• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বজ্রপাতের লাশ ‘চুরি’ হয় কেন?


নিউজ ডেস্ক মে ১০, ২০১৮, ০২:৩৭ পিএম
বজ্রপাতের লাশ ‘চুরি’ হয় কেন?

ঢাকা : বাংলাদেশে সরকারি হিসেবে মার্চ-এপ্রিলে বজ্রপাতে মৃতের সংখ্যা ৭০ ছাড়িয়েছে। মে মাসেও ঘটছে বজ্রপাতের ঘটনা। বুধবার (৯ মে) একদিনেই দেশব্যাপী বজ্রপাতে প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ২৪ জন। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৭ জন।

ঝড়-বৃষ্টির সময় বিভিন্ন এলাকায় বজ্রপাতে মৃত্যুর ঘটনায় যেমন আতঙ্ক বাড়ছে, সেই সঙ্গে বাড়ছে লাশ ‘চুরির’ আতঙ্ক। খবর বিবিসি বাংলার।

গত সপ্তাহে রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলায় বজ্রপাতে মারা যান স্থানীয় যুবক মতিন মণ্ডল। কিন্তু তাকে কবর দেয়ার পর মৃতদেহ চুরি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় রাত জেগে কবর পাহারা দেয় তার পরিবারের স্বজন ও আশে-পাশের অন্যান্যরা। আতঙ্ক এতটাই বেড়ে যায় যে পরের দিন কবর সিমেন্ট দিয়ে পাকা করে ফেলে তারা।

বালিয়াকান্দি থানার ওসি হাসিনা বেগম বিবিসি বাংলাকে বলেন, সেখানকার মানুষজনের মধ্যে মৃতদেহ চুরির গুজব ছড়িয়ে পড়ে। আমরাও খবর পেয়ে লোক পাঠাই। তারা বলে যে এরকম চেষ্টা হয়েছিল। ফলে ওইদিন কবর দিয়েও তারা রাত জেগে পাহারা দিয়েছে। পরের দিন কবরটি পাকা করে ফেলে।'

লাশ চুরির আতঙ্কের বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি হাসিনা বেগম বলেন, বজ্রপাত হলে লাশ চুম্বক হয়ে যায় বলে এলাকায় মানুষের মাঝে একধরনের রিউমার আছে। এ কারণে অনেকসময় মৃতদেহ চুরির আশঙ্কা দেখা যায়।

বাংলাদেশের গ্রাম এলাকায় এ ধরনের আতঙ্ক নতুন নয়। কবর থেকে বজ্রপাতে নিহত নারী কিংবা পুরুষের মরদেহের কঙ্কাল চুরি যাওয়ার খবর পত্র-পত্রিকাতেও এসেছে।

বাংলাদেশে অনেকের মধ্যেই এমন ধারণা আছে যে বজ্রপাতে কারও মৃত্যু হলে সেই মরদেহ মূল্যবান কোন কাজে লাগে। তবে কি কাজে লাগে এই ধারণা কারও কাছেই স্পষ্ট নয়।

বজ্রপাতে মৃতের লাশ চুরির কারণ কী?
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সোহেল মাহমুদ বলেন, এর পেছনে কারণ একধরনের মিথ্যা বিশ্বাস।

সোহেল মাহমুদের বরাতে বিবিসি জানিয়েছি, অনেকেই মনে করেন, বজ্রপাতে নিহত মানুষের শরীরে মূল্যবান জিনিস তৈরি হয়। তারা হয়তো ধারণা করে লোহার ভেতর দিয়ে ইলেক্ট্রিসিটি পাস হলে (প্রবাহিত হলে) যেভাবে লোহা চুম্বক হয়ে যায়, এক্ষেত্রেও সেরকম কোনকিছু হয়। কিন্তু এটা তো পুরোটাই অন্ধ বিশ্বাস।

গ্রাম্য কবিরাজ বা ওঝারা তাদের ঝাড়ফুঁকের কাজের জন্য এই ধরণের মৃতদেহের হাড় বা শরীরের অন্যান্য অংশ দরকার হয় বলে অনেকে মনে করেন এবং এই ধরণের কুসংস্কার থেকেই মৃতদেহ চুরির ধারণাটি চলে আসছে।

ডা. সোহেল মাহমুদ জানান, আসলে ইলেকট্রিক শক খেয়ে মানুষের মৃত্যু হলে মৃতদেহ যেমন হয় বজ্রপাতে মৃত মানুষের মৃতদেহ ঠিক একইরকম হয়। কোনও পার্থক্য থাকে না।

সোনালীনিউজ/জেডআরসি

Wordbridge School
Link copied!