• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রবাসীদের আয়ে ট্যাক্স বসাচ্ছে সৌদি


প্রবাস ডেস্ক আগস্ট ২৩, ২০১৬, ০৫:০৩ পিএম
প্রবাসীদের আয়ে ট্যাক্স বসাচ্ছে সৌদি

সৌদি আরবে প্রবাসী শ্রমিকদের দুঃখের বোঝা আরও ভারী হচ্ছে। কিন্তু একে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন দেশটির বিশেষজ্ঞরা। প্রবাসীদের আয় থেকে ৬ শতাংশ হারে টাকা কেটে নেয়ার প্রস্তাবের ওপর মতামত দিতে গিয়ে তারা বলছেন, এই প্রস্তাব বাস্তবায়ন হলে তা সৌদি আরবের জন্য ভালো ফল বয়ে আনবে।

নিজেদের অর্থনীতির টানাপোড়নে দেশটিতে কর্মরত প্রবাসীদের এই কর বসানোর প্রস্তাব করে দেশটি। এমতাবস্থায়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে সৌদি আরবে পাড়ি জমানো প্রবাসীরা আরব নিউজের কাছে জানিয়েছেন, রেমিটেন্স পাঠানোর ওপর প্রস্তাবিত এই ৬ শতাংশ কর সৌদি আরবে তাদের ভবিষ্যতকে আরও অন্ধকারে ঠেলে দিচ্ছে। এ নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন। তারা এ প্রস্তাব তুলে নেয়ার অনুরোধ করেন।

সৌদি সরকারের হিসাব অনুযায়ী, দেশটিতে মোট প্রবাসী রয়েছে প্রায় ৯০ লাখ। এর মধ্যে প্রায় ১২ লাখ রয়েছে বাংলাদেশি। ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, নাইজেরিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশ থেকে আরও শ্রমিক নেওয়ার আগ্রহ রয়েছে সৌদির।

সৌদি চেম্বার কাউন্সিলের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল আমৌদি বলছেন, কিছু শ্রমিক আইন লংঘন করে। রেমিটেন্সের ওপর আয়কর ও ফি বাস্তবায়ন হলে তা নিয়ন্ত্রণে আসবে। এই প্রক্রিয়ায় সব প্রবাসীকে ব্যাংক হিসাব খোলার ওপরও গুরুত্ব দেয়া হবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই নীতি বাস্তবায়নের ফলে সৌদিকরণ চূড়ান্ত করা আরও সহজ হবে। স্থানীয়দের বেতন ও অন্যান্য সুবিধা বাড়ানো সম্ভব হবে।

আল বাহা চেম্বার সদস্য আলি আল জাহরানি জানান, বিদেশি শ্রমিকরা প্রতিবছর কোটি কোটি ডলার অর্থ অবৈধভাবে দেশে পাঠাচ্ছে। ট্যাক্স আরোপের মাধ্যমে প্রবাসীদের অতিরিক্ত রেমিট্যান্স নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। এই অর্থ এখন দেশের কাজে ব্যয় করা যাবে।

প্রবাসীদের আয়ের ওপর ৬ শতাংশ হারে ট্যাক্স বসানো মানে- বাংলাদেশি প্রবাসীদেরকেও রেমিটেন্স থেকে সে দেশের সরকারকে ৬ শতাংশ টাকা দিতে হবে। অর্থাৎ বাংলাদেশিরা সৌদি থেকে যে রেমিটেন্স পাঠায় তা ৬ শতাংশ কমে যাবে।

পাকিস্তান থেকে সৌদিতে কাজ করতে আসা গাফফার খান বলেন, সৌদিতে আমরা যে আয় করি, তার একটি বড় অংশ এখানে ব্যয় করে ফেলি। সবশেষে, আয়ের ছোট্ট একটি অংশ বাড়িতে পাঠাই। এমন অবস্থায় সৌদি সরকার আমাদের আয়ের ওপর অতিরিক্ত ৬ শতাংশ কর আরোপ করলে আমাদের কাজের ওপর চাপ পড়বে। আমাদেরকে ওই ৬ শতাংশ টাকা কাজ করেই তুলতে হবে। যেটা আরও বেশি কষ্টসাধ্য হবে।

ফিলিপাইন থেকে আসা ননি সাগাদাল বলেন, সৌদি আরবের এই প্রস্তাব আমাদের শঙ্কায় ফেলে দিয়েছে। একই সুরে কথা বলেন আরও বেশ কয়েকটি দেশ থেকে সৌদিতে আসা প্রবাসীরা।

সৌদি আরব মূলত তেলের দেশ। দেশটির ৭০ শতাংশ আয় আসে তেল থেকে। কিন্তু গত দেড় বছরে আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যটিদের দাম প্রায় ৭০ শতাংশ নেমে যাওয়ায় ধরা খায় এর অর্থনীতি। এক বছরে দেশটির ঘাটতি বাজেট দাঁড়ায় প্রায় ১ হাজার কোটি ডলার। বিশেষজ্ঞরা তো জানিয়েই দিয়েছিলেন- আগামী ৫ বছরে সৌদি আরব দেউলিয়া হয়ে যাবে। এরপরই সৌদি সরকার অর্থনীতি নিয়ে নড়েচড়ে বসে। সম্প্রতি তেলের ওপর নির্ভরতা কমাতে দেশটি ‘ভিশন ২০৩০’ প্রকল্প ঘোষণা করে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআরসি

Wordbridge School
Link copied!