• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রথম প্রতিবাদের ঝড় উঠেছিল কিশোরগঞ্জে


কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি আগস্ট ১৫, ২০১৭, ০৫:০১ পিএম
বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রথম প্রতিবাদের ঝড় উঠেছিল কিশোরগঞ্জে

ফাইল ফটো

কিশোরগঞ্জ: প্রায় সারাদেশই শোক ও আতঙ্কে নীরব হয়ে পড়েছিল ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে। তবে কারফিউ ভেঙে হাতেগোনা যে কয়েকটি স্থানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার প্রতিবাদে মিছিল হয়েছিল কিশোরগঞ্জ সেগুলোর অন্যতম।

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে দেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের জন্মস্থানের রাজপথকে ওই দিন সকালেই প্রতিবাদ ও বিক্ষোভে প্রকম্পিত করে তুলেছিলেন কয়েকজন প্রগতিশীল বিক্ষুব্ধ তরুণ।

বেতারে এ হত্যার খবর প্রচারের সঙ্গে সঙ্গেই শহরের কয়েকজন প্রগতিশীল সংগঠক এসে একত্রিত হন স্টেশন সড়কের রঙমহল সিনেমা হল প্রাঙ্গণে। সিদ্ধান্ত নেন, নীরবে এ হত্যাকে মেনে নেবেন না। সরবে প্রতিবাদ করবেন। সিনেমা হল-সংলগ্ন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের অফিস থেকে এ তরুণদের নেতৃত্বে প্রতিবাদ মিছিলটি সকাল সাড়ে ৯টা থেকে ১০টার দিকে রাজপথে বেরিয়ে পড়ে। এর পর পুরান থানা, একরামপুর, বড়বাজার, ঈশাখাঁ রোড, আখড়াবাজার, কালীবাড়ি মোড় হয়ে থানার সামনে দিয়ে আবারও রঙমহল সিনেমা হলে এসে শেষ হয়।

'ডালিমের ঘোষণা/ মানি না, মানব না', 'মুজিব হত্যার পরিণাম/ বাংলা হবে ভিয়েতনাম', 'মুজিব হত্যার বদলা নেব/ বাংলাদেশের মাটিতে' ইত্যাদি স্লোগানে রাজপথ প্রকম্পিত করেন তারা।

এ প্রতিবাদ মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন প্রয়াত কমিউনিস্ট নেতা অ্যাডভোকেট আমিরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট ভূপেন্দ্র ভৌমিক দোলন, অ্যাডভোকেট অশোক সরকার, অধ্যক্ষ হালিমদাদ খান রেজোয়ান, হাবিবুর রহমান মুক্তা, ডা. এনামুল হক ইদ্রিস, প্রয়াত সেকান্দার আলী ভূঁইয়া, পীযূষ কান্তি সরকার, অলক ভৌমিক, আকবর হোসেন খান, অধ্যক্ষ গোলাম হায়দার চৌধুরী, রফিক উদ্দিন পনির, নুরুল হোসেন সবুজ, স্বপন গোপাল দাস, আলী আজগর স্বপন, অ্যাডভোকেট সাইদুর রহমান মানিক, নির্মলেন্দু চক্রবর্তী, মতিউর রহমান, আবদুল আহাদ, অরুণ কুমার রাউত, বুলবুল মিয়া প্রমুখ।

মিছিলের পর তারা যখন স্থানীয় জাহেদের চা স্টলে বসে চা পান করছিলেন, তখন তাদের গ্রেফতার করতে এক ট্রাক পুলিশ আসে। প্রতিবাদকারীরা তখন ছত্রভঙ্গ হয়ে আত্মগোপন করেন।

ওইদিনের মিছিলে অংশ নেয়া অ্যাডভোকেট ভূপেন্দ্র ভৌমিক দোলন জানান, আত্মস্বীকৃত খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে দ্রুত রায় বাস্তবায়ন করা হোক। সেদিনের প্রথম প্রতিবাদকারীদের মধ্যে আমিরুল ইসলাম ও সেকান্দার আলী ভূঁইয়া আমাদের মাঝে নেই। পরে এ হত্যাকাণ্ডের বিচার হলেও তারা দেখে যেতে পারেননি। আমরা চাই, আত্মস্বীকৃতি যেসব খুনি পালিয়ে আছে, তাদের দেশে ফিরিয়ে এনে দ্রুত রায় বাস্তবায়ন করা হোক।

সেদিনের প্রতিবাদকারী তৎকালীন ছাত্রনেতা অ্যাডভোকেট অশোক সরকার বলেন, সেদিনের প্রতিবাদকারীদের মধ্যে আমরা যারা বেঁচে আছি, তারা সবাই নৃশংস এ হত্যার বিচার হওয়ায় আনন্দিত। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার কার্যকর হওয়ায় জাতি দীর্ঘদিনের কলঙ্ক থেকে মুক্তি পেয়েছে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইচএম

Wordbridge School
Link copied!