• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

প্রস্তাবনা পেশ করে স্বস্তিতে বিএনপি


মেহেদী হাসান নভেম্বর ২০, ২০১৬, ০৪:৩৪ পিএম
প্রস্তাবনা পেশ করে স্বস্তিতে বিএনপি

ঢাকা: নির্বাচন কমিশন (ইসি) পুনর্গঠনে রূপরেখা তুলে ধরে সরকারের কাছে সুনির্দিষ্ট ২০ দফা প্রস্তাব দিয়েছে দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি। এ ব্যাপারে সরকারের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া আর গণমাধ্যমে আলোচনার জোর বাতাসে স্তস্তি বোধ করছেন দলের শীর্ষ নেতারা।

গত দশ বছর ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা আর সরকারের দমন-পীড়নে ঝিমিয়ে পড়া নেতাকর্মীরা এতে উজ্জীবিত হয়ে উঠবে বলে মনে করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে আগামী জাতীয় নির্বাচনে ‘নিরপেক্ষ সরকার’ ফরমুলার ব্যাপারেও দরকষাকষির একটা পূর্বশর্ত হিসেবে কাজ করবে এসব প্রস্তাবনা।

সব রাজনৈতিক দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে ইসি পুনর্গঠনের ২০ প্রস্তাব গত ১৮ নভেম্বর গণমাধ্যম ও জাতির সামনে তুলে ধরেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। প্রস্তাবনার অনুকূলে আলোচনার সুযোগ তৈরি হয়েছে বলে দাবি করে পরদিন ১৯ নভেম্বর এক টুইট বার্তায় চেয়ারপারসন বলেন, ‘নিরপেক্ষ ইসি গঠনে আমি বিএনপির প্রস্তাবনা তুলে ধরেছি। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চাইলে ক্ষমতাসীনরা এর ভিত্তিতে আলোচনার সুযোগ নিতে পারে।’

এই টুইট বার্তার মাধ্যমে বিএনপি প্রধান সরকারকে পরোক্ষভাবে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন বলে মনে করছেন শীর্ষ নেতারা। আর এর সূত্র ধরেই সরকারি দল আওয়ামী লীগ তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়াও জানিয়েছে। শুধু তাই নয়, রাজনৈতিক মহলে নানা ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া দেখা দিচ্ছে। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষও এ আলোচনায় অংশ নিচ্ছে। প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইনগুলো এ ব্যাপারে মতামত যাচাই করছে।

মূলত, বিএনপির এসব প্রস্তাবনা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার যে প্রত্যাখ্যান করবে তা নিশ্চিত জেনেই এ আলোচনার ক্ষেত্র তৈরি করতে চেয়েছে বিএনপি। তাদের সেই উদ্দেশ্য সফল হয়েছে বলে মনে করছে দলের নেতারা। তাদের কথা, দেশের অন্যতম বৃহৎ জনপ্রিয় দলের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান সাধারণ মানুষ ভালোভাবে নেবে না। এর মধ্যেই রাজনৈতিক সার্থকতা খুঁজে পাচ্ছে বিএনপি।

এদিকে, বিএনপির একাধিক নেতার বক্তব্য, ইসি পুনর্গঠন নিয়ে চেয়ারপারসনের প্রস্তাব আওয়ামী লীগ নাকচ করলেও আমরা চাই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা অব্যাহত থাকুক। এতে সরকার কিছুটা হলেও চাপে থাকবে বলে মনে করছেন তারা। বিশেষ করে সুশীল ও নাগরিক সমাজের মধ্যে এটা নিয়ে যে ইতোমধ্যে নানা আলোচনা যুক্তিতর্ক তোলা হচ্ছে এটা ইতিবাচক হিসেবে দেখা হচ্ছে। আর এ প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখার জন্য দলীয় ভাবে বিশিষ্টজনদের সঙ্গে প্রস্তাবনা নিয়ে মতবিনিময়, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের অবহিত করা, জনমত সৃষ্টির জন্য জেলা  পর্যায়ে সভা সেমিনার করার পরিকল্পনা করছে দলটি। তাছাড়া বিএনপি প্রধানের প্রস্তাবনাগুলো প্রয়োজনে রাষ্ট্রপতির কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে দেয়ারও পরিকল্পনা করছে দলটি।

শীর্ষ নেতারা ভাবছেন, ইসি গঠনের আগ পর্যন্ত প্রস্তাবনা নিয়ে আলোচনা অব্যাহত থাকলে সরকার এক ধরনের চাপে থাকবে। এরপরেও যদি কাঙ্ক্ষিত ইসি গঠন না হয় তাহলে আন্দোলনে যাওয়া কিংবা রাজনৈতিক মাঠে কথা বলার সুযোগ থাকবে। এব্যাপারে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গণমাধ্যমকে জানান, রাষ্ট্রপতির জন্যই তারা সবকিছু বলেছেন। যে প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে সেটা ভালো মনে হলে এর ভিত্তিতেই সবকিছু হতে পারে।

গেল ১৮ নভেম্বর ইসি পুনর্গঠনে রূপরেখা তুলে ধরে বিএনপি যে ২০ দফা প্রস্তাবনা দিয়েছে তার মধ্যে সাতটিই হচ্ছে নির্বাচন কমিশন গঠন আর বাকি ১৩টি ইসিকে শক্তিশালী করার বিষয়ে।

সোনালীনিউজ/এমএন

Wordbridge School
Link copied!