• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ফিক্সেশন না করলে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন স্থগিত


সোনালীনিউজ রিপোর্ট মে ১১, ২০১৬, ০২:২৩ পিএম
ফিক্সেশন না করলে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন স্থগিত

যেসব সরকারি চাকরিজীবী জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ অনুসারে এখনো অনলাইনে নিজেদের বেতন নির্ধারণ (ফিক্সেশন) করেননি, তাদের আগামী ২০ জুলাইয়ের মধ্যে তা করতে বলেছে সরকার। যারা ওই সময়ের মধ্যে অনলাইনে বেতন নির্ধারণে ব্যর্থ হবেন, আগামী জুলাই থেকে তাদের বেতন স্থগিত হয়ে যাবে বলে সতর্ক করা হয়েছে।

অষ্টম বেতন কাঠামো অনুযায়ী সরকারি চাকরিজীবীদের প্রতিবছরই এই বেতন পুনঃনির্ধারণ করে যেতে হবে। নতুন কাঠামোয় বেতন পাওয়ার জন্য যারা অনলাইনে বেতন নির্ধারণ করেছেন, তাদেরসহ যারা করেননি তাদেরও প্রতিবার বেতন বৃদ্ধির সময় পুনরায় অনলাইনে বেতন নির্ধারণ করতে হবে। অর্থাৎ ইনক্রিমেন্ট বা অন্য কোনো কারণে মূল বেতন বাড়লেই তা অনলাইনে নির্ধারণ করতে হবে।

না হলে বর্ধিত বেতন পাবেন না সরকারি চাকুরেরা। এভাবে চাকরির শেষ দিন পর্যন্ত মূল বেতন বাড়া মাত্রই এই প্রকৃয়া সম্পন্ন করতে হবে। যাঁরা সরকারি চাকরিতে নতুন যোগদান করবেন, তাদের জন্যও একই নিয়ম প্রযোজ্য। নাহলে নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত কোনো চাকরিজীবী বেতন-ভাতাদি পাবেন না। সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়নে গতবছর ডিসেম্বরে আইবাস প্লাস প্লাস (iBAS++) নামে একটি সফটওয়ার চালু করা হয়, যার মাধ্যমে চাকরির তথ্য দিয়ে নিজেদের বেতন-ভাতা হিসাব করে নিতে পারেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

সরকারি চাকরিজীবীদের নির্ভুল ডাটাবেইস নিয়মিতভাবে হালনাগাদ রাখতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা। সরকারি চাকরিতে নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত ও পদোন্নতি এবং ১ জুলাই হতে ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৫ সময়ে প্রাপ্ত টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলকভাবে অনলাইনে বেতন নির্ধারণ সংক্রান্ত অর্থ বিভাগের জারি করা এক পরিপত্রে এসব কথা বলা হয়েছে।

অনলাইনে বেতন নির্ধারণ সংক্রান্ত গত ২৫ জানুয়ারি জারি করা পরিপত্রে বলা হয়েছে, জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫-এর আদেশ গেজেট আকারে প্রকাশের পর সব সরকারি চাকরিজীবীর জন্য বাধ্যতামূলকভাবে অনলাইনে বেতন নির্ধারণ ব্যবস্থা প্রচলন করা হয়েছে, যার মাধ্যমে সরকারি চাকরিজীবীর বেতন ও অন্যান্য তথ্যসংবলিত একটি নির্ভুল ডাটাবেইস তৈরি করা হচ্ছে। এ ডাটাবেইস নিয়মিত হালনাগাদ করার স্বার্থে গত ১ জুলাই অনলাইনে বেতন নির্ধারণের পর যেসব ক্ষেত্রে বিভিন্ন কারণে মূল বেতনের পরিবর্তন হবে, সেগুলোও হালনাগাদ করে অনলাইনে বেতন নির্ধারণ করতে হবে।

নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের বেতন পাওয়ার আগে অনলাইনে বেতন নির্ধারণ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, গত ১ জুলাই বা তার পরে সরকারি চাকরিতে নতুন নিয়োগ পাওয়া প্রত্যেককে বাধ্যতামূলকভাবে অনলাইনে বেতন নির্ধারণ করতে হবে। অনলাইনে বেতন নির্ধারণ (ফিক্সেশন) ছাড়া নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত কোনো চাকরিজীবীর বেতন ও ভাতাদি পরিশোধ করা যাবে না। কোনো চাকরিজীবীর পদোন্নতি হলে তাঁকেও নতুন পদে যোগ দিয়েই বেতন ফিক্সেশন করতে হবে।

এ প্রসঙ্গে পরিপত্রে বলা হয়েছে, গত ১ জুলাই বা তার পরে পদোন্নতি পাওয়া সকল সরকারি চাকরিজীবীর প্রত্যেককে পদোন্নতিজনিত কারণে বাধ্যতামূলকভাবে অনলাইনে বেতন নির্ধারণ করতে হবে। অনলাইনে বেতন নির্ধারণ ছাড়া কোনো চাকরিজীবীকে পদোন্নতিজনিত কারণে উচ্চতর গ্রেডে বেতন ও ভাতা পরিশোধ করা যাবে না। গত ১ জুলাই থেকে কার্যকর হওয়া নতুন বেতন স্কেলের আদেশ জারি করা হয়েছে গত ১৪ ডিসেম্বর।

আদেশ জারির দিন থেকে সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল বাতিল করা হয়েছে। তবে গত ১ জুলাই থেকে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত যাঁরা টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড পেয়েছেন সেগুলো বহাল রাখা হয়েছে। এই সময়ে টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেডপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পর্কে জারি করা পরিপত্রে বলা হয়েছে, তাঁদের সবাইকে প্রতিটি প্রাপ্ত সুবিধার জন্য আলাদা করে বাধ্যতামূলকভাবে অনলাইনে বেতন নির্ধারণ করতে হবে।

কোনো চাকরিজীবী এই সময়ের মধ্যে একাধিক সুবিধা পেয়ে থাকলে, যে সুবিধাটি তিনি আগে পেয়েছেন, প্রথমে তার জন্য একবার ফিক্সেশন করার পর পরের সুবিধার জন্য আবার অনলাইনে বেতন নির্ধারণ করতে হবে।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, নতুন নিয়োগ, টাইম স্কেল বা সিলেকশন গ্রেড অথবা পদোন্নতি ছাড়াও অন্য কোনো কারণে কোনো চাকরিজীবীর বেতন গ্রেড বা মূল বেতন পরিবর্তন হলে তাঁকেও বাধ্যতামূলকভাবে অনলাইনে বেতন নির্ধারণ করতে হবে। যে কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী নির্ধারিত ওয়েবসাইটে গিয়ে (www.payfixation.gov.bd) জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) নম্বর, কর্মরত পদ, চাকরিতে যোগদানের তারিখ, কতগুলো টাইম স্কেল, সিলেকশন গ্রেড পেয়েছেন তার তথ্য এবং সর্বশেষ স্কেলের তথ্য দিলেই নতুন স্কেলে তার বেতন কত দাঁড়াচ্ছে তা চলে আসবে।

একইভাবে মিলবে অবসর ভাতার (পেনশন) তথ্য। স্বয়ংক্রিয়ভাবে ওই কর্মকর্তা-কর্মচারী বেতন-ভাতা নির্ধারিত হয়ে যাবে এর মাধ্যমে। যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র নেই এবং বর্তমান কর্মস্থলে থেকে জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য আবেদন করার সুযোগ নেই, তাদের প্রয়োজনে ছুটি নিয়ে ওই কাজ সারতে বলা হয়েছে পরিপত্রে। উল্লেখ্য, গত জানুয়ারি থেকে বাংলাদেশের ২১ লাখ সরকারি কর্মী নতুন কাঠামো অনুযায়ী বেতন পাচ্ছেন।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/আমা

Wordbridge School
Link copied!