• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বন্যার পানি নামছে, ছড়িয়ে পড়ছে রোগব্যাধি


মৌলভীবাজার প্রতিনিধি জুন ২৩, ২০১৮, ১০:৪৩ এএম
বন্যার পানি নামছে, ছড়িয়ে পড়ছে রোগব্যাধি

মৌলভীবাজার : সিলেটের জকিগঞ্জসহ মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার বিভিন্ন স্থানে বন্যার পানি কমা অব্যাহত রয়েছে। তবে নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে মৌলভীবাজারের ভাটি এলাকা।

এদিকে নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, চর্মরোগ ও ভাইরাসজনিত জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে জকিগঞ্জের বন্যাকবলিত এলাকার লোকজন। মৌলভীবাজারের বন্যাকবলিতরাও রয়েছেন রোগ-বালাইয়ের ঝুঁকিতে। বন্যায় রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতির চিত্র ফুটে উঠছে। দুর্গম এলাকার সবার হাতে ত্রাণ না পৌঁছার খবরও পাওয়া যাচ্ছে।

আমাদের সিলেট ব্যুরো ও মৌলভীবাজার প্রতিনিধির পাঠানো খবর-

সিলেট : সিলেটের জকিগঞ্জে বন্যার পানি কমছে। তবে বিশুদ্ধ খাবার পানির অভাবে ছড়িয়ে পড়ছে পানিবাহিত রোগ। নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, চর্মরোগ ও ভাইরাসজনিত জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে বন্যাকবলিত এলাকার লোকজন। গৃহপালিত পশুপাখির খাবারেরও সঙ্কট রয়েছে।

পানি নেমে যাওয়ায় পর বেরিয়ে আসছে সড়কের ক্ষত-বিক্ষত চিত্র। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে গ্রামীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা। অনেক এলাকায় পানি নেমে গেলেও কাদা ও ভাঙা ব্রিজ, কালভার্ট ও রাস্তার কারণে মানুষের যাতায়াতে দুর্ভোগ বেড়েছে। জকিগঞ্জ-সিলেটের প্রধান সড়কটির ভাঙন ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, জকিগঞ্জ সদর ইউনিয়ন, বিরশ্রী, বারঠাকুরী, কসকনপুর, কাজলসার, বারহাল, মানিকপুর ইউনিয়নে সুরমা-কুশিয়ারা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে পানি লোকালয়ে এসে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছে। বিভিন্ন খামারের কয়েক কোটি টাকার মাছ পানিতে ভেসে গেছে। আউশ ক্ষেত ও আমনের চারা, মৌসুমি শাকসবজি পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে কৃষকদের মধ্যে বিরাজ করছে হতাশা। অনেক এলাকার স্কুল, মাদরাসা ও কলেজের শ্রেণিকক্ষে এখনো পানি জমে আছে। কিছু কিছু এলাকায় পানি কমতে থাকায় বিভিন্ন স্থানে আশ্রিত মানুষ ঘরে ফিরতে শুরু করেছে। তবে ঘরবাড়ি বাসযোগ্য না হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে তারা। উজান এলাকায় পানি নেমে গেলেও ভাটি এলাকার গ্রামগুলোর পানি এখনো নামেনি।  

সিলেট জেলা প্রশাসন ও বিভিন্ন ব্যক্তি বন্যাদুর্গত এলাকায় ত্রাণ বিতরণ করেছেন। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় এই ত্রাণ অপ্রতুল। জকিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিজন কুমার সিংহ জানান, জকিগঞ্জের বন্যাদুর্গতদের জন্য ৩৭ টন চাল বরাদ্দ হয়েছে। এখনো বিভিন্ন এলাকায় বিতরণ করা হচ্ছে। অনেক এলাকায় বন্যার পানি থাকায় যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না।  

মৌলভীবাজার : মৌলভীবাজারে মনু ও ধলাই নদীর পানি বর্তমানে বিপদসীমার নিচে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে ভাটি এলাকা। বন্যাকবলিত এলাকায় ঘরবাড়ি তলিয়ে যাওয়ায় বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট ও স্যানিটেশনের দুরবস্থা বিরাজ করছে। খোলা জায়গায় টয়লেট ও বন্যার পানি ব্যবহারের ফলে ডায়রিয়াসহ নানাবিধ রোগব্যাধি ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।  

এদিকে বন্যাকবলিত অপেক্ষাকৃত উঁচু এলাকার পানি জেলার হাকালুকি ও কাউয়াদিঘি হাওরে গিয়ে পড়ায় এখন নতুন করে হাওর তীরবর্তী এলাকাও বন্যাকবলিত হচ্ছে। যেসব এলাকায় বন্যার পানি নেমে গেছে, সেখানে রাস্তাঘাটের বেহাল চিত্র দেখা যাচ্ছে। অনেক জায়গায় রাস্তা ভেঙে গেছে। কোথাও উঠে গেছে ইট-সুরকি।  

অপরদিকে, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে উপজেলা প্রশাসনের হাত ঘুরে সব ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের হাতে ত্রাণ পৌঁছে গেলেও মাঠপর্যায়ে সব এলাকায় ত্রাণ পৌঁছায়নি। জেলার পতনউষা, আদমপুর, কামারচাক, শরিফপুরসহ আরো কয়েকটি ইউনিয়ন থেকে এ ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

কুলাউড়ার শরিফপুর ইউনিয়নের আবদুল মুহিত জানান, তার এবং আশপাশের ১০-১২টি বাড়িতে কেউ কিছু পায়নি। এ ব্যাপারে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মো. তোফায়েল ইসলাম জানান, ত্রাণের কোনো অভাব নেই। সরকার বলেছে যত লাগবে তত দেবে। ত্রাণ বিতরণ সুষ্ঠু রাখার জন্য প্রতিটি উপজেলায় ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের একজন এডিসি তদারকি করছেন।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!