• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
আদালতে স্বীকারোক্তি

প্রেম করতে না চাওয়ায় খাদিজাকে কোপায় বদরুল


সিলেট প্রতিনিধি অক্টোবর ৫, ২০১৬, ০৬:৪১ পিএম
প্রেম করতে না চাওয়ায় খাদিজাকে কোপায় বদরুল

সিলেট: প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করাতেই সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রী খাদিজা আক্তার নার্গিসকে প্রকাশ্যে চাপাতি দিয়ে কুপিয়েছেন ছাত্রলীগ নেতা বদরুল আলম। বুধবার (৫ অক্টোবর) দুপুরে সিলেটের অতিরিক্ত মহানগর মুখ্য হাকিম শারাবান তহুরার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন বদরুল। এর আগে খাদিজাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় তাকে আদালতে হাজির করা হয়।

বেলা আড়াইটা থেকে বিকেল সোয়া চারটা পর্যন্ত দেয়া জবানবন্দিতে বদরুল আদালতকে জানান, খাদিজার সঙ্গে তার দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। খাদিজাদের বাড়িতে লজিং থাকাকালে এ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি জানজানি হওয়ার পর খাদিজার পরিবার তা মেনে নিতে পারেনি। বদরুলকে তাদের বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়।

বদরুল আরো জানান, পরবর্তী সময়ে পারিবারিক চাপে খাদিজা তাদের সম্পর্কের কথা অস্বীকার করে। বার বার তাকে সম্পর্ক রাখার জন্য চাপ দিলেও সে পাত্তা দেয়নি। গত সোমবার পরীক্ষার খবর পেয়ে বদরুল খাদিজার সঙ্গে দেখা করতে এমসি কলেজে যান। সেখানে গিয়ে খাদিজার সঙ্গে কথা বলে বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু খাদিজা তাকে পাত্তা না দিয়ে উল্টো তার সঙ্গে রূঢ় আচরণ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বদরুলের সঙ্গে থাকা চাপাতি দিয়ে তিনি খাদিজাকে কোপান। জবানবন্দি শেষে আদালত বদরুলকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

আসামি বদরুল আলম (২৬) সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসম্পাদক ও ছাতক উপজেলার মুনিরজ্ঞাতি গ্রামের সাইদুর রহমানের ছেলে। খাদিজা আক্তার নার্গিস (২৩) সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ও সিলেট সদর উপজেলার জালালাবাদ আউশা গ্রামের সৌদি প্রবাসী মাসুক মিয়ার মেয়ে।

গত সোমবার (৩ অক্টোবর) বিকেলে এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে খাদিজার উপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ নেতা বদরুল আলম। এসময় তিনি চাপাতি দিয়ে খাদিজার শরীরের বিভিন্ন স্থানে উপর্যুপুরি কোপাতে থাকেন। এতে খাদিজা মাথা ও তার পায়ে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার মাথায় অস্ত্রোপচার করে সেলাই দেয়া হয়। পরে তার অবস্থার অবনতি হলে মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) ভোরে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে। সেখানে আরেক দফা তার মাথায় অস্ত্রোপচার করা হয়। বর্তমানে তিনি হাসপাতালে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। তার অবস্থা এখনো আশঙ্কাজনক।

এদিকে ঘটনার সময় হামলাকারী বদরুলকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে স্থানীয় জনতা। বুধবার হাসপাতাল থেকে চিকিৎসকের ছাড়পত্র পান বদরুল। পরে কড়া পুলিশি প্রহরায় তাকে ওসমানী হাসপাতাল থেকে শাহপরান থানায় নেয়া হয়। সেখানে পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হন। এরপর তাকে আদালতে হাজির করা হয়।

আদালতে ১৬৪ ধারায় বদরুলের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্ত তদারকের দায়িত্বে থাকা সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (দক্ষিণ) জেদান আল মুসা। তিনি আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান, ‌‘বদরুল সবকিছু স্বীকার করে নিয়েছেন। দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে আমরা এ মামলার অভিযোগপত্র আগামী ১৫ দিনের মধ্যে দিতে পারব।’

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইচএম

Wordbridge School
Link copied!