• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বজ্রপাতে ছয় জেলায় ৯ জন নিহত


নিউজ ডেস্ক সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৬, ১০:০৮ পিএম
বজ্রপাতে ছয় জেলায় ৯ জন নিহত

দেশের বিভিন্ন স্থানে বজ্রপাতে ৯ জন নিহত ও আহত হয়েছেন আরও ৯ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এরমধ্যে কিশোরগঞ্জে ৩ জন নিহত ও দুইজন আহত, হবিগঞ্জে ২ জন নিহত ও ২ জন আহত, গাইবান্ধায় একজন, বগুড়ায় একজন নিহত ও ৫ জন আহত, নাটোরে একজন এবং রাজশাহীতে একজন নিহত হয়েছেন। আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর- 

কিশোরগঞ্জ : সদর উপজেলার যশোদল ইউনিয়নের কাটাখালী গ্রামের কৃষক নিজাম উদ্দিন (৬০) বজ্রপাতে মারা গেছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টায় কাটখালী এলাকার নিজাম উদ্দিন নিজের কৃষিজমিতে কাজ করছিলেন। এ সময় বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। 

কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি মীর মোশারফ হোসেন বলেন, নিহত নিজাম উদ্দিনের বাবার নাম ইউসুফ আলী। তাঁর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

অন্যদিকে, নিকলী উপজেলায় হাওরে মাছ ধরার সময় বজ্রপাতে মারা গেছেন দুই জেলে। নিহত ব্যক্তিরা হলো- নুরুল ইসলাম (২০) ও রুস্তম আলী (৩০)। ওই সময় তাঁদের সঙ্গে থাকা আরও দুই জেলে বজ্রপাতে আহত হন। সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টায় নিকলী উপজেলার জারুইতলা ইউনিয়নের সাজনপুর হাওরে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, সাজনপুর হাওরে মাছ ধরছিলেন ওই চারজন। ওই সময় প্রচণ্ড বৃষ্টি হচ্ছিল। হঠাৎ বজ্রপাত হলে ওই চার জেলে গুরুতর আহত হন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁদের বাজিতপুরের ভাগলপুরে জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন। 

নিকলী থানার ওসি মুঈদ চৌধুরী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

হবিগঞ্জ : জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার সাকুয়া ও দুর্গাপুর গ্রামে সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বজ্রপাতে দুজন নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলো- জাবেদ মিয়া (২৫) ও কৃষ্ণ গোপাল দাস (৪০)। দুজনই পেশায় কৃষক। অপর এক বজ্রপাতের ঘটনায় আরও দুজন আহত হয়েছেন।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, বিকাল ৩টায় হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় প্রচণ্ড বৃষ্টিপাত হয়। এ সময় উপজেলার করগাঁও ইউনিয়নের সাকুয়া গ্রামের পাশে হাওরে কৃষিকাজ করছিলেন জাবেদ মিয়া (২৫)। এ সময় বজ্রপাতের আঘাতে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। তিনি ওই গ্রামের ইছারুল হকের ছেলে। একই সময়ে উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের কৃষ্ণ গোপাল দাস বৃষ্টি দেখে গ্রামের মাঠে গরু আনতে যান। এ সময় বজ্রপাতে তাঁর মৃত্যু হয়। কৃষ্ণ গোপাল দাসের বাবার নাম হরিচরণ দাস।

পাশাপাশি একই উপজেলার কানাইপুর গ্রামে হাওরে মাছ ধরা অবস্থায় বজ্রপাতের আঘাতে এতিম আলী (৩৫) ও অজ্ঞাতনামা (৩৭) এক ব্যক্তি গুরুতর আহত হন। এর মধ্যে এতিম আলীকে সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। 

নবীগঞ্জ থানার ওসি আবদুল বাতেন খান জানান, বজ্রপাতে নিহত দুজনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে এবং আহত ব্যক্তিরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

গাইবান্ধা : গাইবান্ধা সদর উপজেলার মালিবাড়ি ইউনিয়নের কাবিলের বাজার গ্রামে সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বজ্রপাতে আরিফ মিয়া (১০) নামের এক স্কুলছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। নিহত আরিফ মিয়া ওই গ্রামের আয়নাল হকের ছেলে। সে স্থানীয় সোনার বাংলা ব্র্যাক স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ছিল।

মালিবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আলী আজম শাহ বলেন, বিকেলে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যে আরিফ বন্ধুদের সঙ্গে বাড়ির পাশে খেলা করছিল। এ সময় হঠাৎ বজ্রপাতের ঘটনায় সে গুরুতর আহত হয়। পরে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে নেয়ার পথে সে মারা যায়। বজ্রপাতে আরিফের মৃত্যুর বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়েছে বলে তিনি জানান।

বগুড়া : বগুড়ার গাবতলী উপজেলায় বজ্রপাতে তবিবর রহমান (৫৫) নামের এক দিনমজুরের মৃত্যু হয়েছে। সকালে উপজেলার নাড়ুয়ামালা ইউনিয়নের প্রথমারছেও গ্রামের মাঠে আমন খেতে ঘাস নিড়ানির কাজ করতে গেলে বজ্রপাতে তাঁর মৃত্যু হয়। নিহত তবিবর রহমান প্রথমারছেও গ্রামের বাসিন্দা।

গাবতলী থানার ওসি শাহিদ মাহমুদ বলেন, প্রথমারছেও গ্রামের একজন কৃষকের আমন খেতে ঘাস নিড়ানির কাজ করতে যান তবিবর রহমানসহ কয়েকজন দিনমজুর। সকাল সাড়ে নয়টার দিকে ঝড়-বৃষ্টি শুরু হলে তাঁরা পাশের শ্যালোমেশিন ঘরে আশ্রয় নেন। এ সময় বজ্রপাতে তবিবর রহমান ছাড়াও দিনমজুর মিলন মিয়া (৩৮), এরশাদ হোসেন (৩২), লিটন মিয়া (৩০), আজিবর রহমান (৫০) এবং লুৎফর রহমান (৫৪) আহত হন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে তবিবর রহমান এবং লিটন মিয়াকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে গাবতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানের কর্তব্যরত চিকিৎসক তবিবর রহমানকে মৃত ঘোষণা করেন।

নাটোর : সন্ধ্যায় বজ্রপাতে নাটোর সদর উপজেলার জংলি গ্রামে নুরুজ্জামান (২০) নামের এক কলেজছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। সদর উপজেলার তেবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক জানান, সন্ধ্যায় তাঁর ইউনিয়নের জংলি গ্রামের একটি কড়ইগাছের ওপর বজ্রপাত হয়। এ সময় গাছের নিচে দাঁড়িয়ে ছিলেন ওই গ্রামের নুর মোহাম্মদের ছেলে নুরুজ্জামান। তিনি বজ্রপাতে দগ্ধ হয়ে মারা যান। নিহত নুরুজ্জামান নাটোর এন এস সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন। বজ্রপাতে ওই গাছটি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে।

রাজশাহী : রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় বজ্রপাতে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। তার নাম সজীব হোসেন (১৪)। সে উপজেলার তাহেরপুর পৌরসভা এলাকার বিষুপাড়া মহল্লার বাবুল হোসেনের ছেলে। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সন্ধ্যায় কিশোর সজীব বাড়ির পাশের একটি বিলে মাছ ধরার জন্য চাঁই নিয়ে যায়। এ সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়। ঘটনাস্থলের অদূরে থাকা লোকজন তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পথে সজীব মারা যায়। বাগমারা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাকিরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইচএম

Wordbridge School
Link copied!