• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

বাংলাদেশের লটকন যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে


নরসিংদী প্রতিনিধি জুলাই ২০, ২০১৭, ০৭:৫৯ পিএম
বাংলাদেশের লটকন যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে

নরসিংদী: ফুল হয়না পাপড়িও ঝরে না। সরাসরি গাছের কাণ্ড থেকে বের হয় লটকন, যার স্থানীয় নাম বুগি। টক আর মিষ্টিতে ভরপুর নরসিংদীতে উৎপাদিত এ লটকন ফলটি এমন এক সময় ছিল জেলার বাহিরে কোথাও পরিচিত ছিলনা।

বিগত কয়েক বছরে তা বিদেশেও সুস্বাদু ফল হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। বর্তমানে এ ফলটি দেশের চাহিদা মিটিয়ে রফতানি হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। ফল চাষিদের ভাগ্য বদলে দিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে এই ফল। তাই অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক হওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এ লটকন বাগানের আবাদ।

চাষিদের মধ্যে লটকন চাষে উৎসাহের পাশাপাশি প্রতি বছরই বাড়ছে বাগানের সংখ্যা। বর্তমানে নরসিংদীর উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমের লালমাটি এলাকা থেকে প্রতিদিন শত শত মণ লটকন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে।

নরসিংদী জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, নরসিংদীর শিবপুর, বেলাব, পলাশ ও রায়পুরা উপজেলার লাল মাটির পাহাড়ি টিলা উচু মাটিতে খনিজ উপাদান বিদ্যমান থাকায় এই এলাকার মাটি লটকন চাষের জন্য খুবই উপযোগী। বিগত বছরে জেলার ৬২৫ হেক্টর জমিতে লটকনের আবাদ হয়েছিল। চলতি বছর তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৬২ হেক্টরে। বাণিজ্যিক চাষাবাদের আওতার বাইরেও বিক্ষিপ্তভাবে বিভিন্ন বাড়ির আঙ্গিনা ও পতিত জমিতে লটকন গাছ রয়েছে যা কৃষি বিভাগের হিসাবের অন্তর্ভুক্ত করা নেই।

নরসিংদীর বিভিন্ন অঞ্চলের উচু লাল রঙের মাটিতে প্রচুর ক্যালসিয়াম ও অন্যান্য খনিজ উপাদান বিদ্যমান থাকায় এ মাটিতে লটকনের উৎপাদন ভালো হওয়ায় রায়পুরা, শিবপুর, বেলাব, পলাশ ও মনোহরদী উপজেলার শত শত চাষি বর্তমানে লটকন বিক্রি করে অর্থনৈতিক ভাগে সাফল্য পেয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, শিবপুর উপজেলায় সবচেয়ে বেশি লটকনের বাগান রয়েছে। ১৫/২০ বছর আগেও লটকনের বাগান করা ছিল না, তখন অন্যান্য ফলগাছের সঙ্গে দু’একটি গাছ লাগানো হতো। বর্তমানে অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক হওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে লটকন বাগানের চাষ।

শাহীন সরকার নামে জয়নগর এলাকার লটকন চাষি জানান, লটকন গাছে নারী-পুরুষ রয়েছে। ফল আসার আগ পর্যন্ত নারী-পুরুষ চিহ্নিত করা দুষ্কর। চারা লাগানোর কমপক্ষে ৫/৬ বছর পর ফল আসে। ততদিন চাষীদের অপেক্ষার প্রহর গুণতে হয়।

ছোটাবন এলাকার লটকন চাষি দেলোয়ার হোসেন জানান, গাছের পুষ্টির সুষমতা ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে গাছের গোড়া থেকে প্রধান কাণ্ডগুলোতে ঝোপায় ঝোপায় এত বেশি ফল আসে যে তখন গাছের ডাল পর্যন্ত দেখা যায় না।

চাষিরা আরো জানান, এখন কোয়ালিটি ভেদে লটকন ৩ হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা মণ দরে পাইকারি বিক্রি করছেন। খুচরা দাম ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি। ফল বিক্রির ভাবনা তাদের ভাবতে হচ্ছে না। পাইকাররা বাগান থেকেই লটকন কিনে নিয়ে যাচ্ছে।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!