• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ফের হুমকিতে রফতানি খাত


বিশেষ প্রতিনিধি জুলাই ৩, ২০১৬, ০৫:৪৭ পিএম
ফের হুমকিতে রফতানি খাত

ইমেজ সংকট যেন পিছু ছাড়ছে না রফতানি খাতের। গুলশানে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পর রফতানি খাতে সংকট আরও তীব্র হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। কারণ গুলশান হামলায় বেশ কয়েকজন বায়ার বা তাদের প্রতিনিধি নিহত হয়েছেন বলেও জানা গেছে। 

এর ফলে গোটা পোশাক খাতেই দেখা দিতে পারে অস্থিরতা। রফতানি বাণিজ্যে দেখা দিতে পারে ভয়াবহ সংকট। এছাড়া বিদেশি বিনিয়োগ কমার পাশাপাশি বিনিয়োগকারী বিদেশিরাও অন্যদেশে পাড়ি জমাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সর্বোপরি সার্বিক অর্থনীতিতে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদে সংকট সৃষ্টি হতে পারে এ ঘটনায়।

শুক্রবার (১ জুলাই) রাতে রাজধানী গুলশানে হোলি আর্টিজান নামে একটি স্প্যানিশ রেস্টুরেন্টে জঙ্গিদের হামলার ঘটনায় ২০ বিদেশি জিম্মি নিহত হয়েছে। দেশের ইতিহাসে এটিই সবচেয়ে বড় ঘটনা যেখানে এত বেশি বিদেশি নাগরিক নিহত হলেন। নিহতদের মধ্যে ৯ জন ইতালিয়ান, জাপানের ৭ নাগরিক ও একজন ভারতীয় ছিলেন। এদের মধ্যে ৬ জাপানিই ছিলেন ঢাকার মেট্রোরেল প্রকল্পের পরামর্শক এবং অন্য দেশে বেশ কয়েকজন ছিলেন গার্মেন্টস বায়ার প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি।

এর আগে গত বছরের অক্টোবরে দুই বিদেশি নাগরিক হত্যার পর দেখা দিয়েছিল ইমেজ সংকট। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে জাপানি ও ইতালির নাগরিক হত্যার ঘটনায় অনেক ক্রেতা দেশ থেকে চলে গিয়েছিল। অনেকে দেশে এসেও কারখানা পরিদর্শন না করেই নিজ দেশে ফিরে গিয়েছিল। 

পরিস্থিতি সামাল দিতে পোশাক রফতানিকারকরা ক্রেতাদের সঙ্গে তৃতীয় দেশে বৈঠক করত। বিজিএমইএ’র সাথে বায়ার’স ফোরামের একটি সভাও স্থগিত হয়ে গিয়েছিল নিরাপত্তার অজুহাতে। ওই সভায় বিশ্বের শীর্ষ ব্র্যান্ডের প্রতিনিধিদের অংশ নেয়ার কথা ছিল। এরপর পরিস্থিতির সাময়িক স্থিতিশীলতা আসলেও গত কয়েক মাসে দেশের বিভিন্ন স্থানে গুপ্তহত্যার কারণে এক ধরনের অস্থিরতা থেকেই যায় বিদেশিদের মধ্যে। এর ধারাবাহিকতায় গুলশান হামলা রফতানি খাত তথা দেশের অর্থনীতির জন্য একটি বড় ধাক্কা বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। 

এ প্রসঙ্গে কথা হয় বাংলাদেশ গার্মেন্টস বায়িং হাউস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কাজী ইফতেখার হোসাইন বলেন, ইতালি একটি বড় ক্রেতা দেশ। এ নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কারণে পোশাক রফতানি মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়তে যাচ্ছে। গত রাতেই (ঘটনার রাত) একাধিক বায়ার আমাকে জিজ্ঞাসা করেছে। তোমাদের দেশে এসব কী হচ্ছে। এটি কি আসলেই সন্ত্রাসবাদ? 

বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, এটি একটি বড় দুঃখজনক ঘটনা। এর ফলে পোশাক রফতানিতে বড় সংকট সৃষ্টি হতে পারে। তবে বিশ্বের অনেক দেশেই এ রকম ঘটনা ঘটছে। এটিকে একটি বৈশ্বিক সমস্যা মনে করে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এর মোকাবিলা করতে হবে। 

বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশ রফতানিকারক সমিতির সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী বলেন, দেশে বায়ারদের সঙ্গে বৈঠক করা হয়তো আর সম্ভব হবে না। তৃতীয় কোনো দেশে গিয়ে এখন আমাদের বৈঠক করে আসতে হবে। এতে এ ধরনের বৈঠকের সংখ্যা কমে আসবে। যার ফলশ্রুতিতে রফতানি কমে আসবে। আবার রফতানির খরচ বেড়ে যাবে। 

বিজিএমইএ’র জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, একটার পর একটা ধাক্কা আমাদের মোকাবিলা করতে হচ্ছে। অতি সম্প্রতি ইইউ থেকে ব্রিটেন বের হয়ে যাওয়ায় দীর্ঘমেয়াদের একটা সংকটে পড়েছি আমরা। এটি কাটিয়ে উঠতে আমাদের অনেক সময় লাগবে। এরপর গুলশান হামলার ঘটনা নতুন আরেক ধাক্কা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। তিনি বলেন, তবে ব্যবসার কথা এখন আমরা ভাবতে পারছি না। নিজেদের নিরাপত্তার কথাই আগে ভাবতে হচ্ছে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআরসি

Wordbridge School
Link copied!