• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বনদস্যু আলিফ-কবিরাজ বাহিনীকে শরণখোলা থানায় হস্তান্তর


বাগেরহাট প্রতিনিধি এপ্রিল ৩০, ২০১৭, ১০:১৯ এএম
বনদস্যু আলিফ-কবিরাজ বাহিনীকে শরণখোলা থানায় হস্তান্তর

বাগেরহাট: সুন্দরবনের আত্মসর্মপণ করা বনদস্যু আলিফ ও কবিরাজ বহিনীর দুই প্রধানসহ ২৫ সদস্যকে বাগেরহাটের শরণখোলা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

শনিবার (২৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় দস্যুতা ও অস্ত্র আইনে মামলা দিয়ে তাদের হস্তান্তর করা হয়। র‌্যাব-৮ এর ডিএডি মো. আমজাদ হোসেন বাদি হয়ে এই মামলা দায়ের করেন।

এর আগে ওইদিন সকালে পটুয়াখালীর শিল্পকলা একাডেমিতে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আসাদুজ্জামান খান কামালের হাতে ৩১টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ১১১০ রাউন্ড বিভিন্ন ধরনের গোলাবারুদ জমা দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে বনদস্যু আলিফ ও কবিরাজ বাহিনীর ২৫ সদস্য আত্মসমর্পণ করেন।

আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে র‌্যাবের মহাপরিচালক মো. বেনেজীর আহমেদ ও র‌্যাব-৮ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. আনোয়ার উজ্জমানসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এ নিয়ে গত ১১ মাসে সুন্দরবনকে ঘিরে দস্যুতায় লিপ্ত ১২টি বনদস্যু বাহিনী আত্মসর্মপণ করলো।

শরনখোলা থানায় দায়ের করা অস্ত্র ও দস্যুতা মামলায় আটক দেখানো হয়েছে, বনদস্যু আলিফ বাহিনীর প্রধান মো. আলিফ মোল্লা ওরফে দয়াল (৪২), মো. রেজাউল ইসলাম শেখ ওরফে ছোট (২৮), মো. সফিনুর রহমান সফি (২০), মো. আব্দুল্লাহ্ আল মামুন ওরফে আব্দুল্লাহ (৪০), মো. হযরত আলী (৩৮), মো. শাহিনুর আলম ওরফে শাহিন (২৯), মো. জামির আলী জামু (৪৬), মো. আলামিন মোল্লা (৩৫), মো. তাইজেল ওরফে বড় ভাই (২৭), মো. সিরাজুল ইসলাম ওরফে সুমন (৪১), মো. আলমগীর গাজী (২৬),মো. কামাল শেখ (৩৮), মো. হোসেন আলী শেখ ওরফে ভাগ্নে (২৮), মো. সেলিম মোড়ল (৩৯), মো. হযরত আলী গাইন ওরফে আগুল কাটা হযরত (৩৯), মো. পিয়ার আলী (৩৭), মো. লিটন বিশ্বাস ওরফে দেওয়ান (৩২), মো. হাবিবুর রহমান ওরফে বাছা (২৭), মো. এনামুল গাজি ওরফে এনা (৩৫)। এছাড়া কবিরাজ বাহিনীর প্রধান মো. ইউনুস আলী ওরফে কবিরাজ ওরফে লাদেন (৩৮), মো. নাজিম শেখ (৪৮), মো. আফতাব উদ্দিন ফকির ওরফে বেয়াই (৩৩), মো. আবু শেখ (৪৬), মো. সেলিম হাওলাদার (৩০), মো. আশরাফ হোসেম ওরফে রাজু (৩৭)। আত্মসর্মপণ করা এসব বনদস্যুদের বাড়ি বাগেরহাট, খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলায় বিভিন্ন এলাকায় বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

গত বছরের ৩১ মে সুন্দরবনের কুখ্যাত জলদস্যু ‘মাষ্টার বাহিনীর’ ১০ জন বনদস্যু ৫২টি দেশী-বিদেশী আগ্নেয়াস্ত্র এবং প্রায় ৩ হাজার ৯০৪ রাউন্ড গোলাবারুদ জমা দিয়ে প্রথম বারের মতো আনুষ্ঠানিক ভাবে আত্মসর্মাপণ করেন। তার ধারাবাহিকতায় গত ১৪ জুলাই বনদস্যু ‘মজনু ও ইলিয়াস বাহিনীর’ ১১ জন দস্যু ২৫টি দেশী-বিদেশী আগ্নেয়াস্ত্র এবং ১ হাজার ২০ রাউন্ড গোলাবারুদ জমা দেয়। গত ৭ সেপ্টেম্বর বনদস্যু ‘আলম ও শান্ত বাহিনীর’ ১৪ জন বনদস্যু ২০টি দেশী-বিদেশী আগ্নেয়াস্ত্র এবং সর্বমোট ১ হাজার ৮ রাউন্ড গোলাবারুদ জমা দেয়।

১৯ অক্টোবর সাগর বাহিনী ১৩ সদস্যকে ২০টি দেশী-বিদেশী আগ্নেয়াস্ত্র ও ৫৯৬ রাউন্ড বিভিন্ন প্রকার গোলাবারুদ জমা দিয়ে আত্মসর্মাপণ করে। গত ২৮ নভেম্বর খোকাবাবু বাহিনীর ১২ সদস্য ২২টি দেশী বিদেশী আগ্নেয়াস্ত্র ও ১ হাজার ৩ রাউন্ড গোলাবারুলসহ আত্মসমর্পণ করে। ৭ জানুয়ারী নোয়া বাহিনীর ১২ সদস্য ২৫ টি অন্ত্র ও এক হাজার একশ পাচ রাউন্ড গুলিসহ র‌্যাবের কাছে আত্মসমাপণ করে।

২৯ জানুয়ারী বনদস্যু জাহাংগীর বাহিনীর ২০ সদস্য ৩১টি দেশি বিদেশী আগ্নেয়ান্ত্র ও ১ হাজার ৫০৭ রাউন্ড গুলি জমা দিয়ে আত্মসর্মাপণ করে। ৩০ মার্চ ছোট রাজু বাহিনীর ১৫ সদস্য ২১টি দেশি বিদেশী আগ্নেয়াস্ত্র ও ১ হাজার ২৩৭ রাউন্ড গুলি জমা দিয়ে আত্মসর্মাপণ করে।

সর্বশেষ শনিবার সকালে আলিফ ও কবিরাজ বাহিনীর ২৫ সদস্য ৩১টি দেশী বিদেশী আগ্নেয়াস্ত্র ও ১১১০ রাউন্ড গুলিসহ দস্যুতা ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে আত্মসর্মাপণ করল। দীর্ঘদিন আলিফ ও  কবিরাজ বাহিনীর সদস্যরা সুন্দরবনের মংলা, হারবাড়িয়া ও শিবসা এলাকায় জেলেদের মুক্তিপনের দাবিতে অপহরন, ডাকাতিসহ নানা অপরাধ মুলক কর্মকান্ড চালিয়ে আসছিলো বলে র‌্যাব জানায়।


 সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!