• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশকে আলোচনার প্রস্তাব দিল মিয়ানমার


জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৭, ০৫:১৮ পিএম
বাংলাদেশকে আলোচনার প্রস্তাব দিল মিয়ানমার

ঢাকা: বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলীর সঙ্গে দেখা করতে চায় মিয়ানমারের এক মন্ত্রী। তবে ওই মন্ত্রী বাংলাদেশে এসে নয়, জাতিসংঘের অধিবেশন চলাকালে নিউইয়র্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে বৈঠক করতে চায়।

জাতিসংঘের ৭২তম অধিবেশনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরসঙ্গী হিসেবে আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক যাচ্ছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

বৃহস্পতিবার(১৪ সেপ্টেম্বর) প্রধানমন্ত্রীর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দেয়ার বিষয়ে জানাতে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালায়। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

মাহমুদ আলী বলেন, ‘মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চির দপ্তরের একজন মন্ত্রী রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে নিউইয়র্কে তার (পররাষ্ট্রমন্ত্রী) সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছেন। বাংলাদেশ যেহেতু বিষয়টি সমাধানের জন্য মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা করতে চায়, তাই তিনি সু চির দপ্তরের ওই মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবেন।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দিবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে তিনি রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে বিশেষ কথা বলবেন। সমস্যা সমধানে মিয়ানমারের উপর আন্তর্জাতিক চাপ বৃদ্ধি ও আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তাব দিবেন প্রধানমন্ত্রী। 

গত তিন সপ্তাহে বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্তে ৪০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে প্রায় চার লাখ রোহিঙ্গা এসেছে, যাদের বেশির ভাগই নারী, শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠ নাগরিক বলে জানান মন্ত্রী।

মন্ত্রী আরও জানান, এর আগে থেকে অবস্থান নেয়া চার লাখ রোহিঙ্গার বেশির ভাগই আছে কক্সবাজারে। সব মিলে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে বাংলাদেশ আজ এক গভীর সঙ্ককটের মুখোমুখি। এ প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘে বক্তব্য দেয়ার সময় রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের বিষয়টিতে গুরুত্ব দেবেন। তিনি আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেয়ার কথাও বলবেন।

নিরাপত্তা পরিষদ রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে যে বিবৃতি দিল, সেটা বাংলাদেশ কীভাবে মূল্যায়ন করে এ বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আমরা চাইছিলাম নিরাপত্তা পরিষদ এই পরিস্থিতিতে একটা অবস্থান তুলে ধরুক। সেদিক থেকে এই বিবৃতি আমরা সময়োপযোগী ও জোরালো বলে মনে করি।

রাখাইনে চলমান সহিংসতার প্রেক্ষাপটে সেখানকার বেসামরিক লোকজনের সুরক্ষার জন্য বাংলাদেশ নিরাপদ অঞ্চল গড়ে তোলার প্রস্তাব দিয়েছিল। মিয়ানমার এটি প্রত্যাখ্যান করেছে বলে গণমাধ্যম খবর প্রকাশ করেছে। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মন্ত্রী কোনো মন্তব্য করেননি।

প্রসঙ্গত, গত ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের কয়েকটি তল্লাশিচৌকিতে উগ্রবাদীদের হামলার সূত্র ধরে রাখাইনে দমন অভিযান শুরু করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও পুলিশ। এরপর থেকেই প্রাণভয়ে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের ঢল নামে। পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা সীমান্তের ওপারে সেনাবাহিনীর হত্যা, ধর্ষণ, ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও পরিকল্পিত দমন অভিযানের বিবরণ দিচ্ছে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমকে।

জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের মুখপাত্র ভিভিয়ান তান সম্প্রতি কাতারভিত্তিক টিভি চ্যানেল আল-জাজিরাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা জানান। গত দুই সপ্তাহে বাংলাদেশে প্রায় ৩ লাখ ৩৬ হাজার রোহিঙ্গা ঢুকেছে বলে জানিয়েছে ইউএনএইচসিআর। 

রাখাইন থেকে বেঁচে আসা রোহিঙ্গারা বলছেন, নারী, শিশু, বৃদ্ধ—কাউকেই ছাড় দেয়া হচ্ছে না। এই রক্তপাত বন্ধ করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, আঞ্চলিক শক্তি ও সরকারের প্রতি সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন তারা। নতুন ও এর আগে আসাদের মিলিয়ে বর্তমানে রোহিঙ্গা সংখ্যা দাঁড়িয়ে দশ লাখের উপরে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/তালেব

Wordbridge School
Link copied!