• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বন্ধুর বেশে প্রভু হতে চাইলে মানবো না: খালেদা


নিজস্ব প্রতিবেদক এপ্রিল ১৬, ২০১৭, ১১:৫২ এএম
বন্ধুর বেশে প্রভু হতে চাইলে মানবো না: খালেদা

ঢাকা : নতুন বছরে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে দুঃখ-দুদর্শা লাঘব করে জনগণের কল্যাণ বয়ে আনার শপথ করেছেন খালেদা জিয়া। দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে কারো হস্তক্ষেপ জনগণ মেনে নেবে না উল্লেখ করে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, আমরা সবাইকে বন্ধু হিসেবে দেখতে চাই কিন্তু কেউ যদি বন্ধু হয়ে প্রভু হতে চায় সেটা আমরা কখনো মেনে নেব না, মানব না। কারো প্রভুত্ব বাংলাদেশের মানুষ স্বীকার করবে না।

নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা আয়োজিত বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

নববর্ষের প্রথম দিন শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) বিকালে জাসাসের এই আয়োজনে ঢল নামে নেতাকর্মীদের। বাঙালি সংস্কৃতির নানা সাজে দলে দলে তারা ভিড় করেন সেখানে। পয়লা বৈশাখের এ অনুষ্ঠান এক ধরনের সমাবেশে রূপ নেয়। বিকাল সাড়ে ৪টায় সুতির শাড়ি পরিহিতা খালেদা জিয়া গাড়ি থেকে নেমে হাজার হাজার নেতাকর্মীর উদ্দেশে হাত নেড়ে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান। বর্ণাঢ্য আয়োজনে তবলা, হারমোনিয়াম, ডুগডুগি, বাঁশিসহ নানা বাদ্যযন্ত্রের মূর্ছনায় শুরু হয় পয়লা বৈশাখের এই অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে জাসাস শিল্পীরা ভাটিয়ালী, দেশাত্মবোধক ও বাউল গান পরিবেশন করেন।

নতুন বাংলা বছরে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, বাংলাদেশের অবস্থা দেখে অনেকে এগিয়ে আসতে চায় অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তপে করার জন্য এবং বাংলাদেশের উন্নয়নের নামে দেশের অভ্যন্তরে ঢুকে দেশকে দুর্বল করার জন্য।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে যখন আট কোটি লোক ছিল তখনো ঐক্যবদ্ধভাবে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছিল। আজকে ১৬ থেকে ১৭ কোটি লোক ঐক্যবদ্ধ, তাদের কারোর সাহায্যের প্রয়োজন নাই। কারো প্রভুত্ব বাংলাদেশের মানুষ স্বীকার করবে না।

বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, নববর্ষ যেন বাংলাদেশের মানুষের মনের সত্যিকারের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারে। আমরা চাই গণতন্ত্র, উন্নয়ন, শান্তি, জনগণের কল্যাণ, প্রতিটি মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হোক, শিার সুযোগ পাক ও স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত হোক।

তিনি বলেন, এ জন্য প্রয়াজন জাতীয় ঐক্য। বিএনপি সব সময় জনগণের কল্যাণ ও জাতীয় ঐক্যে বিশ্বাস করে। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে দেশের উন্নয়ন সম্ভব। আমরা দেশ থেকে বিদায় করব সন্ত্রাস, গুম-খুন-হত্যা ও জঙ্গি হামলা। বিদায় করব সব রকম ষড়যন্ত্র। এসব বিদায় করে দেশে প্রতিষ্ঠা করব শান্তি ও সুশাসন।

খালেদা জিয়া নেতাকর্মীদের আহ্বান জানিয়ে বলেন, আজকে প্রয়োজন ঐক্যের, প্রয়োজন শান্তির, প্রয়োজন কল্যাণের। আসুন বাংলা নতুন বছরে আমরা শপথ করি দেশের মানুষের দুঃখ-দুর্দশা দূর করব এবং জনগণের কল্যাণ করব।

দেশের মানুষ কষ্টে আছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, কয়েক দিন আগে বৃষ্টি ও বাইরে থেকে পানি এসে আমাদের হাওর অঞ্চলে ফসলের ব্যাপক তি করেছে। সে জন্য গরিব কৃষকদের পাশে গিয়ে আমাদের দাঁড়াতে হবে। তাদের সাহায্য করতে হবে, তারা যেন এই দুর্যোগ কাটিয়ে উঠতে পারে।

