• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী আর নেই


নিজস্ব প্রতিবেদক মার্চ ৬, ২০১৮, ০১:২৮ পিএম
ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী আর নেই

ফাইল ছবি

ঢাকা: মুক্তিযোদ্ধা ও ভাস্কর ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী আর নেই (ইন্নালিল্লাহি ওয়া... রাজিউন)। মঙ্গলবার (৬ মার্চ) দুপুর ১টায় রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

খ্যাতিমান এই মুক্তিযোদ্ধা হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিট-সিসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

তিনি দীর্ঘ দিন যাবৎই হৃদরোগ, কিডনী জটিলতা ও শ্বাস কষ্টসহ বেশকিছু রোগে ভুগছিলেন।

ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণীর মেয়ে ফুলেশ্বরী প্রিয়নন্দিনী জানান, গত বছরের নভেম্বরে বাথরুমে পড়ে গোড়ালিতে চোট পান তার মা। হাসপাতালে ভর্তি করার পর হার্ট অ্যাটাক হলে তার হৃদযন্ত্রে স্থায়ীভাবে পেসমেকার বসাতে হয়।

এরপর ডিসেম্বরের শেষে আবারও গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ভর্তি করা হয় ল্যাব এইড হাসপাতালে। সেখানে কিছুদিন চিকিৎসার পর গত ২২ ফেব্রুয়ারি আবারও তাকে ওই হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়।

ফুলেশ্বরী জানান, কয়েক দিন আগে তার মায়ের গোড়ালিতে অস্ত্রোপচার করা হয়। কিন্তু রক্তচাপ ঠিক থাকছিল না। অবস্থা খারাপ হলে মঙ্গলবার সকালে তাকে ল্যাবএইডের সিসিইউতে নেয়া হয়।

ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী মূলত ঘর সাজানো এবং নিজেকে সাজানোর জন্য দামী জিনিসের পরিবর্তে সহজলভ্য জিনিস দিয়ে কিভাবে সাজানো যায় তার সন্ধান করা থেকেই তাঁর শিল্পচর্চার শুরু। নিম্ন আয়ের মানুষেরা কিভাবে অল্প খরচে সুন্দরভাবে ঘর সাজাতে পারে সে বিষয়গুলো তিনি দেখিয়েছেন। ঝরা পাতা, মরা ডাল, গাছের গুড়ি দিয়েই মূলত তিনি গৃহের নানা শিল্প কর্মে তৈরি করেন।

মুক্তিযুদ্ধের এই নয়িকার জন্ম ১৯৪৭ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি, খুলনায় নানার বাড়িতে। বাবা-মায়ের ১১ সন্তানের মধ্যে প্রিয়ভাষিণী ছিলেন সবার বড়। ১৯৬৩ সালে প্রথম বিয়ে করেন। পরে ১৯৭২ সালে প্রিয়ভাষিণী দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন। তার দ্বিতীয় স্বামী আহসান উল্লাহ আহমেদ ছিলেন প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা। মৃত্যুকালে তিন ছেলে ও তিন মেয়ে রেখেগেছেন। 

তিনি খুলনার পাইওনিয়ার গার্লস স্কুল থেকে এসএসসি এবং খুলনা গার্লস স্কুল থেকে এইচএসসি ও ডিগ্রি পাস করেন।

১৯৭৭ সাল থেকে ১৯৯৮ পর্যন্ত তিনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেছেন। মাঝে কিছুদিন স্কুলে শিক্ষকতাও করেছেন। তিনি ইউএনডিপি, ইউএনআইসিইএফ, এফএও, কানাডিয়ান দূতাবাস প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেছেন। শেষ বয়সে এসে নানা শিল্পকর্ম সৃষ্টিতে মনোনিবেশ করেন এবং তা অবিরামভাবে অব্যাহত রাখেন।

শিল্পকলায় অসাধারণ অবদানের জন্য ২০১০ সালে বাংলাদেশের “সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার” হিসাবে পরিচিত “স্বাধীনতা পুরস্কার” পান। এছাড়াও তিনি-

হিরো বাই দ্যা রিডার ডাইজেস্ট ম্যাগাজিন (ডিসেম্বর ২০০৪);
চাদেরনাথ পদক;
অনন্য শীর্ষ পদক;
রৌপ্য জয়ন্তী পুরস্কার (ওয়াইডব্লিউসিএ);
মানবাধিকার সংস্থা কর্তৃক মানবাধিকার পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এআই

Wordbridge School
Link copied!