• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বজ্রপাতে আরও ১৭ জন নিহত


নিজস্ব প্রতিবেদক মে ১৩, ২০১৬, ০৭:০২ পিএম
বজ্রপাতে আরও ১৭ জন নিহত

ভ্যাপসা গরমের পর স্বস্তির বৃষ্টির দেখা মিললেও গতকাল বৃহস্পতিবারের পর আজ শুক্রবার বজ্রপাতে দেশের বিভিন্ন স্থানে আরও নয় জন নিহত হয়েছে। এরমধ্যে চট্টগ্রাম, জয়পুরহাট, নওগাঁ ও সাভার-ধামরাইয়ে দুই জন করে মারা গেছেন। এচাড়া চাঁদপুর, মাগুরা ওসুনামগঞ্জে এক জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সারাদেশে বজ্রপাতে ৩৫ জন নিহত হয়েছে।
 
বিভিন্ন স্থান থেকে আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

চট্টগ্রাম

পাহাড়তলীর ফইল্যাতলী বাজার এলাকায় বজ্রপাতে আমজাদ আমিন (২৫) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে জানান চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির নায়েক মো. হামিদ।

তিনি জানান, শুক্রবার সকালে এলাকার একটি মাঠে গরুর জন্য ঘাস কাটতে গিয়ে তার মৃত্যু হয়। এছাড়া পতেঙ্গা থানার ১২ নম্বর ঘাট এলাকায় ক্রিকেট খেলার সময় বজ্রপাতে প্রাণ হারায় স্কুলছাত্র গিয়াস উদ্দিন (১৬)।

পতেঙ্গা থানার এসআই রাজীব শর্মা মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে জানান, গিয়াস কর্ণফুলী থানার বদলপুরের বাসিন্দা আবুল হোসেনের ছেলে। সে গিয়াস মেরিন একাডেমি স্কুলে ১০ম শ্রেণিতে পড়তো।

জয়পুরহাট

জয়পুরহাট সদর ও ক্ষেতলাল উপজেলায় বজ্রপাতে দুই শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে; নারীসহ আহত হন আরও দুই জন। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা ১১টার মধ্যে তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট থানা নিশ্চিত করেছে।

সদর থানার ওসি ফরিদ হোসেন জানান, বেলা ১১টার দিকে সতিঘাটা মাঠে ধান ক্ষেতে কাজ করার সময় বজ্রপাতে মারা যান সতিঘাটা গ্রামের রফিকুল ইসলাম (৩৩)। রফিকুল কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার ইসমাইল হোসেনের ছেলে।

একই সময় আহত হন সতিঘাটা গ্রামের আফজাল হোসেন (৪০) ও বেড়ইল গ্রামের নিশিকান্তের স্ত্রী গায়ত্রী রানী (৩২)।

আফজালকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে এবং গায়ত্রী রানীকে জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানান ওসি।

এদিকে ক্ষেতলাল থানার এসআই রশিদ ভদ্র জানান, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ক্ষেতলাল উপজেলার ঘুগইল গ্রামে ধান কাটার সময় মানিক মিয়া (৩৫) নামে এক ব্যক্তি মারা গেছে; তার বাবার নাম আসাদুজ্জামান।

নওগাঁ

শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে নওগাঁর পোরশা ও মহাদেবপুর উপজেলায় বজ্রপাতে নিহত হয়েছেন ইব্রাহিম হোসেন (১৪) নামে এক কিশোর ও শচীন মুহুরী (৪৬) নামে এক কৃষক।

পোরশা থানার উপ-পরিদর্শক মাহবুব আলম জানান, উপজেলার গোপিনাথপুর গ্রামের গোলজার হোসেনে ছেলে ইব্রাহিম সকাল ১০ টার দিকে বাড়ি সংলগ্ন হেলিপ্যাপ এলাকায় আম কুড়াচ্ছিল। এ সময় বজ্রপাতে সে মারা যায়।

অপরদিকে মহাদেবপুর থানার ওসি সাবের রেজা জানান, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মাঠে কাজ করার সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান ধনজইল গ্রামের ভগবান মুহুরীর ছেলে শচীন মুহুরী।

সাভার-ধামরাই

ঢাকার সাভার ও ধামরাইয়ে বজ্রপাতে নিহত দুই জন হলেন সাভার পৌর এলাকার ছায়াবীথি মহল্লার বাসিন্দা মন্টু মিয়া (২০) এবং ধামরাই উপজেলার বালিয়া ইউয়নের বাস্তা নয়াচড়া এলাকার আক্কাস আলীর ছেলে মনির হোসেন (১৮)।

