• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

প্রভিশন রাখতে ব্যর্থ ১২ ব্যাংক


নিজস্ব প্রতিবেদক জুন ৫, ২০১৮, ০২:১০ পিএম
প্রভিশন রাখতে ব্যর্থ ১২ ব্যাংক

ঢাকা : নির্ধারিত প্রভিশন (নিরাপত্তা সঞ্চিতি) রাখতে ব্যর্থ হয়েছে ১২ ব্যাংক। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ৪টি রাষ্ট্রায়ত্ত আর ৮টি বেসরকারি খাতের ব্যাংক। এই ব্যাংকগুলোর কারণে সার্বিকভাবে ব্যাংকিং খাতে প্রভিশন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৯৫৮ কোটি টাকা।  

কেন্দ্রীয় ব্যাংক আমানতকারীদের সুরক্ষা দিতে ঋণের শ্রেণিমান বিবেচনা করে ব্যাংকগুলোকে নির্ধারিত হারে প্রভিশন রাখতে নির্দেশ দিয়েছে। সাধারণ ঋণের বিপরীতে দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশ পর্যন্ত প্রভিশন রাখতে হয়। নিম্নমান ঋণের ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ, সন্দেহজনক ঋণে ৫০ শতাংশ এবং মন্দ ঋণে শতভাগ প্রভিশন রাখতে হয়। ব্যাংকগুলোর অর্জিত মুনাফা থেকে এ অর্থ রাখতে হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে। এতে দেখা গেছে, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিক (জানুয়ারি-মার্চ) শেষে ব্যাংকিং খাতে প্রয়োজনীয় প্রভিশন দাঁড়ায় ৪৯ হাজার ২৩৯ কোটি টাকা। বিপরীতে ব্যাংকগুলো রেখেছে ৪১ হাজার ২৮০ কোটি টাকা।  নির্ধারিত প্রভিশন রাখতে ব্যর্থ হয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংক। ব্যাংকটির প্রভিশন রাখার কথা ৪ হাজার ১০৩ কোটি টাকা। কিন্তু প্রভিশন রেখেছে ৩ হাজার ৯৪ কোটি টাকা। ঘাটতি ১ হাজার ৯ কোটি টাকা। সোনালী ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি ৩ হাজার ৯৪৮ কোটি টাকা। মার্চ শেষে ব্যাংকটির প্রভিশন রাখার কথা ছিল ৮ হাজার ১৫৪ কোটি টাকা, রেখেছে ৪ হাজার ২০৫ কোটি টাকা।  

রূপালী ব্যাংক ২ হাজার ৫৬৪ কোটি টাকা প্রয়োজনীয় প্রভিশনের বিপরীতে রেখেছে ১ হাজার ২৯৬ কোটি টাকা। ঘাটতি ১ হাজার ২৬৮ কোটি টাকা।  বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব বলছে, রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রভিশন দরকার সার্বিকভাবে ২৪ হাজার ৩০৭ কোটি টাকা। এই ব্যাংকগুলো প্রভিশন রেখেছে ১৪ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা। অর্থাৎ রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রভিশন ঘাটতি ৯ হাজার ৫২৭ কোটি টাকা।

বেসরকারি খাতের এবি ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি ১৫৪ কোটি টাকা। ব্যাংকটি তার প্রয়োজনীয় ৯১৩ কোটি টাকার বিপরীতে রেখেছে ৭৫৮ কোটি টাকা। বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি ১৯৯ কোটি টাকা। ব্যাংকটি রেখেছে মাত্র ৮৫ কোটি টাকা। অথচ দরকার ২৮৪ কোটি টাকা।  বেসরকারি খাতের আইএফআইসি ব্যাংকও প্রভিশন ঘাটতিতে পড়েছে। ঘাটতি ২৯ কোটি টাকা। দরকার ৫৯১ কোটি টাকা। বিপরীতে রেখেছে ৫৬২ কোটি টাকা।  

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি ১১৪ কোটি টাকা। ব্যাংকটির দরকার ৫৭৬ কোটি টাকা। রেখেছে ৪৬২ কোটি টাকা।  নতুন প্রজন্মের মধুমতি ব্যাংক প্রভিশন ঘাটতিতে রয়েছে ১৪০ কোটি টাকা। ব্যাংকটি ১ হাজার ২০৯ কোটি টাকার বিপরীতে রেখেছে ১ হাজার ৬৯ কোটি টাকা। প্রিমিয়ার ব্যাংকের প্রভিশন দরকার ৩৭৮ কোটি টাকা। ব্যাংকটি রেখেছে ২৫৮ কোটি টাকা। ঘাটতি ১১৯ কোটি টাকা। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রভিশন ঘাটতি সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের। যার পরিমাণ ২৩৬ কোটি টাকা। ব্যাংকটির দরকার ৮৩৩ কোটি টাকা। বিপরীতে রেখেছে ৫৯৬ কোটি টাকা।  

আর স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি ৬৭ কোটি টাকা। ব্যাংকটি রেখেছে ৩৬৪ কোটি টাকা। দরকার ছিল ৪৩১ কোটি টাকা।  ২০১৭ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকিং খাতে প্রভিশন ঘাটতি (নিরাপত্তা সঞ্চিতি) দাঁড়ায় ৯ হাজার ৩৭৫ কোটি টাকা। ওই সময় ৯ ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি ছিল।  

তখন বেসরকারি খাতের ঢাকা ব্যাংক ও রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব) নতুন করে ঘাটতিতে আসে। ডিসেম্বর শেষে সোনালী ব্যাংকের ঘাটতি ছিল ৩ হাজার ৬৮৬ কোটি টাকা। রূপালী ব্যাংকের ঘাটতি ছিল ১ হাজার ৮১ কোটি টাকা। বেসিক ব্যাংকের ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৪৯৫ কোটি টাকা। রাকাবের ঘাটতি ছিল ১৩৮ কোটি টাকা। ঢাকা ব্যাংকের ঘাটতি দাঁড়ায় ২৬৭ কোটি টাকা। স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক ২৭৫ কোটি টাকা, ন্যাশনাল ব্যাংক ১৬০ কোটি টাকা ঘাটতিতে পড়েছে। বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের ঘাটতি ১৯৫ কোটি টাকা। ৭৯ কোটি টাকা প্রভিশন রাখতে পারেনি প্রিমিয়ার ব্যাংক।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!