• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বন্যার পানিতে ডুবতে পারে ঢাকা


নিজস্ব প্রতিবেদক আগস্ট ১৪, ২০১৭, ০৫:২৮ পিএম
বন্যার পানিতে ডুবতে পারে ঢাকা

ঢাকা: সারা দেশের ২০ জেলা বন্যা হয়েছে। আরও ৯ জেলা বন্যায় আক্রান্ত হতে পারে। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সময়ে ঢাকার নিম্নাঞ্চল ও আশপাশের এলাকায় বন্যারে সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া।

সোমবার(১৪ আগস্ট) রাজধানীর মহাখালীর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের সম্মেলন কক্ষে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এ তথ্য জানান। এসময় তিনি বলেন, সরকারি হিসাবে এবারের বন্যায় এ পর্যন্ত ২০ জন মারা গেছেন। এছাড়া ঢাকাসহ আরও ৯টি জেলা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ত্রাণমন্ত্রী বলেন, ‘এখন পর্যন্ত দেশের ২০ জেলার ৫৬ উপজেলা বন্যা কবলিত। বন্যায় সারাদেশে মারা গেছেন ২০ জন,  ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন প্রায় ৬ লাখ মানুষ। এছাড়াও উত্তরাঞ্চলের বন্যার পানি মধ্যাঞ্চল দিয়ে প্রবাহিত হয়ে সাগরে নেমে যাবে। ফলে ঢাকার নিম্নাঞ্চলসহ আরও ৯টি জেলায় বন্যার আশঙ্কা আছে। তবে ১৯৮৮ সালের চেয়ে বড় বন্যা হলেও মোকাবিলার প্রস্তুতি আছে সরকারের।’

তিনি আরও বলেন, ‘চলতি অর্থবছরে বন্যাপ্রবণ জেলাসমূহে দশ হাজার ৬৩০ মেট্রিক টন চাল, তিন কোটি ১০ লাখ টাকা এবং ৬০ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্লাবিত জেলাগুলোতে গত কয়েকদিনে এক হাজার ২শ’ মেট্রিকটন চাল ও ৬০ লাখ নগদ টাকা দেওয়া হয়েছে।’

মায়া বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সব জেলার বন্যা পরিস্থিতি নজরে রাখছেন এবং দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন। মন্ত্রণালয় সে নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছে। সব জেলায় মন্ত্রণালয় থেকে একজন সিনিয়র পর্যায়ের কর্মকর্তাকে সংযুক্ত করা হয়েছে, যার কাজ হবে জেলা পর্যায়ে বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ, সমন্বয় ও ত্রাণ কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় সহযোগিতা করা।’

তিনি আরও বলেন, ‘উজানের দেশ দেশগুলোতে মারাত্মক বন্যা হয়েছে। মন্ত্রণালয় তা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। আর উজানের দেশগুলোতে বন্যা হলে ভাটির দেশ হিসেবে আমাদের ওপর পড়বে-এটাই স্বাভাবিক। তার আলোকে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলা করছি।’

বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের সমালোচনাকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘বিদেশে বসে ফাঁকা আওয়াজ দিয়ে কোনও কাজ হবে না। সরকার বন্যাকবলিত মানুষের পাশে আছে। ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের সামর্থ না থাকলে মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে ত্রাণসামগ্রী নিয়ে হলেও জনগণের পাশে দাঁড়ান।’

বন্যা পরিস্থিতির সর্বশেষ তথ্য উপস্থাপন করে মন্ত্রী বলেন, ‘এ পর্যন্ত দেশব্যাপী ৫৬২টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৪ হাজার ৯৫০টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সংখ্যা ১ লাখ ২৮ হাজার ৭৬৯টি। এ সংখ্যা ধীরে ধীরে কমবে। এখনও পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন নদীতে ২৭টি পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।’

মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতর, সিপিপি ও মাঠ পর্যায়ের সব কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। বন্যাকবলিত জেলাগুলোতে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা রাখার জন্য জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক জেলায় পর্যাপ্ত মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে।’

এ সময় তিনি মেডিক্যাল টিমের সদস্যদের নিয়মিত বন্যাকবলিত এলাকার আশ্রয়কেন্দ্রগুলো পরিদর্শন করে সেবা দেয়ার আহ্বান জানান। এছাড়া জনস্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তাদের প্লাবিত এলাকার টিউবওয়েলগুলো উঁচু করে দেয়া, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট সরবরাহ করে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব গোলাম মোস্তফা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের মহাপরিচালক রিয়াজ আহমেদ প্রমুখ।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/আতা

Wordbridge School
Link copied!