্য কোটাপদ্ধতি বাতিল। পরিষ্কার কথা। আমি এটাই মনে করি, সেটা হলো বাতিল।’ 

ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, প্রতিবন্ধীসহ অনগ্রসর শ্রেণির মানুষের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করার ঘোষণা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোটাপদ্ধতিরই দরকার নেই। যারা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, প্রতিবন্ধী, তাদের অন্যভাবে চাকরির ব্যবস্থা করে দিতে পারব। এই আন্দোলন যারা করেছে, যথেষ্ট হয়েছে, এখন তারা ক্লাসে ফিরে যাক।’

আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা হাজী মো. মাসুক মিয়ার সভাপতিত্বে এবং এম জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড আব্দুল মঈন খান, নির্বাহী কমিটির সদস্য ইসমাইল হোসেন বেঙ্গল, সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমতউল্লাহ, এনডিপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মঞ্জুর হোসন ঈশা প্রমুখ।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এআই

Wordbridge School
Link copied!