• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বাংলাদেশে ই-কমার্সের অনুপ্রেরণা এই দম্পতি


বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ডেস্ক মে ১৭, ২০১৭, ১১:২৪ এএম
বাংলাদেশে ই-কমার্সের অনুপ্রেরণা এই দম্পতি

ঢাকা: বাগেরহাটের মংলা উপজেলার মিঠাখালী গ্রামের নারীদের তৈরি নকশিকাঁথা ন্যায্যমূল্যে বিক্রির উদ্যোগ নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন আতাউর রহমান ও সাদেকা হাসান দম্পতি।

এরপর গত সাত-আট বছরে অনেক পথ পেরিয়েছে ব্রিটেনে লেখাপড়া শেষে মাতৃভূমির টানে ২০০৯ সালে দেশে ফেরা এই দম্পতির উদ্যোগ। এর মধ্যে সাফল্যের স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছে দেশি-বিদেশি অনেক পুরস্কার।

উদ্যোগটির নাম ‘আমার দেশ আমার গ্রাম’। এর মাধ্যমে তৃণমূলের পণ্যকে ই-কমার্সের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। আতাউর রহমান জানান, ‘ব্রিটেনে লেখাপড়া শেষে আমরা সেখানে কিছুদিন কাজ করি। তারপর ‘হোম সিকনেস’-এর কারণে দেশে ফিরে মংলার মিঠাখালী গ্রামে গিয়ে সেখানকার মহিলাদের জিজ্ঞেস করি, তারা তাদের নকশিকাঁথা কীভাবে বিক্রি করেন। তারা জানান, লোকজন এসে তাদের কাছ থেকে নকশিকাঁথা নিয়ে যায়। তাদের নিজেদের এ সব বিক্রি করার উপায় নেই। এই কথা শুনে আমরা তাদের কম্পিউটারের মাধ্যমে বিক্রির ধারণা দিই।’

এরপর সেখানে একটি কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন আতাউর-সাদেকা দম্পতি। স্থানীয় তরুণদের প্রশিক্ষণও দেন। তারাই নারী ও কৃষকদের ছবি ও তাদের পণ্যের ছবি তুলে অনলাইনে দেয়ার কাজটি করেন।

কিন্তু সমস্যাটি বাঁধে পণ্য বিক্রির পর টাকা পাওয়ার ক্ষেত্রে। কারণ, তখনও বাংলাদেশে অনলাইনে টাকা লেনদেনের সুযোগ ছিল না। ‘এই অবস্থায় আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের তৎকালীন গভর্নর আতিউর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাকে এই সেবা চালুর অনুরোধ করি,’ জানান আতাউর। এর ফলশ্রুতিতে ২০১০ সালের শুরুতে বাংলাদেশে অনলাইন লেনদেন শুরু হয় বলে জানান তিনি।

আতাউর রহমান বলেন, অনলাইনে পণ্য বিক্রির কারণে এক জেলার কৃষকের পণ্য এখন সারা দেশের মানুষ কিনতে পারছেন। আগে দেখা যেত, কোনো এলাকার কৃষকের পণ্য শুধু সেই এলাকার স্থানীয় বাজারে বিক্রি হচ্ছে। ‘রাঙামাটির আনারস এখন চাইলে বাকি ৬৩ জেলার মানুষ সহজেই কিনতে পারছেন,’ যোগ করেন আতাউর রহমান। তিনি বলেন, ‘এখন যেমন দেখা যায়, চাহিদার চেয়ে কোনো পণ্যের উৎপাদন অনেক বেশি হয়ে গেলে বাজারের অভাবে কৃষককে সেগুলো খুবই কম মূল্যে বিক্রি করতে হচ্ছে কিংবা ফেলে দিতে হচ্ছে।’ কিন্তু অনলাইন বেচাকেনার আরও প্রসার হলে কৃষকদের ঐসব পণ্য সারা দেশে ছড়িয়ে দেয়া সম্ভব হবে।

সরকারের সঙ্গে ই-শপ
আতাউর ও সাদেকা দম্পতি সাত বছরে ১১টি জেলায় তাদের কার্যক্রম প্রসার করেছিলেন। এরপর সরকার সারা দেশে ই-শপ চালুর উদ্যোগ নিলে তার সঙ্গে যোগ দেয় ‘আমার দেশ আমার গ্রাম’। তাদের পদ্ধতিতেই এখন দেশের ৬৪টি জেলায় ই-শপ চালু হয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় এক হাজারেরও বেশি উদ্যোক্তাকে প্রশিক্ষণও দেয়া হয়েছে।

ক্রেতাদের জন্য পরামর্শ
বাংলাদেশে অনলাইনে কেনাকাটা যেমন বাড়ছে, তেমনি কিছু অভিযোগও উঠছে। যেমন পণ্য অর্ডার দিয়ে সময়মতো না পাওয়া, ঠিক পণ্য না পাওয়া এবং পছন্দ না হলে ফেরত দেয়ার সমস্যা ইত্যাদি। এসব থেকে বাঁচতে ক্রেতাদের সবসময় পরিচিত ব্র্যান্ডের কাছ থেকে পণ্য কেনার পরামর্শ দিয়েছেন আতাউর রহমান। এছাড়া ঝুঁকি এড়াতে ‘ক্যাশ অন ডেলিভারি’-র চেয়ে অনলাইনে মূল্য পরিশোধ করার পরামর্শ দেন তিনি। সূত্র: ডয়েচে ভেলে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এআই

Wordbridge School
Link copied!