• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

প্রেমের বিয়ে টেকে না কেন?


লাইফস্টাইল ডেস্ক ডিসেম্বর ৬, ২০১৭, ০৩:০১ পিএম
প্রেমের বিয়ে টেকে না কেন?

ঢাকা : বিয়ের আগে পরে ‘সেটেল ম্যারেজ’ আর ‘লাভ ম্যারেজ’-এই দুটি গুচ্ছ শব্দের সঙ্গে কমবেশি সবাই পরিচিত। সবার বিয়েই এই দুই উপায়ের কোনো না কোনোটির প্রভাব রয়েছে। ‘সেটেল ম্যারেজ’ আর ‘লাভ ম্যারেজ’ নিয়ে প্রচলিত নানা মিথ শোনা যায়।

কেউ বলেন, ‘সেটেল ম্যারেজ’ ভালো। আবার কারো কাছে ‘লাভ ম্যারেজ’-ই সেরা! অনেকে বলে থাকেন, প্রেমের বিয়েতে জীবনসঙ্গীকে খুব কাছ থেকে দেখা এবং জানাশোনার সুযোগ মেলে।

আর পারিবারিক বিয়েতে সঙ্গীকে আগে থেকে জানা তো দূরের কথা কখনও কখনও চোখের দেখাটাও হয় না। তারপরও প্রেমের বিয়ের চেয়ে পারিবারিক বিয়েটাই বেশি টিকে থাকে। এ নিয়ে যগ যুগ ধরে বিতর্ক ছিল, আছে, থাকবে।

সম্প্রতি বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, প্রেম করে বিয়ে করলে সেই সম্পর্ক বেশিদিন টিকে না। এর চেয়ে তুলনামূলকভাবে পরিবার থেকে দেখাশোনা করে বিয়ে দিলে, সেই সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অভিযোগ একটাই, ও আর আগের মতো নেই, অনেক পাল্টে গেছে। কিন্তু আসল কারণটা কি?

একজন মানুষ কি সারা জীবন এক রকম থাকে? সে প্রেমের সম্পর্ক হোক বা দেখাশোনা করে বিয়ে, মানুষতো পাল্টাতেই পারে। তবে হ্যাঁ, একজন মানুষ যখন অপর একজনকে ভালোবাসে এবং বিয়ে করে, তখন তার কাছে প্রচুর চাহিদা থাকে।

বিয়ের পর যখন মানুষের আসল ঘরোয়া চেহারাটা বেরিয়ে আসে তখন তা আর মেনে নেওয়া যায়না। এ কারণেই আসলে সম্পর্কগুলো বেশি ভাঙে। আবার বিভিন্ন খারাপ অভ্যাসও কিন্তু সম্পর্ক ভাঙার জন্য দায়ী।

কর্তৃত্ব করবেন না : সম্পর্কে একে অপরের ওপর খবরদারি না করাই ভাল। সারাদিনে সবসময় প্রতিটা বিষয়ের খোঁজখবর রাখা কিছু সময় দম বন্ধ করা পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। আপনার সঙ্গী কি করছে, কি খাচ্ছে কিংবা কোথায় যাচ্ছে তা জিজ্ঞেস করা অবশ্যই তার প্রতি চিন্তার প্রকাশ করে।

কিন্তু এই কথাগুলো বিরক্তির পর্যায়ে তখনই পরে যখন আপনি অযথাই তার ওপর খবরদারি করতে যান। এখানে যাবে না, সেখানে কেন গেলে, এর সঙ্গে কথা বলবে না, তার সঙ্গে মিশবে না এই ধরণের অতিরিক্ত অধিকার খাটিয়ে কথা বলা বিরক্তির কারণ হয়ে উঠতে পারে। এ কারণে অনেকের সম্পর্ক ভেঙে যায়।

তুলনা করবেন না : ‘ওর ওই অভ্যাসটা ভাল, ওই কাজটা খুব ভাল করে, ওর ব্যবহার, আচার-আচরণ খুব ভাল’ এসব বলে অকারণে আপনার সঙ্গীকে বিব্রত করবেন না। অন্য কারো সঙ্গে তুলনা করে তার মানসিকতাকে আঘাত করবেন না। এর চেয়ে বরং যে কোনো ভালো কাজের জন্য একে অপরের বাহবা দিন, উৎসাহ দিন।

পুরানো স্মৃতিচারণ নয় : এর আগেও আপনি অন্য কোন সম্পর্কে জড়িত ছিলেন। সেই কথা মনে করে কথায় কথায় পুরানো কথা না তোলাই ভালো। এই অভ্যাসটি সম্পর্কের জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকর। প্রাক্তনের সম্পর্কে ভালো বা খারাপ যাই বলুন না কেন তাতে আপনার বর্তমান সম্পর্কের ওপর তার প্রভাব পড়বে। এতে সঙ্গী এটা ভাবতেই পারেন, আপনার মনে এখনও প্রাক্তন মানুষটিই আছে। সম্পর্কচ্ছেদ হওয়ার জন্য এই সামান্য চিন্তাই যথেষ্ট।

একে-অপরকে সময় দিন : একটি ভালোবাসার সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে হলে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সময়। এক্ষেত্রে কতটা সময় আপনারা একে অপরের সঙ্গে কাটাচ্ছেন এবং একে অপরের কথা কতটা মন দিয়ে শুনছেন তা খুব গুরুত্বপূর্ণ।

যদি আপনি ভালোবাসার মানুষটির কথা না শোনেন কিংবা শুনতে না চান তাহলে তিনি ভাবতে পারেন, আপনি তাকে এড়িয়ে চলছেন। এই ভাবনাটি সম্পর্কের জন্য ভালো নয়। মনে রাখবেন, সঙ্গী যখন নিজেকে আপনার কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে করবেন; সেই হিসাবে তিনিও আপনাকে গুরুত্ব দেবেন।

দোষারোপ করবেন না : সবসময় যে কোনো বিষয়ে একে অপরকে দোষারোপ করবেন না। অপরজন যদি ভুলবশত কোন ভুল করে ফেলে, সেটাকে শুধরে দেওয়ার চেষ্টা করুন। তবে সেটাও খুব সচেতনভাবে। কারণ আপনার একটা ভুল কথা অন্য বার্তা দিতে পারে অপরজনের কাছে।

তুমি এই কাজটি করেছিলে, তুমি ওই কথাটা বলেছিলে এই ধরণের কথাবার্তা আপনার ভালোবাসার মানুষটির কাছে আপনাকে শুধু একজন বিরক্তিকর মানুষ হিসেবে উপস্থাপন করে। সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে এই ধরণের অভ্যাস থেকেও দূরে রাখার বিকল্প নেই।

ভালো-খারাপ মিলিয়েই মানুষ। তাই কোন মানুষের শুধু ভালোটা নয়, একইসঙ্গে তার খারাপটাও গ্রহণ করা উচিত। তবে খারাপ অভ্যাসগুলোকে যদি পরিবর্তন করে নেওয়া যায়, তাহলে সম্পর্কটা টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে তা দুজনকেই সহায়তা করেবে।

সোনালীনিউজ/জেডআরসি/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!