• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বন্যায় সিলেটে ৬ শতাধিক গ্রাম প্লাবিত


সিলেট ব্যুরো জুলাই ৫, ২০১৮, ০৬:২২ পিএম
বন্যায় সিলেটে ৬ শতাধিক গ্রাম প্লাবিত

সিলেট: ভারী বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে সিলেটের পাঁচ উপজেলায় আকস্মিক বন্যা দেখা দেয়ায় পানিবন্দি হয়েছে পড়েছেন অন্তত চার লাখ মানুষ। এসব এলাকায় বন্যার পানিতে প্রায় ৬ শতাধিক গ্রামের ঘর-বাড়ি ও ফসল ডুবে গেছে। ফলে খাদ্য সংকটে ভুগছেন অনেকেই। গবাদিপশুর খাদ্য সংকটসহ ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে দিশেহারা এসব এলাকার বানভাসি মানুষ।

জেলার পাঁচ উপজেলা- গোয়াইনঘাট, কানাঘাট, জৈন্তাপুর, কোম্পানীগঞ্জ ও ফেঞ্চুগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা পানিতে ডুবে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন পানিবন্দি মানুষ। পানির নিচে তলিয়ে গেছে ৬-৭টি প্রধান সড়কসহ কয়েকটি বাজার।

সূত্র জানায়, টানা বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটে নদীর পানি বিভিন্ন পয়েন্টে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে জেলার নিম্নাঞ্চল। সীমান্তবর্তী কানাইঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট ও ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় সিলেটের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে বিভিন্ন উপজেলার।

টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে গোয়াইনঘাটে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। অব্যাহত রয়েছে পানি বৃদ্ধি। বন্যায় কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। পিয়াইন, সারী, গোয়াইনসহ সবকটি নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে প্রতিনিয়তই প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। হিদাইরখালে অপরিকল্পিতভাবে নির্মিত বেড়িবাঁধের কারণে সারী নদীর উপকণ্ঠে সানকিভাঙ্গা, আসামপাড়া হাওর, নবমখণ্ড, নয়াগাঙ্গেরপাড়, বাউরভাগ, বাউরভাগ হাওর এলাকায় পানির চাপ বৃদ্ধি পেয়ে ভাঙনের তীব্রতা ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। ভাঙন দেখা দিয়েছে আশপাশের গ্রামীণ সড়ক ব্যবস্থায়ও।

এদিকে বন্যা পরিস্থিতি অবনতি থাকায় জাফলং-বিছনাকান্দি পাথর কোয়ারীতে সব ধরনের পাথরবালি উত্তোলন বন্ধ থাকায় লক্ষাধিক খেটে খাওয়া মানুষ অনাহারে অর্ধহারে দিন পার করছেন। সারী-গোয়াইন, সালুটিকর-গোয়াইনঘাট, হাদার পার-বঙ্গবীর-গোয়াইনঘাট, গোয়াইনঘাট- রাধানগর জাফলং সড়কের উপর দিয়ে কোথাও কোথাও হাঁটু পানি আবার কোথাও কোথাও কমর পানিও বইছে।

উপজেলার সব সড়কসমূহ পানিবন্দি থাকায় উপজেলা সদর ও জেলা শহর সিলেটের সঙ্গে সম্পূর্ণ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে। নৌকা ছাড়া এসব এলাকায় কোনো যানবাহন চলছে না।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এম আনিছুজ্জামান জানান, ৪ হাজার হেক্টর রোপায়িত আউশ ধানের মধ্যে চলমান বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে ১ হাজার হেক্টর আউশ খেত। পানিবন্দি থাকায় উপজেলার প্রায় সবকটি ইউনিয়নের বিদ্যালয়সমূহে ছাত্র-ছাত্রী উপস্থিতি নেই বললেই চলে। অনেক স্কুল বন্ধও রয়েছে।

গোয়াইনঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার পাল জানান, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে গোয়াইনঘাটের প্রায় সবকটি এলাকাই আকস্মিক বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। এখন পর্যন্ত পানিবন্দি মানুষের মাঝে ৯ টন চাল, শুকনো খাবার,পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়েছে। আরও ত্রাণের জন্য কর্তৃপক্ষ বরাবরে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

উপজেলার বন্যায় বিপদগ্রস্ত মানুষজনকে উদ্ধারে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক নজরধারী রয়েছে বলে জানান তিনি।

গোয়াইনঘাট উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হাকিম চৌধুরী জানান, আকস্মিক পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় গোয়াইনঘাটের ৯টি ইউনিয়নের প্রায় সবকটি এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে পানিবন্দি মানুষ।

সোনালীনিউজ/এমএইচএম

Wordbridge School
Link copied!