বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ঢাকায় ইয়াহিয়ার বৈঠক

ঢাকা : আজ ১৬ মার্চ। এইদিন আওয়ামী লীগপ্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকায় প্রেসিডেন্ট ভবনে প্রেসিডেন্ট আগা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। আড়াই ঘণ্টার রুদ্ধদ্বার বৈঠকের মধ্যেই চলে অসহযোগ আন্দোলন ।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সকালে গাড়িতে কালো পতাকা উড়িয়ে প্রেসিডেন্ট ভবনে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক করতে যান। আলোচনা শেষে অপেক্ষমাণ দেশি-বিদেশি সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমি রাজনৈতিক এবং অন্যান্য সমস্যা সম্পর্কে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আরো আলোচনা হবে। কাল সকালে আমরা আবার বসছি। এর চেয়ে বেশি কিছু আমার বলার নেই।’

বৈঠক থেকে ফিরে নিজ বাসায় দলের শীর্ষস্থানীয় সহকর্মীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন বঙ্গবন্ধু। গভীর রাত পর্যন্ত এই আলোচনা চলে।

ভারত সরকার এদিন সে দেশের ভূখণ্ডের ওপর দিয়ে বিদেশি বিমান পূর্ব পাকিস্তানে চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। পশ্চিম পাকিস্তান থেকে বিদেশি বিমানে পূর্ব পাকিস্তানে সৈন্য পরিবহন বন্ধ করার জন্যই এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ভারতের জয়প্রকাশ নারায়ণ নয়াদিলি­তে বলেন, ‘জনসাধারণের গণতান্ত্রিক অধিকারে বিশ্বাসী বিশ্বের প্রতিটি মানুষ ও সরকারের উচিত শেখ মুজিবুর রহমান এবং তাঁর নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশকে অকুণ্ঠ সমর্থন দেওয়া।’ তিনি এক বিবৃতিতে বঙ্গবন্ধুর অসাধারণ নেতৃত্বের উচ্ছ¡সিত প্রশংসা করেন।

ময়মনসিংহে এক জনসভায় ন্যাপপ্রধান মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী স্বাধীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ অলঙ্কৃত করার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি আহ্বান জানান। এদিকে চারু ও কারুকলা মহাবিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকরা এদিন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সভা করেন। সভা শেষে মিছিল বের করা হয়। মিছিলে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন নেতৃত্ব দেন।

শাসনতন্ত্র প্রণয়নের আগে আওয়ামী লীগ ও পিপলস পার্টির সমন্বয়ে একটি কোয়ালিশন সরকার গঠন সংক্রান্ত পিপিপি চেয়ারম্যান ভুট্টোর প্রস্তাবের তীব্র সমালোচনা করে পশ্চিম পাকিস্তানি নেতারা পৃথক পৃথক বিবৃতি দেন। করাচিতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি কাজী ফয়েজ মোহাম্মদ বলেন, ‘গণতন্ত্রের নিয়ম অনুযায়ী সংখ্যাগরিষ্ঠ দল একটি, অতএব সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে, অন্যের কাছে নয়।’

সোনালীনিউজ/এমটিআই