• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ফিলিস্তিনি তরুণীদের ‘মডেল’ মেডেলিন


ফিচার ডেস্ক জুন ১, ২০১৭, ০৩:৩৮ পিএম
ফিলিস্তিনি তরুণীদের ‘মডেল’ মেডেলিন

ঢাকা: তখন ২০০৯ সাল, মাডেলিন কোলাব দুরন্ত এক কিশোরী। পাড়ার ছেলে-মেয়েরা তাকে এক নামেই চেনে। কেননা, যেমন দুরন্ত তেমনি মেধাবী। পাড়ার স্কুলে বরাবরই ভালো ফল করার রেকর্ড রয়েছে তার ঝুলিতে। ছোট ভাই-বোন ও বাবা-মাকে নিয়ে সুখেই চলছিলো তাদের সংগ্রামী জীবন।

হঠাৎ তাদের সংসারে নেমে এলো ঘনঘটা। ইসরাইলি নৌবাহিনীর গুলিতে গুরুতর আহত হন মৎস ব্যবসায়ী বাবা মোহাম্মেদ কোলাব। ডাক্তার বলেন, তিনি আর সাগরের পানিতে নামতে পারবেন না। যদি তা করেন তাহলে মারত্মক ক্ষতি হতে পারে। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম অসুস্থ হওয়ায় চরম অর্থ সংকটে পড়তে হয় মাডেলিনদের। প্রায়দিনই অর্ধহারে, অনাহারে দিন কাটাতে হয়। পড়াশুনায় ছেদ পরে মাডেলিনের।

এভাবে আর কতদিন? ১৩ বছরের মাডেলিন ধরলেন বাবার বোটের হাতল। অথৈ সাগরে মাছ ধরতে চললেন তিনি। রক্ষণশীল সমাজে প্রথমে তাকে অনেক কথাই শুনতে হয়েছে। কিন্তু সেগুলো কানে নেননি ছোট্ট মাডেলিন ও তার বাবা।  

তার ভাষায়, ‘যখন প্রথমে আমি মাছধরতে গেলাম। জেলেরা বাবাকে বললেন ওকে মেনে নেবো না। বাবা তাদের উপেক্ষা করলেন... বললেন, তুমি ভেবো না ওরা আর কত কথা বলবে। আমি নিজেও তাদের কথা কানে নিলাম না।’

মাডেলিনের বয়স এখন বাইশ। ইচ্ছে ছিলো বড় হয়ে বড় ফ্যাশন ডিজাইনার হবেন। গাজায় জেলেদের জীবন মটেই সুখকর নয় সেই পেশাটিই তাকে বেছে নিতে হয়েছে। 

১১৯৩ সালে ফিলিস্তিনের প্রায়ত প্রেসিডেন্ট ইয়াসির আরাফাত ও ইসরাইলের মধ্যে ২০ বছরের জন্য একটি শান্তি চুক্তি হয়। সেই চুক্তি অনুযায়ি ফিলিস্তিনবাসী সাগরের ২৯ কিলোমিটার জায়গায় মাছ ধরতে পারবে। কিন্তু, দিনদিন এই সেই চুক্তি লঙ্ঘন করছে ইসরাইল। ছোট হয়ে আসছে তাদের মাছ ধরার জায়গা। অযাথায় জেলেদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালায়। সেই সগ্রামী জীবন বেছে নিয়েছেন মাডেলিন। গাজায় তিনিই প্রথম কোনো নারী যিনি মাছের ব্যবসা ধরেছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি নিজেই এখন উদ্যোক্ত। আমি দেশ ও জাতীর জন্য কিছু করতে চাই।’ তার বাবা মোহামেদ কোলাব বলেন, ‘বিভিন্নভাবেই আমি ওকে পরীক্ষা করেছি, আবিস্কার করেছি খুবই দক্ষ। অন্য ৫জন পুরুষের মতই দক্ষ।’

‘আমরা প্রতিনিয়তই ওর জন্য দোয়া করি, ও আমাদের জন্য নিয়ামক আমাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম’, যোগ করেন কোলাব।

মোহামেদ ওমর বাকির নামক এক জেলে বলেন, ‘মাডেলিন যখন প্রথম আসলো তখন ও খুব ছোট। ভাবছিলাম ও পারবে না। কিন্তু কিছুদিন পরই আমাদের ধারণা পাল্টে গেলো । কেননা অন্যান্যদের চেয়েও ও এখন ভালো করছে।’ ওমর বাকিও ইসরাইলি নৌবাহিনীর হামলায় পা হারিয়েছেন। 

উল্লেখ্য, ফিলিস্তিনের নারীরা এখন বিভিন্ন ভাবে জাতীয় অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছেন। এখন তারা ফ্যাশন ডিজাইন, রেস্তোরাঁ ব্যবসাসহ নানা অর্থনীতিক কার্যকালাপে যোগ দিচ্ছেন। সূত্র: আল জাজিরা।

ভিডিওতে দেখুন: 

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এআই

Wordbridge School
Link copied!