• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
সামার স্কুলের সমাপনী

ফোকলোরের বড় বাজার বাংলাদেশ


সাহিত্য-সংস্কৃতি ডেস্ক এপ্রিল ১৭, ২০১৭, ১০:৫১ পিএম
ফোকলোরের বড় বাজার বাংলাদেশ

ঢাকা: শেষ হলো বাংলা একাডেমি আয়োজিত পাঁচদিব্যাপী ‘চতুর্থ ফোকলোর সামার স্কুল’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক ফোকলোর কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠান।

সোমবার (১৭ এপ্রিল) বিকেলে একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে পাঁচ দিনব্যাপী ফোকলোর কর্মশালার সমাপনি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আন্তর্জাতিক ফোকলোর বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফোকলোরবিদ অধ্যাপক ফ্রাঙ্ক জে কোরম, ভারতের বিশিষ্ট গবেষক জহর সরকার, ভারতের বিশ্বখ্যাত ফোকলোরবিদ অধ্যাপক জওহরলালু হাণ্ডু, ড. অসীমানন্দ গঙ্গোপাধ্যায় এবং সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়। সমাপনী ভাষণ দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান।

চতুর্থ ফোকলোর সামার স্কুলের সমন্বয়কের বক্তব্য প্রদান করেন ড. ফিরোজ মাহমুদ। অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমি প্রকাশিত ‘সোশ্যাল চেঞ্জ অ্যান্ড ফোকলোর’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, আমাদের লোকায়ত জীবনেই আছে ফোকলোর বিস্তৃত উপাদান। এর মর্ম অনুসন্ধান করে বৃহৎ মানুষের মঙ্গলে তাকে ব্যবহার করতে পারলেই ফোকলোরসহ যাবতীয় বিদ্যাচর্চার স্বার্থকতা প্রতীয়মান হবে। বাংলাদেশের ধর্মনিরপেক্ষ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে বেগবান করতে ফোকলোর চর্চার অসাম্প্রদায়িক অভিমুখ আমাদের বিশেষ সহায়ক হবে।

বাংলাদেশ ফোকলোরে অনেক সমৃদ্ধ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমরা গ্রামের সন্তান, গ্রামে বড় হয়েছি। আমাদের গ্রামের সংস্কৃতি, আচার অনুষ্ঠান, খাওয়া দাওয়া, লোকাচার তথা যা কিছু আমাদের নিজেস্ব সবকিছু মিলেই ফোকলোর। এটা আমাদের সম্পদ। আমরা পৃথিবীকে গর্বের সাথে বলতে চাই এটা আমাদের, এটাই আমার পরিচয়। বাংলা একাডেমি দীর্ঘদিন ধরে এ কাজটি করে যাচ্ছে যা প্রশংসাব্যাঞ্জক।

ভারতের প্রখ্যাত ফোকলোর গবেষক অধ্যাপক জওহরলাল হাণ্ডু বলেন, উপমহাদেশের ফোকলোর অনেক সমৃদ্ধ। আর বাংলাদেশের ফোকলোর উপমহাদেশের যে কোনো দেশের থেকে শ্রেষ্ঠ। এদেশ হতে পারে ফোকলোর চর্চার কেন্দ্রবিন্দু।

ভারতের বিখ্যাত ফোকলোরবিদ জওহর শিরকর বলেন, ভালো লাগছে এবারের সামার স্কুলের প্রশিক্ষণার্থীরা অনেক বেশি একাগ্র ছিলেন। আমি তাদের যতটুকু শিখিয়েছি তারচেয়েও বেশি আমি শিখেছি।

যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত ফোকলোর বিশারদ অধ্যাপক ফ্র্যাঙ্ক পজ করম বলেন, এদেশ ফোকলোরে অনেক সমৃদ্ধ। এদেশ ফোকলোর নিয়ে আরো গবেষণা ও তরুণদের প্রশিক্ষিত করতে পারে যা এদেশের ফোকলোরকে বিশ্বসভায় ব্যাপকভাবে তুলে ধরতে পারে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মধ্যে ফোকলোর বিনিময়ের বিষয়েও তিনি গুরুত্বারোপ করেন।

ভারতের ফোকলোর বিশেষজ্ঞ ডক্টর সুদীপ্ত চ্যাটার্জী বলেন, উপমহাদেশের শিক্ষাদানের ব্যবস্থা মূলত প্যাসিভ যেখানে শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন করার সুযোগ কম থাকে অথবা তাদের সে সুযোগ দেয়া হয় না। কিন্তু এবারের সামার স্কুলের প্রশিক্ষণার্থীরা আমাদের অনেক প্রশ্ন করেছে। আমরাও এনজয় করেছি। পারস্পরিক মতবিনিময়ের মাধ্যমে সামার স্কুলটি আমরা উপভোগ করেছি।

ভারতের প্রখ্যাত ফোকলোর বিশারদ ডক্টর অসীমানন্দ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, বাংলাদেশ ফোকলোরের বিশাল আধার। এদেশে রয়েছে ফোকলোরের বড় বাজার। তিনি এদেশের তরুণদের ফোকলোর চর্চায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

সমাপনী বক্তব্যে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান বলেন, ফোকলোর একটি সমৃদ্ধ বিদ্যাশাখা যা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ও সমাদৃত। ফোকলোর বিষয়টি আমাদের কাছে এসেছে ৮৫ এর দিকে। এরপর আমরা এগিয়েছি। ধারাবাহিকভাবে এবছর বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক রফাকলোর সামার স্কুলের ৪র্থ পর্ব অনুষ্ঠিত হলো। অন্যদিকে ফোকলোরকে নিয়ে আমরাও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে গিয়েছি। পৃথিবীর অনেক ফোকলোর বিশারদের সাথে আমাদের কাজ করার সুযোগ হয়েছে। এভাবেই আমাদের ফোকলোর বিশ্বব্যাপী পরিচিত ও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বাংলা একাডেমি ফোকলোর-চর্চার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী বিদ্ব্যৎসমাজের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। একাডেমির অধীনে একটি স্বতন্ত্র ফোকলোর ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।

ধন্যবাদ জানান একাডেমির ফোকলোর, জাদুঘর ও মহাফেজখানা বিভাগের পরিচালক শাহিদা খাতুন। অনুষ্ঠানে কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী ১৫জন প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে সনদপত্র বিতরণ করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি, সভাপতি এবং বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন একাডেমির সহপরিচালক সায়েরা হাবীব।

সোনালীনিউজ/এন

Wordbridge School
Link copied!