সাভার মডেল থানার ওসি মো. কামরুজ্জামান বলেন, বন্ধুদের সঙ্গে ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে মন্টু গুরুতর আহত হয়। পরে তাকে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

কাওয়ালীপাড়া ফাঁড়ি ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাকিবুল ইসলাম জানান, খড়ের গাদা সড়াতে গিয়ে বজ্রপাতে মনির হোসেনের শরীর ঝলসে গিয়ে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।

সুনামগঞ্জ

দুপুরে বাড়ির পাশে হাওরে কাজ করার সময় জগন্নাথপুরের কলকলি ইউনিয়নে বজ্রপাতে আমির উদ্দিন (৩০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন জগন্নাথপুর থানার ওসি মোহাম্মদ মুরসালিন।

চাঁদপুর

চাঁদপুর সদর মডেল থানার ওসি মো. মামুনুর রশিদ জানান, মেঘনা নদীতে দুপুরে বালুভর্তি কার্গো জাহাজে বজ্রপাতে নবির হোসেন (২৫) নামে এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন।

একই সময় জাহাজে থাকা মো. রাকিব (২৪) এবং কিছু দূরে ওসমান গনি মাঝি (৪৫) নামে এক ট্রলার চালক আহত হন। আহতদের চাঁদপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

নিহত নবীর হোসেন লক্ষ্মীপুর জেলার কমলনগর উপজেলার চরফোরকান গ্রামের মো. হোসেনের ছেলে।

মাগুরা

সদর উপজেলার কাপাসহাটী বিকালে বজ্রপাতে তুহিন শেখ (২২) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে জানান সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্মরত ব্রাদার আব্দুল আজিজ।

তুহিন ওই গ্রামের হেলাল উদ্দিন শেখের ছেলে।

হেলাল শেখ জানান, বিকেলে কাপাসহাটি  গ্রামের নিজ বাড়ির পাশের রাস্তায় তুহিন বজ্রপাতের শিকার হয়। এ সময় তাকে অচেতন অবস্থায় মাগুরা সদও হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত্য ঘোষণা করেন।

গাইবান্ধা

সদর উপজেলায় শুক্রবার বজ্রপাতে সিরাজুল ইসলাম সিরাজ (৬০) ও রেজাউল করিম (৫০) নামে দুই ব্যক্তির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন গাইবান্ধা সদর থানার ও সি একেএম মেহেদী হাসান।

নড়াইল

জেলার লোহাগড়ায় বজ্রপাতে ছায়া রানী রায় (৪৫) ও প্রতাপ রায় (১৭) নামে দুই জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে নলদী পুলিশ ফাঁড়ি।

ফাঁড়ির এএসআই আনিচুর রহমান জানান, নিহতদের বাড়ি লোহাগড়া উপজেলার হলদা গ্রামে। সন্ধ্যা ৬টার দিকে বজ্রসহ বৃষ্টি মধ্যে গরু আনতে মাঠে গেলে বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই ছায়া রানীর মৃত্যু হয়।

গুরুতর আহত প্রতাপ রায়কে উদ্ধার করে চিকিৎসকের নিয়ে যাওয়ার আগেই তার মৃত্যু হয়।

যশোর

যশোরে বজ্রপাতে এক জন নিহত ও দুই জন আহত হয়েছেন। নিহতের নাম ইয়ার আলী মোল্লা (৭৫)। আহতরা হচ্ছেন, ইয়ার আলীর স্ত্রী আলেয়া বেগম (৬৫) ও নাজমা বেগম (৪৫)।

যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক কাজল মল্লিক জানিয়েছেন, বিকাল ৫টার দিকে যশোরে বৃষ্টি শুরু হলে সদর উপজেলার আরবপুর এলাকায় বজ্রপাতে ইয়ার আলী নিহত ও তার স্ত্রী আলেয়া আহত হন। এসময় তারা পাশের সুজলপুর মাঠে গরু আনতে গিয়েছিলেন।

অপর ঘটনাটি ঘটেছে যশোর শহরের বারান্দিপাড়া এলাকায়। রান্না ঘরে কাজ করার সময় বজ্রপাতে আহত হন ওই এলাকার আলাউদ্দিনের স্ত্রী নাজমা বেগম।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/মে

 

Wordbridge School
Link copied!