• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশে পৌঁছেছেন পোপ ফ্রান্সিস


নিজস্ব প্রতিবেদক নভেম্বর ৩০, ২০১৭, ০৩:০৭ পিএম
বাংলাদেশে পৌঁছেছেন পোপ ফ্রান্সিস

ঢাকা: বাংলাদেশে পৌঁছেছেন মিয়ানমারে সফররত ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের সর্বোচ্চ ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস। বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) বিকেলে তিন দিনের সফরে বিকেল ৩টার দিকে বাংলাদেশ বিমানের একটি বিশেষ ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করেন।

তাকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সম্মান ও মর্যাদা দেয়া হচ্ছে। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ তাকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানান।

এর পরে বিমানবন্দর থেকে তিনি সরাসরি সাভারে অবস্থিত জাতীয় স্মৃতিসৌধে গিয়ে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। তারপর তিনি বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে গিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।

পোপ ফ্রান্সিসের ঢাকায় আগমন উপলক্ষে নিরাপত্তা সংক্রান্ত সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পোপের সফরের সময় রোহিঙ্গা সঙ্কটকেই প্রাধান্য দেয়া হবে। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের বিভিন্ন বৈঠকে রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়েই পোপকে ঢাকার বার্তা দেয়া হবে বলে জানা গেছে।

এদিকে ঢাকার রমনা ক্যাথেড্রাল থেকে জানানো হয়েছে, পোপের সফরের প্রতিপাদ্য হলো শান্তি ও সম্প্রীতি। সরকারের অনুমোদন নিয়ে আয়োজকরা রোহিঙ্গাদের একটি ছোট গ্রুপকে ঢাকায় নিয়ে আসার প্রস্তুতি নিয়েছেন।

পোপের সফর ঘিরে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। উদ্যানের কালীমন্দির সংলগ্ন এলাকায় খড়ের ঘরের আদলে গড়ে তোলা হয়েছে মঞ্চ। বিশেষ এই মঞ্চে ধারণ করা হয়েছে বাংলার ঐতিহ্য। এই মঞ্চেই বসবেন পোপ ফ্রান্সিস। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ১ ডিসেম্বর প্রায় এক লাখ খ্রিষ্টানভক্তের সমাবেশ ঘটবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, ঘোষিত সূচি অনুযায়ী ৩০ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে অবস্থান করবেন পোপ ফ্রান্সিস।

১৯৮৬ সালে পোপ জন পল দ্বিতীয়’র পর এই প্রথম আরেক জন পোপ বাংলাদেশে আসছেন। তিনি বাংলাদেশের উন্নয়ন আর ধর্মনিরপেক্ষ বৈশিষ্ট্য দেখতে আগ্রহী। ঋতুর বৈচিত্র্য বিবেচনায় সবচেয়ে অনুকূল সময় হিসেবে নভেম্বরকেই বেছে নেয়া হয়েছে।

এর আগে বুধবার (২৯ নভেম্বর) ‘রোহিঙ্গা’ মুসলিমদের কথা কৌশলে এড়িয়ে ইয়াঙ্গুনে লাখো খ্রিস্টভক্তের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত এক উন্মুক্ত প্রার্থনা সভায় তিনি বক্তব্য দেন।

সেখানে তিনি কৌশলে বলেন, মিয়ানমার দৃশ্যমান ও অদৃশ্যমান সহিংসতার ক্ষতচিহ্ন বয়ে বেড়াচ্ছে। সেই ক্ষত চিহ্ন মুছতে সব জাতিগোষ্ঠীকে মিলেমিশে থাকতে হবে।

প্রার্থনা সভায় মানবজাতির কল্যাণ কামনা করে পোপ বলেন, প্রতিশোধ পরায়ণতা কখনও শান্তি বয়ে আনতে পারে না। ক্ষমা ও উদারতা যিশুখ্রিস্টের প্রকৃত শিক্ষা।

সেখানে ইয়াঙ্গুনের শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তাসহ সু চি প্রশাসনের দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া সভায় অন্তত ২ লাখ মানুষ যোগ দেন।

এর আগে মঙ্গলবার মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চির সঙ্গে বৈঠক করেন পোপ।

সভায় পোপ বলেন, মিয়ানমারের সবচেয়ে বড় সম্পদ নাগরিকরা, কিন্তু বেশ কিছু দিন ধরে তারা সংঘাত ও বর্বরতার শিকার। ফলে সমাজে বিভাজন সৃষ্টি হচ্ছে।

তবে সু চির সঙ্গে বৈঠকেও ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি ব্যবহার করেননি পোপ। মিয়ানমার সরকার ‘রোহিঙ্গা’ শব্দ ব্যবহার করে রোহিঙ্গাদের পরিচয় দেয়ার ঘোরবিরোধী।

রোহিঙ্গাদের প্রতি জাতিগত বৈষম্য ও নিপীড়ন চালানোয় সু চির সরকার অভিযুক্ত।

কিন্তু পোপের সঙ্গে বৈঠকে সু চি দাবি করেন, তার সরকার সবার জন্য শান্তি, নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষায় সচেষ্ট রয়েছে।

সু চির সঙ্গে বৈঠকের আগে দেশটির বৌদ্ধ, হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টান ও ইহুদি নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী ও ধর্মের অনুসারীদের মাঝে ঐক্যের ডাক দেন পোপ ফ্রান্সিস।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!