• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ফাঁদ পেতেছিল সরকার, আমরা পা দেইনি (ভিডিও)


নিজস্ব প্রতিবেদক মার্চ ১, ২০১৮, ০৮:৩৭ পিএম
ফাঁদ পেতেছিল সরকার, আমরা পা দেইনি (ভিডিও)

ঢাকা: বেগম খালেদা জিয়া যে মাপের নেত্রী তার ভাগ্য আদালত কিংবা একটি নির্বাহী আদেশ বা কোনো কলমের খোঁচায় নির্ধারিত হয় না। সেরকম চেষ্টা ওয়ান ইলাভেনের সময়ও দেখা গেছে, কিন্তু তারা সফল হয়নি। এক সাক্ষাতকারে একথা বলেন বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির সভাপতি ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ। 

তিনি বলেন, যখন খালেদা জিয়ার মতো নেত্রীকে রাজনৈতিক মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়, তখন বুঝতে হবে- বিএনপি বা ২০ দলীয় জোটকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করার জন্য সরকারের সব কার্ড শেষ হয়ে গেছে। সরকার বিএনপিকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়েছে বলেই বেগম জিয়াকে জেলে পাঠিয়েছে। কিন্তু সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে বিএনপিই লাভবান হয়েছে। একইসঙ্গে খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তাও বৃদ্ধি পেয়েছে। 

কিন্তু খালেদা জিয়া যদি নির্বাচনে অযোগ্য হন এবং বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নেয় তাহলে এই জনপ্রিয়তা দিয়ে কী হবে? জানতে চাইলে আন্দালিব রহমান পার্থ বলেন, আইন নিজের গতিতে চলে বা আইনের ওপর সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। এসব কথা বলে সরকার জনগণকে যতই বোঝানোর চেষ্টা করুক, জনগণ জানে ও বুঝে  বিএনপি নেত্রীকে রাজনৈতিক মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিষয়টি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক। সরকার এসব বলে একটি রাজনৈতিক সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করছে। এছাড়া সরকার বিএনপি বা ২০ দলের জন্য একটি ফাঁদ তৈরি করেছিল। কিন্তু সে ফাঁদে আমরা পা দেইনি। উল্টো আওয়ামী লীগকেই ব্যাকফায়ার করেছে। 

তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার মতো নেত্রীর ভাগ্যের নিয়ন্ত্রণ কোন আদালত বা নির্বাহী আদেশে বা কলমের খোঁচায় হয় না। সেরকম একটি চেষ্টা ওয়ান ইলাভেনের সময়  দেখা গেছে। দুইনেত্রীকে মাইনাস ফর্মুলা কিন্তু সফল হয়নি। 

৫ জানুয়ারির পর সরকার পতনের জন্য ২০ দলীয় জোট আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু সরকারের পতন ঘটানো সম্ভব হয়নি। সরকার তার পূর্ণ মেয়াদই শেষ করতে যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে কী সরকারকে সফল ও ২০ দলীয় জোটকে ব্যর্থ বলা যায় না?

এ প্রশ্নের উত্তরে পার্থ বলেন, সরকার তার পূর্ণ মেয়াদ পূরণ করলেই সফল বলা যাবে না। এই সরকার নৈতিকভাবে ও টেকনিক্যালি কোনো বৈধ সরকার না। তারা বৈধতা পাবার যতই চেষ্টা করুক তাতে বিষয়টি গ্রহণযোগ্য হয়নি। ১০ বছর ক্ষমতায় থাকাটাকে সফল বলা যাবে না। দেশের অর্থনীতি, শেয়ারবাজার, ব্যাংক লুট ও সামাজিক অবস্থা সব দিক বিবেচনা করেই বলতে হবে সরকার সফল না ব্যর্থ হয়েছে। 

তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক আদলে রাজনৈতিক বড় দলের স্বৈরাচারী সরকার বাংলাদেশ আগে কখনো দেখেনি। অন্য স্বৈরাচারী সরকারকে সরানো ও গণতান্ত্রিক আদলে থাকা স্বৈরাচারী সরকারকে সরানোর বিষয়টি এক না। 

বিজেপির সভাপতি বলেন, দেশের রাজনীতিতে বিদেশিদের প্রভাব এখন অনেকটাই স্পষ্ট। যা আগে এতোটা দেখা যায়নি। কিন্তু এখন সংসদে বা সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের মন্ত্রীদের কার্যক্রমে সেটি স্পষ্ট দেখা যায়। তবে রাজনীতির বর্তমান অবস্থা দেখে হতাশ হবার কিছু নেই বলে মনে করেন পার্থ। তিনি মনে করেন ভালো রাজনীতির সুদিনের পূর্বাভাস এটি। রাজনীতির ময়দানের এই কালো মেঘ কেটে যাবে। রাজনীতিতে সুদিন আসবেই। তবে ভালো শিক্ষিত যোগ্য ছেলে মেয়েদের রাজনীতিতে আসতে হবে। 

পার্থ জানান, এখন টিভি টকশোগুলোতে সাধারণত অরাজনৈতিক ব্যক্তিরাই রাজনীতি নিয়ে আলোচনা করেন। যাদের সাথে রাজনীতি করেছি তাদের দেখা যায় না। সেরকম ব্যক্তিদের সাথে স্বস্তিবোধ করি না বলেই টকশোতে কম যাওয়া হচ্ছে। 

৭০ বা ৮০ দশকের রাজনীতির সাথে বর্তমান রাজনীতির তুলনা চলে না বলে মনে করেন আন্দালিব রহমান পার্থ। তিনি বলেন, রাজনীতির বিষয়ে মানুষের আগ্রহ চিন্তা চেতনা আগের মতো নেই। আগে রাজনীতিবিদদের হিরো বলা হতো। তাদের মানুষ আইডল মনে করতো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র জোট যদি হরতালের ডাক দিত তাহলে সারাদেশে হরতাল হতো। কিন্তু এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সভাপতির নামও কেউ জানে না। 

তারেক রহমানকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করায় প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের মন্ত্রীরা সমালোচনা করেছেন। তার নেতৃত্বের যোগ্যতা সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন কী?

পার্থ বলেন, তারেক রহমান ইতোমধ্যেই বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত। তিনি একটি বড় রাজনৈতিক রোল প্লে করছেন। গত একমাসে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি ভালোভাবেই দল পরিচালনা করছেন। তিনি সঠিক সময়েই দেশে এসে দলের হাল ধরে এদেশের নেতৃত্ব দেবেন ইনশাআল্লাহ। 

সোনালীনিউজ/জেএ

Wordbridge School
Link copied!