• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ফাঁকা মাঠে আ.লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী আ.লীগ


ফরহাদুজ্জামান ফারুক নভেম্বর ২২, ২০১৬, ০৫:৪৪ পিএম
ফাঁকা মাঠে আ.লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী আ.লীগ

রংপুর: আসন্ন জেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে রংপুরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য দলগুলো নীরব ভূমিকা পালন করছে। নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই স্পষ্ট হচ্ছে জেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি ও জাতীয় পার্টির (জাপা) মাঠ ছেড়ে দেয়ার ব্যাপারটি। আর সরকারে থাকা শরীক ১৪ দলেও নেই কোনো তৎপরতা। এরই মধ্যে জাপা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ জেলা পরিষদ নির্বাচনে তার দল অংশ নিবেন ‘না’ বলে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।

অন্যদিকে, আগামী বছরের ডিসেম্বরের শেষ দিকে রংপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। একারণে জেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে এরশাদের ঘাঁটিখ্যাত রংপুর জাপার বেশিরভাগ নেতাকর্মীর তেমন আগ্রহ নেই। ফলে বিএনপি-জাপা বিহীন নির্বাচনের এই ফাঁকা মাঠে এখন আওয়ামী লীগের গুটি কয়েক নেতাই চালাচ্ছেন প্রচার-প্রচারণা। এখানে আওয়ামী লীগই যেন আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী। যদিও প্রার্থী চূড়ান্তের প্রক্রিয়ায় কেন্দ্রের সিদ্ধান্তই মেনে নেবার কথা বলছেন দলটির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা।

তবে বিএনপি এখনো জেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না নেয়ায় স্থানীয় নেতারা বলছেন, ‘এই নির্বাচন করে কোনা লাভ হবে না। কারণ ভোটাররা সবাই ক্ষমতাসীন দলের’।

নির্বাচন নিয়ে বর্তমান জেলা পরিষদের প্রশাসক ও রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. মমতাজ উদ্দিন আহমেদ জানান, দল যদি তাকে মনোনয়ন দেয়, তাহলে তিনি জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে লড়বেন। তিনি বলেন, ‘জেলা পরিষদের প্রশাসক হিসেবে তার বেশ কিছু উন্নয়নমূলক কাজ বাকি রয়েছে। এসব কাজ সম্পন্ন করতেই তিনি নির্বাচনে লড়তে চান।’

অন্যদিকে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও বর্তমান মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মোছাদ্দেক হোসেন বাবলু জানান, তিনি চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাইবেন। দল তাকে মনোনয়ন দিলে তিনি নির্বাচন করবেন।

একই কথা বলেছেন জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম টুটুলের। তিনিও নির্বাচনে অংশগ্রহণের আশা ব্যক্ত করে বলেন, দল থেকে মনোনয়ন পেলে নির্বাচন করব।

এদিকে আওয়ামী লীগের অনেকেই আবার প্রস্তুতি নিচ্ছেন রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে। জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ও চেম্বার প্রেসিডেন্ট আবুল কাসেম জানান, তিনি জেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন না। আগামী বছর সিটি করপোরেশন নির্বাচন। সেখানেই তিনি অংশগ্রহণ করতে চান।

মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সফিয়ার রহমান সফিও একই কথা জানান। তিনি বলেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব। এ কারণে তার জেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেবার ইচ্ছে নেই।

মহানগর আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক রেজাউল ইসলাম মিলন সিটি নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নেয়ার কারণে জেলা পরিষদ নির্বাচন করবেন না।

অন্যদিকে, জাতীয় পার্টির রংপুর মহানগর কমিটির আহ্বায়ক ও সাবেক সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান মোস্তাফা আগামী বছর সিটি নির্বাচনে লড়বেন বলে জানান। তিনি বলেন, জেলা পরিষদ নির্বাচনে জাপা কোথাও অংশ নেবে না। একারণে এখানে জাপার কোনো তৎপরতা নেই।

জাপার কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম আব্দুর রউফ মানিকও একই কথা জানান। তিনি বলেন, এক বছর পরেই সিটি করপোরেশন নির্বাচন, যদি বেঁচে থাকি তাহলে সিটি করপোরেশন নির্বাচন করব।

এই মুহূর্তে জেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে বিএনপির কেউ চিন্তা করছের না বলে জানান মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সামছুজ্জামান সামু। তিনি বলেন, জেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে কেন্দ্রীয় কমিটি। তবে এখন যে অবস্থা দেখা যায়, তাতে তো ভোটার সবাই ক্ষমতাসীন দলেরই।

জেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে গেল কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীদের পক্ষে প্রচারণা চালাতে দেখা যাচ্ছে। তবে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির এক ডজনের বেশি নেতা আগামী বছরের সিটি করপোরেশন নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। তাই তারা জেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে।

এদিকে নির্বাচন উপলক্ষে রংপুর জেলাকে ১৫টি ওয়ার্ডে বিভক্ত করা হয়েছে। মহানগরীসহ জেলার ৮ উপজেলার ৬ সংসদ সদস্য ছাড়া অন্যান্য জনপ্রতিনিধির ভোটে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবেন। চেয়ারম্যান ছাড়াও জেলা পরিষদ পরিচালনার জন্য ১৫ সদস্য ও পাঁচজন সংরতি মহিলা সদস্য নির্বাচক মণ্ডলীর ভোটে নির্বাচিত হবেন।

সোনালীনিউজ/এমএন

Wordbridge School
Link copied!