খালেদা জিয়া বলেন, আমাদের পানি সমস্যা একটা বড় সমস্যা। সামনে শুকনো মওসুম আসছে, এই মওসুমে আমাদের পানির প্রয়োজন। সে জন্য আমরা পাপ্য পানি চাই। আমরা কারো কাছে দয়া চাচ্ছি না, অধিকারটুকু চাই।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সদ্যসমাপ্ত ভারত সফরের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, বর্তমান স্বঘোষিত প্রধানমন্ত্রী বেড়িয়ে এসেছেন কিন্তু নিজের দেশের মানুষের স্বার্থের কথা, মানুষের অধিকারের কথা বলতে পারেননি, কিছু করতে পারেননি। তিনি দেশের মানুষের জন্য কিছু না করে দেশের মানুষের স্বার্থের কথা চিন্তা না করে নিজের দেশের সব কিছু অন্যের কাছে দিয়ে এসেছেন, তার বিনিময়ে কিছুই আনতে পারেননি।

তিনি বলেন, এতগুলো চুক্তি ও এমইউ হয়েছে। যদি তিনি (শেখ হাসিনা) সাহস করে শুধু একটা কথা বলতেই পারতেন যে হ্যাঁ চুক্তি ও সমঝোতাগুলো আমার দেশের সাথে আলাপ করে আমরা করব। কিন্তু তিস্তার পানির ন্যায্য হিসসা দেন তাহলে আমি সমঝোতা করব, তা না হলে করব না। এটা বললে আমরা সবাই তার পাশে থেকে সাহস ও সমর্থন জানাতাম।

খালেদা জিয়া বলেন, দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য আমরা সংগ্রাম করব এবং আমরা বিজয়ী হবো।

অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও রুহুল কবির রিজভীও বক্তব্য রাখেন। জাসাস সভাপতি অধ্যাপক মামুন আহমেদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক চিত্র নায়ক হেলাল খানের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিএনপির সিনিয়র নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন, তরিকুল ইসলাম, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বরচন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, মো: শাহজাহান, ইনাম আহমেদ চৌধুরী, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, আহমেদ আজম খান, নিতাই রায় চৌধুরী, আমানউল্লাহ আমান, গাজী মাজহারুল আনোয়ার, আতাউর রহমান ঢালী, খায়রুল কবীর খোকন, হাবিবউন নবী খান সোহেল, ফজলুল হক মিলন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শামা ওবায়েদ, সানাউল্লাহ মিয়া, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, নুরী আরা সাফা, আজিজুল বারী হেলাল, আমিনুল হক, ড. ওবায়দুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, তাইফুল ইসলাম টিপু, আমিরুল ইসলাম খান আলীম, রফিক শিকদার, নিপুণ রায় চৌধুরী, মহিলাদলের হেলেন জেরিন খান, যুবদলের সাইফুল আলম নীরব, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, মোরতাজুল করীম বাদরু, স্বেচ্ছাসেবক দলের শফিউল বারী বাবু, আবদুল কাদের জুয়েল, ছাত্রদলের রাজীব আহসান, ঢাকা মহানগর বিএনপি নেতাদের মধ্যে কাজী আবুল বাশার, ইউনুছ মৃধা, রবিউল আউয়াল, সাবেক কমিশনার মোশারফ হোসেন খোকন, কাউন্সিলর আনোয়ার পারভেজ বাদল, জয়নাল আবেদিন রতন চেয়ারম্যান, এ জি এম শামসুল হক, আ ন ম সাইফুল ইসলাম, আতাউর রহমান চেয়ারম্যান, হাজী মনির হোসেন চেয়ারম্যান, শামসুল আলম চিনু, হাজী মো: হজরত আলী, সেলিম দেওয়ান গিয়াস, সাবেক কমিশনার মাসুদ খান, রফিকুল ইসলাম স্বপন, শেখ হাবিবুর রহমান হাবিব, সাইদ হোসেন সোহেল, আশরাফুর রহিম, ফিরোজ আলম পাটোয়ারী, মো: সোহরাব আলী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

জাসাসের নেতাদের মধ্যে চিত্রনায়ক আশরাফউদ্দিন উজ্জ্বল, বাবুল আহমেদ, শায়রুল কবির খান, মনিরুজ্জামান মুনির, আহসান উল্লাহ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন ভুঁইয়া শিশির, সানাউল হক, সিবা সানু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শেষে খালেদা জিয়া বর্ষবরণের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!