• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ফোর-জি নেটওয়ার্ক-সেবা নিয়ে ক্ষোভ


বিশেষ প্রতিনিধি মার্চ ১, ২০১৮, ০৮:০৭ পিএম
ফোর-জি নেটওয়ার্ক-সেবা নিয়ে ক্ষোভ

ঢাকা : ফেব্রুয়ারি মাসের ১৯ তারিখ আনুষ্ঠানিকভাবে মোবাইল অপারেটরগুলোর কাছে হস্তান্তর করা হয় চতুর্থ প্রজন্মের মোবাইল নেটওয়ার্ক সেবা ফোর-জি। লাইসেন্স পাওয়ার কিছু সময় পরেই টেলিটক বাদে গ্রাহকদের জন্য ফোর-জি নেটওয়ার্ক চালু করে অপারেটরগুলো। তবে শুরু থেকেই ফোর-জি সেবা ও নেটওয়ার্ক নিয়ে জনমনে আছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।

লাইসেন্স পাওয়ার পরপরই ফোর-জি চালুর ঘোষণা দেয় বাংলালিংক, রবি এবং গ্রামীণ ফোন। তবে চলতি বছরের মে মাস থেকে ফোর-জি চালু করবে বলে জানায় রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল ফোন অপারেটর টেলিটক।

রাজধানী ঢাকাসহ খুলনা, যশোর, সিলেট এবং চট্টগ্রামে ফোর-জি নেটওয়ার্ক চালু করে বাংলালিংক। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অ্যারিক অস জানান, চলতি বছরের জুনের মধ্যেই দেশের সবগুলো জেলা শহরে ফোর-জি চালু করবে বাংলালিংক। আর এতে করে দেশের ৩০ শতাংশ জনসংখ্যা চলে আসবে ফোর-জি নেটওয়ার্কের আওতায়।

এদিকে এয়ারটেল এবং রবির একীভূত নেটওয়ার্ক ইতিমধ্যে সবগুলো জেলা শহরে পৌঁছে গেছে বলে জানান রবির ভাইস প্রেসিডেন্ট (কমিউনিকেশন এবং কর্পোরেট রেসপনসিবিলিটি) ইকরাম কবীর।

ইতিমধ্যে রবির ১৬ হাজার বিটিএস এর মধ্যে প্রায় আড়াই হাজার বিটিএসের আওতাধীন এলাকায় চালু হয়েছে ফোর-জি নেটওয়ার্ক। এখন পর্যন্ত অন্যান্য মোবাইল অপারেটরগুলোর মধ্যে সবথেকে বেশি এলাকায় রবি’র ফোর-জি সংযোগ আছে বলে দাবি করেন প্রতিষ্ঠানটির এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

দেশের আরেক শীর্ষ মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণ ফোন রাজধানী ঢাকাসহ বিভাগীয় শহরগুলোর মধ্যে রাজশাহী, সিলেট আর খুলনায় ফোর-জি সংযোগ চালু করে। আর জেলা শহরের মধ্যে ময়মনসিংহেও গ্রামীণ ফোনের ফোর-জি চালু আছে।

মোবাইল অপারেটরগুলোর কর্তৃপক্ষ যাই বলুন না কেন গ্রাহকদের মধ্যে ফোর জির সেবা পাওয়া নিয়ে ক্ষোভ কাজ করছে। কারণ সিম বদল করে ফোর জি সিম পেতে গ্রাহকদের গুনতে হচ্ছে একশ’ টাকা।

কোথাও কোথাও আরও বেশি টাকা নেওয়ার অভিযোগও উঠছে। কোনো কোনো গ্রাহক সেবা কেন্দ্রে গিয়ে সিম না পেয়ে কিংবা অধিক ভিড়ে লাইনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে গ্রাহককে।

রাজধানীর বাড্ডার বাসিন্দা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ফারিহা নুজহাতের অভিযোগ, সিম রিপ্লেসমেন্ট করাতে তিনি পার্শ্ববর্তী তিনটি গ্রাহক সেবা কেন্দ্রে যোগাযোগ করেন। দুটি গিয়ে নতুন সিম পাননি। একটিতে যাও পাওয়া গেছে তাতে প্রচন্ড ভিড়। দুই ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে ফিরে আসতে হয়েছে।

সর্বাধুনিক প্রযুক্তির এই মোবাইল নেটওয়ার্কের মান নিয়েও সন্দেহ বিরাজ করছে মোবাইল ফোন ব্যবহারীদের মধ্যে। কোথাও কোথাও ফোর-জি নেটওয়ার্ক থাকলেও ইন্টারনেট ব্যবহারের সময় গতি কম পাচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন অনেকেই।

রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নাজমুল হাসান বলেন, আমি বসুন্ধরা বারিধারা এলাকায় থাকি। এই এলাকায় গ্রামীণ ফোনের ফোর-জি নেটওয়ার্ক চালু আছে জেনে নতুন একটি ফোর-জি সমর্থিত মোবাইল ফোন কিনি। কিন্তু এতে গ্রামীণ ফোনের ফোর-জি সিম ব্যবহার করেও ফোর-জি নেটওয়ার্ক পাচ্ছি না।

তরুণ ই-কমার্স ব্যবসায়ী এবং ইটিসি ওয়্যারহাউসের সত্ত্বাধিকারী আমিন উদ্দীন সাগর বলেন, অনেক সময় থ্রী-জিই ঠিকমত পাই না আমরা সেখানে ফোর-জি। তবুও ভেবেছিলাম হয়তো পরিস্থিতির উন্নতি হবে। আসলে ফোর-জি বা থ্রী-জি দরকার নেই।

যেটাই থাকুক সেটাই যদি ভালো ভাবে থাকে তাহলে আর সমস্যা হয় না। আমাদের মোবাইল অপারেটরগুলোর সমস্যা হচ্ছে এরা বিজ্ঞাপনের জন্য হলেও নতুন নতুন টপিক তৈরি করে। ফোর-জি তেমনি আরেক ক্যাম্পেইন। এর চেয়ে যদি থ্রী-জি এর উন্নতি করত তাহলে মনে হয় এর থেকে ভালো স্পিড পেতাম।

তবে ফোর-জি’র নিয়ে ইতিবাচক অবস্থানেই আছে মোবাইল অপারেটরগুলো। এ বিষয়ে রবি’র ভাইস প্রেসিডেন্ট ইকরাম কবীর বলেন, ফোর-জি’তে রবি এক নম্বর হতে চায়। আর সে লক্ষ্যেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

আমরা যেমন এত অল্প সময়ে ৬৪টি জেলায় ফোর-জি নিয়ে যেতে পেরেছি এমনটা কিন্তু আর কেউ করতে পারেনি। তবে ৬৪টি জেলায় ফোর-জি থাকা মানেই সব এলাকায় থাকা না। পুরো দেশকে ফোর-জি’র আওতায় আনতে আরও সময় লাগবে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআরসি/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!