• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রবাসী আয়ের তিন চতুর্থাংশই ব্যয় হয় গৃহনির্মাণ খাতে


নিজস্ব প্রতিবেদক জুলাই ২৪, ২০১৬, ০৩:৪৭ পিএম
প্রবাসী আয়ের তিন চতুর্থাংশই ব্যয় হয় গৃহনির্মাণ খাতে

প্রবাসী আয়ের চার ভাগের তিন ভাগই ব্যয় হয় বাড়ি ঘর নির্মাণ, সংস্কার, জমি কেনা ও ভোগ্যপণ্য কিনতে। বিদেশ থেকে বিশাল অংকের অর্থ দেশে এলেও শিল্প বা উৎপাদন খাতে খুব একটা বিনিয়োগ হচ্ছে না। সম্প্রতি বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ‘প্রবাস আয়ের বিনিয়োগ সম্পর্কিত জরিপ ২০১৬’ এর প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

জরিপ থেকে প্রাপ্ত ফলাফলে দেখা যায়, ২০১৫ সালে প্রবাসী আয়ের ৭৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ অর্থ বিনিয়োগ হয়েছে বাড়িঘর বা ফ্ল্যাট নির্মাণ ও সংস্কার খাতে। অন্যান্য খাতে ১ থেকে ৭ শতাংশ অর্থ বিনিয়োগ হচ্ছে। প্রবাসী আয় গ্রহণকারী ৫৩ শতাংশ পরিবার এই অর্থ কোথাও বিনিয়োগ করে না।

বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করছে মাত্র ৪৭ দশমিক ২২ শতাংশ প্রবাস আয় গ্রহণকারী পরিবার। এর মধ্যে বরিশাল বিভাগেই বিনিয়োগ করা হয়। এখানে বিনিয়োগের হার সর্বোচ্চ ৬৩ দশমিক ৯ শতাংশ। এর পরের অবস্থানেই রয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগ (৫১ দশমিক ৭৩ শতাংশ) এবং সর্বনিম্ন বিনিয়োগ (৩৮ দশমিক ২০ শতাংশ) রাজশাহী বিভাগে। জানা গেছে, একজন প্রবাসী গড়ে এক বছরে ৩ লাখ ২ হাজার ১৮৪ টাকা দেশে পাঠাচ্ছেন।

প্রবাসীদের প্রেরিত অর্থের মাত্র ২৫ শতাংশ অর্থ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ হচ্ছে। আর ৭৫ ভাগ অর্থ ব্যয় হচ্ছে মূলত গৃহ নির্মাণ খাতে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রবাসী আয়ের ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশ চলে যাচ্ছে বিদেশ গমণের জন্য নেওয়া ঋণ পরিশোধে। প্রায় ৯ ভাগ অর্থ ব্যবহৃত হচ্ছে জমি কিনতে। প্রবাস আয় গ্রহণকারী ৪০ দশমিক ৭১ শতাংশ পরিবার সঞ্চয় করছে। ৫৯ দশমিক ২৯ শতাংশের কোনো সঞ্চয় নেই।

প্রায় ৬০ শতাংশ পরিবারের বিনিয়োগের আকার গড়ে ২০ হাজার টাকার নিচে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ব্যাংকের মাধ্যমে বেশিরভাগ রেমিট্যান্স এলেও (৫০ দশমিক ৭২ শতাংশ), জনপ্রিয় হয়েছে মোবাইল ব্যাংকিং বা বিকাশ (১৪ দশমিক ৩১ শতাংশ), ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন বা মানিগ্রাম (১২ দশমিক ৬৬ শতাংশ)। এরপরও প্রায় সাড়ে পাঁচ ভাগ প্রবাসীদের অর্থ আসছে হুন্ডির মাধ্যমে। ২০১৫ সালে প্রাপ্ত প্রবাস আয় থেকে খানাপ্রতি গড় বিনিয়োগের পরিমাণ ৭৬ হাজার ৫৪৬ টাকা। 

মোট প্রবাস আয়ের ২৫ দশমিক ৩৩ ভাগ বিদেশী আয় গ্রহণকারী পরিবার কর্তৃক বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করা হয়েছে। মোট বিনিয়োগের সিংহভাগ (৭৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ) নির্মাণ খাতে বিনিয়োগ হয়েছে। প্রায় ৯ শতাংশ ব্যয় হয় জমি কিনতে। জমি কেনার হার রংপুর অঞ্চলে বেশি। সঞ্চয় হচ্ছে ৪০ দশমিক ৭১ ভাগ অর্থ। সঞ্চয়ে এগিয়ে খুলনা বিভাগ, সিলেট ও রাজশাহী। 

সবচেয়ে কম সঞ্চয় করার হার রংপুরে। বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসী কর্মীদের বেশিরভাগের বয়স ৩৫ বছরের নিচে। ৬২ ভাগই শ্রমিক। ৩৭ ভাগের শিক্ষার মান প্রাথমিক পর্যায়ে। উচ্চশিক্ষিত রয়েছে মাত্র ৮ ভাগ প্রবাসী রেমিট্যান্স প্রেরণকারীদের। এদিকে দেশের মোট শ্রমশক্তিতে প্রতিবছর গড়ে প্রায় অতিরিক্ত দুই লাখ যুবশক্তি যোগ হচ্ছে। এ যুবশক্তির একটি উল্লেখযোগ্য অংশ বিদেশে যাচ্ছে এবং প্রচুর রেমিট্যান্স বাংলাদেশে প্রেরণ করছেন।

বিশ্বব্যাংক সম্প্রতি বৈদেশিক আয়কে বাংলাদেশের উন্নয়নের দুটি চালিকাশক্তির একটি হিসেবে চিহ্নিত করেছে। তবে প্রবাস আয় থেকে কৃত বিনিয়োগের ওপর এ পর্যন্ত কোনো উল্লেখযোগ্য নীতিনির্ধারণী কাঠামো প্রণীত হয়নি। যার ফলে নীতিনির্ধারকের সুবিধার্থে প্রবাস আয়ের বিনিয়োগ সম্পর্কিত জরিপ-২০১৬ সম্পন্ন হয়েছে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এএম

Wordbridge School
Link copied!